• বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
চট্টগ্রামে চলমান-প্রস্তাবিত কার্যক্রম প্রসঙ্গে নানা প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিলেন বাপাউবো বিজিবি-বিএসএফের মহানুভবতায় জিরো পয়েন্টে মা-মেয়ের শেষবিদায় বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন, বিশ্বমিডিয়ায় তোলপাড় ‘মব’ সংস্কৃতির কারণে জাতীয় সম্ভাবনা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে: মাহফুজ আলম অপারেশন ডেভিল হান্টে আশানুরূপ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শেখ হাসিনা আইয়ামে জাহেলিয়াতের নমুনা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন: ড. ইউনূস ডিসেম্বরকে লক্ষ্য রেখে জাতীয় নির্বাচনেরই প্রস্ততি নিচ্ছে ইসি দদুর্নীতির বড় অভিযুক্তরা পাশের দেশে আছেন: দুদক চেয়ারম্যান এবারও আসছে তীব্র তাপপ্রবাহ, নেই তেমন প্রস্তুতি লিবিয়ায় দুই গণকবর থেকে ৪৯ অভিবাসী-শরণার্থীর মরদেহ উদ্ধার

বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম নিম্নমুখী, স্থানীয় বাজার অপরিবর্তিত

Reporter Name / ১৭৭ Time View
Update : সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১

