ঢাকা ০১:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকারে তথ্যচিত্র নির্মাণের প্রকল্প এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে ‘বীরত্বগাথা’ বা ‘স্মৃতিচারণ’ সরকারিভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। চূড়ান্ত হয়নি তাদের তালিকাও। অথচ সময়ের ¯্রােতে একে একে হারিয়ে যাচ্ছেন সেইসব বীর মুক্তিযোদ্ধা। খবরের কাগজে প্রায়ই আসছে তাদের মৃত্যুর খবর। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ দশকে প্রায় ৫০ ভাগ গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাই প্রয়াত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণের একটি উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে এটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে। জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ বা বীরত্বগাথা ধারণ এবং মুক্তিযুদ্ধের উল্লেখযোগ্য ঘটনা নিয়ে নির্মাণ করা হবে ওই তথ্যচিত্রটি। জাতীয় পর্যায়ে আর্কাইভে সংরক্ষণ করার প্রয়াস হিসেবে ভিডিও সাক্ষাৎকারগুলো নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ করবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা হলেও এটি এখনও চুড়ান্ত পর্যায়ে যায়নি। যদিও ‘বীরের কণ্ঠে বীরগাথা’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়। এরইমধ্যে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভাও হয়েছে। প্রকল্পটি চূড়ান্ত হওয়ার তিন বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। এর মূল কার্যক্রম ৮০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকারভিত্তিক তথ্যচিত্র নির্মাণ, ৮০ হাজার ইউটিউব কনটেন্ট আপলোড, ১৬টি ডকুমেন্টারি নির্মাণ ও জাতীয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ স্থাপন করা। এ ছাড়া কম্পিউটার সরঞ্জামাদি, অফিস সরঞ্জামাদি ও আসবাবপত্র কেনা হবে প্রকল্পের আওতায়। জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য ১৯৭১ সালে বয়স কমপক্ষে সাড়ে ১২ বছর হতে হয়। সে হিসেবে বর্তমানে স্বীকৃতি পাওয়া কনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধার বয়সও প্রায় ৬৩ বছর। মুক্তিযুদ্ধ গবেষকসহ বিভিন্ন মহল থেকেও গত এক দশকে মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। একপর্যায়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এক অনুষ্ঠানে ‘বীরের কণ্ঠে বীরগাথা’, অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা তাদেরই কণ্ঠে ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে সরংক্ষণের ঘোষণা দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। পরে এ বিষয়ে প্রকল্প প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সে উদ্যোগ এখনও প্রস্তুতিপর্বেই থমকে আছে। জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকা প্রণীত না হওয়ায় প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণসহ বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেনি মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও সব ভাষণ ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে সংরক্ষণেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি; বরং তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণসহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করে কাজ চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। অথচ মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়সহ তিনটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) কামরুন নাহার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ৮০ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি আমরা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছি অনুমোদনের জন্য। এটি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের পর আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করতে পারবো। প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত ১৬টি ডকুমেন্টারি কীভাবে বিভাজন করা হবে, কী ধরনের তথ্য ডকুমেন্টারিতে থাকবে, সাক্ষাৎকারের সময় কী ধরনের তথ্য নেওয়া হবে- এসব বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে আলোচনা করা হয়। কীভাবে শ্রেণিবিন্যাস করা হবে এবং কী ধরনের তথ্য সাক্ষাৎকারের সময় সংগ্রহ করা হবে তারও একটি সম্ভাব্য কাঠামো ডিপিপিতে সংযুক্ত করতে পরামর্শ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এছাড়া ৮০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার একটিমাত্র ফার্মের মাধ্যমে নেওয়া সম্ভব কি না, স্বল্প প্রকল্প মেয়াদে কীভাবে সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে, সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন কি না এ বিষয়েও সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। পরামর্শক ফার্মের জনবল কীভাবে সারাদেশে কাজ করবে তার একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) সংযুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের অন্য সব কার্যক্রম বাস্তবায়নের একটি সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা সংযুক্তির জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে সক্ষম হবে এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আর্কাইভে সংরক্ষণ করা হলে তা প্রজন্মান্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও বিকাশে সহায়তা করবে বলে মনে করে সরকার। এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বকণ্ঠে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে সরকারি উদ্যোগে অগ্রগতি না থাকলেও বেসরকারি উদ্যোগে কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন জেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা ডিজিটাল মাধ্যমে সংরক্ষণ করেছেন। যার সংখ্যা খুব বেশি না হলেও এগুলো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের অনন্য দলিল হিসেবে কাজ করছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধার স্বকণ্ঠে ভিডিও ক্লিপসে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়, যা এখনও অব্যাহত আছে। এ ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগেও মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু যুদ্ধস্মৃতি সংগ্রহের পর তা ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়েছে, যা ইতিহাসের অনন্য দলিল।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পেঁয়াজ উৎপাদন নিয়ে কৃষকের লোকসানের শঙ্কা বাড়ছে

