নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিদেশিদের কাছে বিএনপির চিঠিপত্র পাঠানোর বিষয়টিকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা যেগুলো এ বিষয়ে ইনভেস্টিগেট করে তারা এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আজ বুধবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। বিদেশে বিএনপির ‘দেশবিরোধী’ নানা তৎপতার তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সরকারের করণীয় কী- জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, আসলে তারা (বিএনপি) যে কাজগুলো করেছে এবং করছে, এগুলো রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক কাজ। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা যেগুলো এ বিষয়ে ইনভেস্টিগেট করে তারা এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে। বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের মতো কোনো বিষয় হতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন কমিশনে তাদের খরচের হিসাব দিতে হয়। এখানে যে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করার জন্য, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের জন্য, তারা এই হিসাব নির্বাচন কমিশনে দিয়েছে কি না, নির্বাচন কমিশন সেটি নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখবে। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, তারা কী করবে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করার জন্য বিদেশিদের কাছে চিঠি লেখা এবং দেশের রপ্তানিবাণিজ্য বন্ধ করার জন্য ও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তারা যে চিঠি লিখেছে, দেশকে বিব্রত করার জন্য তারা যে লবিস্ট নিয়োগ করেছে- তা নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনা মুখে গত মঙ্গলবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছেন। বিদেশিদের কাছে চিঠি লিখেছেন এটি সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন। তিনি যেটা অস্বীকার করেছেন সেটা হচ্ছে সাহায্য বন্ধের বিষয়টি লেখার কথা। এ সময় তথ্যমন্ত্রী বিদেশিদের কাছে মির্জা ফখরুলের লেখা দুটি চিঠি পড়ে শোনান। এই চিঠি দুটির একটি লেখা হয়েছে ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল, অপরটি ২৪ এপ্রিল। পাশাপাশি বিএনপির পক্ষে বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে দলটির নেতারা যে চুক্তি করেছেন সেই নথিও তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তার কথার সারমর্ম হচ্ছে- বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করা। উনি গতকাল (গত মঙ্গলবার) বলেছেন, তিনি সাহায্যের কোনো কথা বলেননি। এখানে সাহায্য পুনর্মূল্যায়ন ও প্রকারান্তরে সাহায্য বন্ধের আহ্বান তিনি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব এই নথিগুলো কীভাবে অস্বীকার করবেন? মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা যে প্রচ- মিথ্যাচার করেন, এটির প্রমাণ হলো এসব নথি। দে আর অল লায়ার্স (তারা সবাই মিথ্যাবাদী)। তারা দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করছে, এর প্রত্যক্ষ প্রমাণ এসব নথি। শুধু তাই নয়, তারা দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করছে, তারা যে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে মিথ্যাচার করেছে ক্রমাগতভাবে সেটি গতকাল (গত মঙ্গলবার) খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় প্রমাণ হয়েছে। অর্থাৎ তাদের পুরো রাজনীতিটাই মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত। হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বেশি করে মিথ্যাচার করতে পারেন বলেই সম্ভবত তাকে মহাসচিবের দায়িত্বে রাখা হয়েছে। উনি একটাই কাজ ভালো করে পারেন, সুন্দর করে মিথ্যা কথা বলতে পারেন। জ¦ল-জ¦লন্ত প্রমাণ থাকার পরও কীভাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি মিথ্যাচার করেছেন সে প্রশ্ন আমার। পুরো জাঁতি যখন তাদের ধিক্কার দিচ্ছে, সিভিল সোসাইটি যারা সরকারেরও সমালোচনা করেন তারাও যখন সমালোচনায় মুখর, তখন তিনি আত্মরক্ষার্থে যে সংবাদ সম্মেলন করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সেটি করা যাচ্ছে না। আসলে যারা এভাবে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এবং দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশকে বিব্রত করার জন্য এবং রপ্তানিবাণিজ্য বন্ধ করার জন্য, তাদের আসলে বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয়। পৃথিবীর প্রায় সব উন্নয়নশীল দেশ রপ্তানি বাড়ানোর জন্য, দেশের ভাবমূর্তি বাড়ানোর জন্য এবং পর্যটনের বিকাশের জন্য লবিস্ট নিয়োগ করে। বাংলাদেশ সরকারও পিআর ফার্ম নিয়োগ করেছে। এর প্রেক্ষিতে আমাদের রপ্তানিবাণিজ্য বিদেশে বৃদ্ধি পেয়েছে, ভাবমূর্তি আগের তুলনায় আরও ভালো হয়েছে। যোগ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।