yনিজস্ব প্রতিবেদক :
জ¦ালানী তেলের দামের লাগামহীন উর্ধ্বগতির পর অবশেষে বিশ্ববাজারে একটু স্বস্তি নেমেছে। জানা যায়, শনিবার আন্তর্জাতিক বাজারে জ¦ালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে কমে নেমেছে ৭৫ ডলার ৬৮ সেন্ট। এক দিনের ব্যবধানে কমেছে প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ। তেলের এ দর গত দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। আন্তর্জাতিক বাজারে জ¦ালানি তেলের দাম কমে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারেও এর দাম কমানোর তাগিদ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। এরইমধ্যে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তৈরী পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জ¦ালানি তেলের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন। ান্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপে কভিড সংক্রমণ আবার নতুন করে ভয়াবহ রূপ নেয়ায় মহাদেশটিতে পণ্যটির চাহিদা নিয়ে নতুন করে সংশয় তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে বৃহৎ দুই অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এখন বাজার থেকে সংগ্রহের পরিবর্তে মজুদকৃত জ¦ালানি তেল ব্যবহারে মনোযোগ দিয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নমুখী হয়ে উঠেছে অপরিশোধিত জ¦ালানি তেলের বাজার সূচক।
রয়টার্স জানিয়েছে, এটি সম্ভব হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ চীন রেখেছে বলেই। বাইডেন প্রশাসন তার মিত্রদের কাছে অনুরোধ করেছিল যাতে দেশগুলো তাদের সংরক্ষিত (রিজার্ভ) তেল বাজারে ছেড়ে দেয়। আর সবাইকে অবাক করে দিয়ে চীন এ কাজটিই করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র-চীন অনেক দিন ধরেই বাণিজ্যযুদ্ধে লিপ্ত। কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ ও ট্রাম্পের পরাজয় সেই বাণিজ্যযুদ্ধ কিছুটা কমিয়ে রাখলেও একেবারেই শেষ হয়ে যায়নি। চীন যে যুক্তরাষ্ট্রের এই অনুরোধ রাখবে তা অনেকেই আশা করেননি, তবে চীনের এই সিদ্ধান্ত বাজারকে প্রভাবিত করেছে; কমছে তেলের দর। জ¦ালানি তেলের দাম কমার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংকে ধন্যবাদ দিয়েছেন বিশ্ব জ¦ালানি বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের জ¦ালানিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিস্ট্যাড এনার্জির সিনিয়রষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক বিজোরনার টনহাউজেন বলেন, বিশ্ববাজারে জ¦ালানি তেলের দাম কমার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। দেশ দুটি সংরক্ষিত তেল বাজারে ছাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। টনহাউজেন বলেন, বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন ডিসেম্বরে ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল আসতে পারে। এটা হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে কিংবা আন্তর্জাতিক জ¦ালানি সংস্থার বৃহত্তর সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে, তবে সংরক্ষিত তেল ছাড়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য সামগ্রিক চিত্র পরিবর্তন না-ও হতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র যে কেবল চীনকেই সংরক্ষিত রাখা তেলের ব্যবহার বাড়াতে বলেছে তা নয়, একই অনুরোধ করা হয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতের মতো বৃহৎ তেল ব্যবহারকারী দেশগুলোকেও। এর মধ্যে শুরুতেই চীন অনুরোধ রক্ষা করেছে। শুরুতেই চীন যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ রক্ষা করায় তা ওপেককে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। কেননা বিশ্বের শীর্ষ তেল ব্যবহারকারী দেশ চীন। যদিও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ওপেক এ নিয়ে কিছু বলেনি, তবে তারা যে বিস্মিত, তা জানিয়েছে রয়টার্স। ওপেকের সদস্য এখন ১৫টি দেশ। তাদের মিত্র রাশিয়া। এই দুই মিলে তাদের বলা হয় ওপেক প্লাস। এই ওপেক প্লাসের একটি সূত্রের কথা উল্লেখ করে রয়টার্স জানায়, তেল রফতানিকারক দেশগুলো মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের দরকার ছিল না। কেননা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে। ফলে এমনিতেই তেলের চাহিদা আবার কমে যাবে এবং দামও কমবে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, তেলের দর আরও বাড়বে বলে যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তা থেকে বিশ্ব কিছুটা দূরে সরে যাচ্ছে। জ¦ালানি তেলের দাম কমার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ধন্যবাদ দিয়েছেন বিশ্ব জ¦ালানি বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের জ¦ালানিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিস্ট্যাড এনার্জির জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক বিজোরনার টনহাউজেন বলেন, বিশ্ববাজারে জ¦ালানি তেলের দাম কমার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। দেশ দু’টি সংরক্ষিত তেল বাজারে ছাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। টনহাউজেন বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন ডিসেম্বরে ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল আসতে পারে। এটা হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে কিংবা আন্তর্জাতিক জ¦ালানি সংস্থার বৃহত্তর সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে, তবে সংরক্ষিত তেল ছাড়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য সামগ্রিক চিত্র পরিবর্তন না-ও হতে পারে।’ সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে জ¦ালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে সরকারের ভর্তুকি বেড়ে যায়। এ ভর্তুকি কমাতে চলতি মাসে ডিজেলের দামপ্রতি লিটারে এক লাফে ১৫ টাকা অর্থাৎ ২৩ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এখন দাম কমে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে কমানোর দাবি উঠছে। জানা গেছে, আগের সাত বছর তেলের দাম ছিল অনেক কম। তখন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কম দামে তেল কিনে দেশের ভোক্তাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করেছে। এতে সংস্থাটি লাভ করে ৪৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই সাত বছরে সরকার মাত্র একবার দাম কমায়। তা-ও অতি সামান্য, মাত্র তিন টাকা প্রতি লিটারে; কিন্তু দাম বাড়তে শুরু করার এক মাসের মধ্যেই বিপিসির দেয়া প্রস্তাব মেনে গত ৪ নভেম্বর থেকে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেয় লিটারে ১৫ টাকা। অর্থাৎ এক লাফে বাড়ে ২৩ শতাংশ। এর প্রতিক্রিয়ায় পরিবহন খাতের ভাড়া সরকার বাড়িয়ে দিয়েছে ২৭ শতাংশ। এক লাফে ১৫ টাকা দর বৃদ্ধি করা হয়েছে; কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও সরকারও সিদ্ধান্ত নেবে নাকি লাভই করতে থাকবে, সে প্রশ্ন রয়ে গেছে। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকেই বিশ্ববাজারে জ¦ালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও টানা বেড়েছে তেলের দাম। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় তা আরো ঊর্ধ্বমুখী হয়।
জ¦ালানি তেলের দাম বৃদ্ধি মানেই জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া। সারা বিশ্ব এখন চিন্তিত এ নিয়ে। বিশেষ করে অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের সময়ে তেলের দাম বাড়ানোর সমর্থন নেই কারোরই, কিন্তু বাংলাদেশ সরকার বিপিসি ও পরিবহন খাতের প্রভাবশালীদের অগ্রাধিকার দিয়েছে। জ¦ালানি তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে সারা বিশ্বই চিন্তিত, তাই সবাই একটি পথ খুঁজছিল। তারই অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ, কিন্তু তর সয়নি বাংলাদেশ সরকারের। এক লাফে ১৫ টাকা দর বৃদ্ধি করা হয়েছে, কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও সরকারও সিদ্ধান্ত নেবে নাকি লাভই করতে থাকবে, সে প্রশ্ন রয়ে গেছে।
বিশ্ববাজারে দাম কমায় দেশের বাজারেও জ¦ালানি তেলের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছে দেশের রফতানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ।
শনিবার বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়ানোর ফলে তৈরি পোশাক খাতের উৎপাদন খরচ ৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। এখন যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেশ খানিকটা কমেছে, সরকারেরও উচিত দেশের বাজারে দাম কমানো। তিনি বলেন, গত দুই বছরে করোনার কারণে আমাদের তেমন কোনো কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি। তাই বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে হলে প্রয়োজন ব্যবসা সহজ করা এবং নীতি স্থিতিশীল রাখা। এমন পরিস্থিতিতে দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে তেলের দাম কমানোর বিষয়ে সরকারকে সদয় দৃষ্টি দিতে অনুরোধ করছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category