নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক না করে ভালো পরামর্শ থাকলে তা নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বসতে বিএনপিকে আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলার মুখ’ এর ৩২ বছর উদযাপন উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে দুই দিনব্যাপী আয়োজনের প্রথমদিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি বলছে, তারা নির্বাচনে যাবে না। আবার বলছে, নির্বাচন নিয়ে সরকার নাটক করছে। এসব কথা বলে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছে। আমি বলবো, মিথ্যাচার না করে রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সাড়া দিন। আপনাদের মতামত থাকলে সেখানে পেশ করুন। আপনাদের যদি ভালো পরামর্শ থাকে, অবশ্যই রাষ্ট্রপতি সেটা বিবেচনা করতে পারেন। সে পরামর্শ আপনারা দিন। সেটি না করে বাইরে বসে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য অযৌক্তিক কথাবার্তা বলবেন, এ ধরনের কথাবার্তা বাংলাদেশের মানুষ আর শুনতে চায় না। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, আমিও প্রশ্ন রাখতে চাই, আপনারা তো রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন। আপনারা নির্বাচন কমিশন আইন গঠন করেননি কেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে আপনারা যে কলঙ্ক তৈরি করে দিয়ে গেছেন, সেটি এখনো জাতির মনে আছে। আজিজ সাহেব মার্কা নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিলেন। এক কোটি বিশ লাখ ভুয়া ভোটার বানিয়ে তালিকা করেছিলেন। এসব মিথ্যা অপকর্ম ঢাকার জন্যই এখন নির্বাচন নিয়ে মিথ্যাচার করছেন। হানিফ আরও বলেন, এ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা ১২ বছর সময় পার করেছি। এ ১২ বছরে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমাদের সময় পার হয়েছে। জাতির বহু প্রত্যাশিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারও আমাদের করতে হয়েছে। সবচেয়ে যে বড় আঘাতটা আমাদের এসেছিল, ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকা-। ক্ষমতায় আসার পরেই এমন একটি ঘটনা আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। আর সেটির বিচারকাজও করেছি। এত সব কাজের মধ্যে নির্বাচন কমিশন আইনটি গঠন করতে পারিনি। আশা করছি, আগামী বছরই আইনটি গঠন করতে পারবো। নির্বাচন কমিশন গঠনে দেশের যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি তা অনুসরণ করছেন রাষ্ট্রপতি। সব কাজ চলছে, বৈঠক হচ্ছে। সবার মতামতে ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। নির্বাচনই হলো গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সবচেয়ে উত্তম পন্থা। সেটাকে নিয়েও আজকে বিএনপি সমালোচনা করছে। আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সম্পাদক বলেন, জিয়াউর রহমান, এরশাদ এরা দেশের সংস্কৃতি ও দেশের রাজনীতিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন। ধর্মকে ব্যবহার করেছেন এরশাদ ও জিয়াউর রহমান। এরশাদ ছিলেন একজন ভ- ধার্মিক লোক। ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতেই তারা সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করেছিলেন। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকলে কী লাভ কিংবা ক্ষতি তা আমি জানি না। তবে পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই কী করবে না করবে তা সংবিধানের আলোকে করে না। সংবিধানে কী লেখা আছে সেটা বড় কথা নয়, আমরা কী করছি সেটাই বড় কথা। তিনি বলেন, আমরা ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। জাতির পিতার হত্যার মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা করে দিয়েছিলেন। তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন। তার দলও নিজেদের মুক্তিযোদ্ধার দল দাবি করে। কিন্তু তিনি কোথায় যুদ্ধ করেছেন, তা আমার জানা নেই। ইতিহাসের কোথাও তেমন কিছু পাইনি। কোন এলাকায় যুদ্ধ করেছেন আমি জানি না। জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযুদ্ধে সিলেট অঞ্চলের দায়িত্বে ছিলেন। আমি তো সেদিকে গিয়েছি, বহুবার জনসভা করেছি। আমি তাদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে জনসভায় আহ্বান জানিয়েছি, জিয়াউর রহমান কোথায় কীভাবে যুদ্ধ করেছেন তা দেখাতে। কিন্তু তা নিয়ে কেউ আসেনি। জিয়াউর রহমান দেশবিরোধী পদক্ষেপ নিয়েছেন মন্তব্য করে হানিফ আরও বলেন, তিনি ক্ষমতা দখল করে যা যা করেছেন সব ছিল দেশবিরোধী। তিনি এসে রাজাকারদের এদেশে জায়গা করে দিয়েছিলেন। জয় বাংলা ছিল আমাদের রণাঙ্গনের স্লোগান। তিনি সেটা বাদ দিয়ে পাকিস্তান জিন্দাবাদের আদলে নিয়ে আসলেন বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। পাকিস্তানের পরাজয়ের স্মৃতি মুছে দিয়ে তিনি শিশুপার্ক বানিয়েছিলেন। সেই দল এখনো আছে। এখনো তারা মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। জাতির পিতার কন্যা যখন দেশ গঠনের কাজে, উন্নয়নের কাজে মনোনিবেশ করেছেন, দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন তারা মিথ্যাচার করেই যাচ্ছে। এই মিথ্যাচার বন্ধ করতে হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম। এ ছাড়া সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সর্বশেষঃ
বিএনপিকে সংলাপে সাড়া দেওয়ার পরামর্শ হানিফের
-
দৈনিক আইন বার্তা
- আপডেট সময়ঃ ০৫:৫৭:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১
- ১৫২ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