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকারে তথ্যচিত্র নির্মাণের প্রকল্প এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই

আপডেট সময়ঃ ০৮:৩৪:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে ‘বীরত্বগাথা’ বা ‘স্মৃতিচারণ’ সরকারিভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। চূড়ান্ত হয়নি তাদের তালিকাও। অথচ সময়ের ¯্রােতে একে একে হারিয়ে যাচ্ছেন সেইসব বীর মুক্তিযোদ্ধা। খবরের কাগজে প্রায়ই আসছে তাদের মৃত্যুর খবর। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ দশকে প্রায় ৫০ ভাগ গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাই প্রয়াত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণের একটি উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে এটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে। জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ বা বীরত্বগাথা ধারণ এবং মুক্তিযুদ্ধের উল্লেখযোগ্য ঘটনা নিয়ে নির্মাণ করা হবে ওই তথ্যচিত্রটি। জাতীয় পর্যায়ে আর্কাইভে সংরক্ষণ করার প্রয়াস হিসেবে ভিডিও সাক্ষাৎকারগুলো নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ করবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা হলেও এটি এখনও চুড়ান্ত পর্যায়ে যায়নি। যদিও ‘বীরের কণ্ঠে বীরগাথা’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়। এরইমধ্যে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভাও হয়েছে। প্রকল্পটি চূড়ান্ত হওয়ার তিন বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। এর মূল কার্যক্রম ৮০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকারভিত্তিক তথ্যচিত্র নির্মাণ, ৮০ হাজার ইউটিউব কনটেন্ট আপলোড, ১৬টি ডকুমেন্টারি নির্মাণ ও জাতীয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ স্থাপন করা। এ ছাড়া কম্পিউটার সরঞ্জামাদি, অফিস সরঞ্জামাদি ও আসবাবপত্র কেনা হবে প্রকল্পের আওতায়। জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য ১৯৭১ সালে বয়স কমপক্ষে সাড়ে ১২ বছর হতে হয়। সে হিসেবে বর্তমানে স্বীকৃতি পাওয়া কনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধার বয়সও প্রায় ৬৩ বছর। মুক্তিযুদ্ধ গবেষকসহ বিভিন্ন মহল থেকেও গত এক দশকে মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। একপর্যায়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এক অনুষ্ঠানে ‘বীরের কণ্ঠে বীরগাথা’, অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা তাদেরই কণ্ঠে ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে সরংক্ষণের ঘোষণা দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। পরে এ বিষয়ে প্রকল্প প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সে উদ্যোগ এখনও প্রস্তুতিপর্বেই থমকে আছে। জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকা প্রণীত না হওয়ায় প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণসহ বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেনি মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও সব ভাষণ ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে সংরক্ষণেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি; বরং তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণসহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করে কাজ চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। অথচ মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়সহ তিনটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) কামরুন নাহার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ৮০ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি আমরা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছি অনুমোদনের জন্য। এটি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের পর আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করতে পারবো। প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত ১৬টি ডকুমেন্টারি কীভাবে বিভাজন করা হবে, কী ধরনের তথ্য ডকুমেন্টারিতে থাকবে, সাক্ষাৎকারের সময় কী ধরনের তথ্য নেওয়া হবে- এসব বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে আলোচনা করা হয়। কীভাবে শ্রেণিবিন্যাস করা হবে এবং কী ধরনের তথ্য সাক্ষাৎকারের সময় সংগ্রহ করা হবে তারও একটি সম্ভাব্য কাঠামো ডিপিপিতে সংযুক্ত করতে পরামর্শ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এছাড়া ৮০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার একটিমাত্র ফার্মের মাধ্যমে নেওয়া সম্ভব কি না, স্বল্প প্রকল্প মেয়াদে কীভাবে সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে, সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন কি না এ বিষয়েও সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। পরামর্শক ফার্মের জনবল কীভাবে সারাদেশে কাজ করবে তার একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) সংযুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের অন্য সব কার্যক্রম বাস্তবায়নের একটি সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা সংযুক্তির জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে সক্ষম হবে এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আর্কাইভে সংরক্ষণ করা হলে তা প্রজন্মান্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও বিকাশে সহায়তা করবে বলে মনে করে সরকার। এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বকণ্ঠে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে সরকারি উদ্যোগে অগ্রগতি না থাকলেও বেসরকারি উদ্যোগে কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন জেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা ডিজিটাল মাধ্যমে সংরক্ষণ করেছেন। যার সংখ্যা খুব বেশি না হলেও এগুলো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের অনন্য দলিল হিসেবে কাজ করছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধার স্বকণ্ঠে ভিডিও ক্লিপসে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়, যা এখনও অব্যাহত আছে। এ ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগেও মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু যুদ্ধস্মৃতি সংগ্রহের পর তা ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়েছে, যা ইতিহাসের অনন্য দলিল।