• বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী নাইজেরিয়ান চক্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামে কোকেন পাচার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় নদী শাসনে ব্যয় বাড়ছে পিএসসির উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীরসহ ৬ জনের রিমান্ড শুনানি পিছিয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট রাজাকারের পক্ষে স্লোগান সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র-আলোকচিত্র প্রদর্শনী

বাংলাদেশ থেকে সবজি ও ফল আমদানি করতে চায় নেদারল্যান্ডস: কৃষিমন্ত্রী

Reporter Name / ২৩২ Time View
Update : বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ থেকে তাজা শাকসবজি ও ফল আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে নেদারল্যান্ডস। চলতি মাসে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের নেদারল্যান্ডসে সফরে এই আগ্রহ ব্যক্ত করে দেশটি। বুধবার সচিবালয়ে নেদারল্যান্ডস সফরের বিষয়ে সাংবাদিকের এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, ইউরোপের বাজারে সতেজ শাকসবজি ও ফল প্রক্রিয়াজাত, কৃষিপণ্য রফতানি ও পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে ৯ থেকে ১৮ নভেম্বরের এই সফর ফলপ্রসূ হয়েছে। তারা বাংলাদেশের শাক-সবজি ও ফল আমদানি করতে চায়। তিনি বলেন, আমরা কৃষিকে লাভজনক ও এর বাণিজ্যিকীকরণ করতে চাই। সেটা করতে হলে রফতানি বাড়াতে হবে। কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার বিস্তৃত করতে হবে। এতে উৎপাদন মৌসুমে কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে। এই উদ্দেশে সামনে রেখেই আমরা সফর করেছি। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা তামাক উৎপাদন নিরুৎসাহিত করতে চাই। কিন্তু জাপান তামাক খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। আমরা জাপানের সঙ্গে কথা বলছি। তবে আমাদের রাষ্ট্রীয় পলিসি অনুসারে আমরা ধীরে ধীরে তামাকপণ্য বিলুপ্ত করে দেবো।
দেশে গ্রীষ্মকালেও হবে পেঁয়াজ উৎপাদন: কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, পেঁয়াজের উন্নত জাত উৎপাদনে ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডস সহায়তা দেবে। তাদের সহায়তা পেলে আশা করছি গ্রীষ্মকালেও বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হবে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজ আমাদের দেশে খাওয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মসলা। ব্যাপক উৎপাদন আমাদের দেশে হয়। সারা পৃথিবীতে পেঁয়াজের ব্যবহার রয়েছে। তবে সমস্যা হলো এপ্রিল ও মে মাসে আমাদের দেশে পেঁয়াজ উঠাতে হয়। এ সময়ে দাম অনেক কমে যায়। পেঁয়াজ অত্যন্ত একটি পচনশীল পণ্য। বেশি দিন রাখা যায় না। ফলে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ঘাটতি দেখা দেয়। এ সময় আমাদের পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। আমরা যোগাযোগের সুবিধার জন্য ভারত থেকে আমদানি করি। সম্প্রতি অস্বাভাবিক ভাবে শিপমেন্টের খরচ বেড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নেদারল্যান্ড ও ইউরোপ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে পারিনি। এ বিষয়টি স্বাভাবিক হলে তখন তারা প্রতিযোগিতামূলক দামেই পেঁয়াজ দেবে। যেটা তারা ২০১৯ ও ২০২০ সালে ১২ হাজার টন দিয়েছিল। তিনি বলেন, আমাদের দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণে সমস্যা রয়েছে। সংরক্ষণের অভাবে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এজন্য পেঁয়াজের উন্নত জাত উৎপাদন ও সংরক্ষণকাল বাড়ানোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে নেদারল্যান্ডস। পাশাপাশি আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণেও দেশটি সহায়তা করবে। কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক বলেন, নেদারল্যান্ডস ও ইউরোপের যে পেঁয়াজের জাত রয়েছে তারমধ্য থেকে একটি জাত আমাদের দেখিয়েছে। যেটা প্রাকৃতিকভাবে চার থেকে পাঁচ মাস রাখা যাবে। আমরা পেঁয়াজের সে জাতটি আনবো। পেঁয়াজে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যাবো। ১২ মাস পেঁয়াজ হয় এমন জাত এনেছি। গত বছর আমরা বীজ এনেছি যদিও একটু দেরি হয়েছে। আশা করছি গ্রীষ্মকালেও বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হবে। তিনি বলেন, কৃষির অপার সম্ভবনা রয়েছে। যেটা এখনও সম্পূর্ণ ব্যবহার হয়নি। আমরা এবছর এক হাজার ৬২২ টন পেঁয়াজ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। আগামী দুই বছর এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে পারবো। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জন্য এখন চ্যালেঞ্জ একটাই সেটা হলো ম্যানুফেকচারিং খাতকে বাড়িয়ে কর্মস্থানের ব্যবস্থা করে মানুষের আয় বাড়ানো। এ বাংলাদেশের জন্য অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিদ্যুৎ, গ্যাস, রাস্তা, বন্দর পদ্মা সেতু হয়েছে। এগুলো ব্যবহার করে আমাদের ম্যানুফেকচারিং খাতে শিল্প কারখানা স্থাপন করতে হবে। তাহলে আমাদের উৎপাদন বাড়বে যা বিদেশে রপ্তানি করতে পারবো। এগুলো করতে পারলেই দেশ উন্নত হবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে সরকারও ডিজেলের দাম কমাবে: কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলের দামের ট্রেন্ডটা তো কমের দিকে আছে, যদি কমে সরকারও ডিজেলের দাম কমাবে। ডিজেলের দাম বাড়ানোর প্রভাব কৃষিক্ষেত্রে পড়বে কিনা, এ ক্ষেত্রে সরকার কৃষকদের কীভাবে সহয়তা করবে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রভাব তো অবশ্যই পড়বে, এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এমনি আমাদের কৃষকরা নানান সমস্যায় জর্জরিত। পিক সিজনে তারা ফসলের দাম পান না। সেজন্য কৃষিপণ্য প্রসেসিংয়ের কথা আমরা বলছি, বাণিজ্যিকরণ কিংবা বিদেশে রপ্তানি… বাজারে গিয়ে তারা যাতে ভালো দাম পান। ৪০ শতাংশ সেচ মেশিন বিদ্যুতে চলে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, তাদের খুব অসুবিধা হবে না। কিন্তু ডিজেলের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। দেখা যাক আন্তর্জাতিক বাজারে দামের ট্রেন্ডটা তো কমের দিকে আছে, যদি কমে সরকারও ডিজেলের দাম কমাবে। ডিজেলে ভর্তুকি দেওয়া ঝামেলা মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এটা নিয়ে বিক্রি করে দেবে। সেচ যন্ত্রের কথা বলে অন্য কাজে ডিজেল ব্যবহার করবে। ডিজেলে সাবসিডি দেওয়া কঠিন হবে। সারের দাম বাড়ানো হবে না জানিয়ে ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টার উপরেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে আমরা একটা বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে চাই যে, সারের দাম ২৩০/২৫০/২৭০ ডলার ছিল, সেটা এখন ৮০০/৯০০ ডলার। চারগুণ বেড়েছে। আমরা সারে ৯০০ কোটি টাকা সাবসিডি (ভর্তুকি) দেই। এটা এবার মনে হয় ২০ হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী এখন পর্যন্ত আমাদের বলেছেন, তিনি সারের দাম বাড়াবেন না। সংবাদ সম্মেলনে প্রাণ আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, এসিআই অ্যাগ্রো লিংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এফ এইচ আনসারী, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম, জেমকন গ্রুপের ডিরেক্টর কাজী ইনাম আহমেদ এবং বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবল অ্যান্ড এলাইড প্রোডাক্ট এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট জাহাঙ্গীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ৯ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর ইউরোপ সফরে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী। তার সফরসঙ্গী ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, এসিআই এগ্রো লিংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এফএইচ আনসারী, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম এবং জেমকন গ্রুপের ডিরেক্টর কাজী ইনাম আহমেদ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category