০২:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫ | ই-পেপার

ব্যয় কমাতে সরাসরি জেট ফুয়েল আমদানি করতে চাচ্ছে দেশীয় এয়ারলাইনসগুলো

  • দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:২৯:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২
  • ১৪০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ব্যয় কমাতে সরাসরি জেট ফুয়েল আমদানি করার অনুমতি চা”ে ছদেশের বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলো। সাম্প্রতিক সময়ে দফায় দফায় জেট ফুয়েলের দাম বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সর্বশেষ গত মাসে অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের জন্য জেট ফুয়েলের দাম বাড়িয়ে লিটারপ্রতি ১৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে। আর আন্তর্জাতিক গন্তব্যের জন্য লিটারে ৯ সেন্ট কমিয়ে ১ ডলার বা ১০২ টাকা করা হয়েছে। ফলে বেড়ে গেছে দেশীয় এয়ারলাইনসগুলোর পরিচালনা ব্যয়। কারণ এয়ারলাইনসগুলোর পরিচালনা ব্যয়ের ৪০-৪৬ ভাগই জ¦ালানি বা জেট ফুয়েল ক্রয় বাবদ খরচ হয়। এমন পরিস্থিতিতে ওসব প্রতিষ্ঠান সরাসরি জেট ফুয়েল আমদানির অনুমতি চাচ্ছে। এভিয়েশন অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (এওএবি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অতি মূল্যায়িত জেট ফুয়েলের দাম সমন্বয় এবং যৌক্তিক সমাধান চেয়ে এওএবির প্রতিনিধিরা বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। জেট ফুয়েল নিয়ে সমস্যা সমাধানে এওএবির পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাবে দেশীয় প্রাইভেট সেক্টর এয়ারলাইনস এবং হেলিকপ্টার অপারেটরদের জন্য সরাসরি পারটেক্স পেট্রোলিয়াম থেকে জ¦ালানি ক্রয়ের অনুমোদন, প্রয়োজনে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে বিদেশ থেকে জেট ফুয়েল আমদানির অনুমোদন প্রদান, অভ্যন্তরীণ জ¦ালানি মূল্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জ¦ালানি মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করার কথা বলা হয়।
সূত্র জানায়, জ¦ালানি খরচেই ব্যয় হয় এয়ারলাইনস পরিচালনার ৪০-৪৬ ভাগ। বর্তমানে বাংলাদেশে অতিমূল্যায়িত জেট ফুয়েলের কারণে অস্তিত্বের সংকটে এভিয়েশন খাত। এমনিতেই এভিয়েশন খাত দীর্ঘ করোনাকালীন আঘাতে বিধ্বস্ত। তারপর ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে জ¦ালানি তেলের অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি এ খাতকে আরো বিপর্যস্ত করে তুলেছে। জেট ফুয়েল বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য বাংলাদেশে প্রায়ই আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের চেয়ে ৩০-৪০ শতাংশ বেশি মূল্যে কিনতে হয়। ফলে জিএমজি, ইউনাইটেড ও রিজেন্টের মতো সম্ভাবনাময় এয়ারলাইনসগুলো দেউলিয়া হয়েছে। জেট ফুয়েল বিক্রির একক কর্তৃত্ব পদ্মা অয়েল কোম্পানির থাকায় এয়ারলাইনসগুলো প্রতিযোগিতামূলক দামে জেট ফুয়েল ক্রয়ের অধিকার থেকে বঞ্চিত। ফলে বিদ্যমান পরিস্থিতি দেশীয় বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর দেউলিয়া ঘোষণা শুধু সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, একই জ¦ালানি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জ¦ালানির চেয়ে ১৫-২৫ শতাংশ বেশি মূল্যে ক্রয় করতে হয়। অতিসম্প্রতি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জ¦ালানি মূল্য ৫ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। আর আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জ¦ালানি মূল্য ৯ সেন্ট (প্রায় ১০ টাকা) কমিয়ে ১ ডলারে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে এওএবির সেক্রেটারি জেনারেল ও বেসরকারি এয়ারলাইনস নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মফিজুর রহমান জানান, অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য জেট ফুয়েলের দাম বাড়ানো হলেও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে কমানো হয়েছে। তাতে বিদেশী এয়ারলাইনসগুলো লাভবান হলেও দেশীয় এয়ারলাইনসগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য যেখানে মাসে ২০ লাখ লিটার জ¦ালানি প্রয়োজন হয়, সেখানে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য প্রয়োজন হয় মাত্র এক লাখ লিটার। জ¦ালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ রুটে আকাশপথে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে যাত্রী সংখ্যা হিসাব করলে গত বছরের তুলনায় বর্তমানে ৩০ ভাগ কম প্রবৃদ্ধি। যা আরো কমে যাবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে ব্যয় কমানোর উদ্যোগ

ব্যয় কমাতে সরাসরি জেট ফুয়েল আমদানি করতে চাচ্ছে দেশীয় এয়ারলাইনসগুলো

আপডেট সময়ঃ ০৯:২৯:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ব্যয় কমাতে সরাসরি জেট ফুয়েল আমদানি করার অনুমতি চা”ে ছদেশের বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলো। সাম্প্রতিক সময়ে দফায় দফায় জেট ফুয়েলের দাম বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সর্বশেষ গত মাসে অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের জন্য জেট ফুয়েলের দাম বাড়িয়ে লিটারপ্রতি ১৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে। আর আন্তর্জাতিক গন্তব্যের জন্য লিটারে ৯ সেন্ট কমিয়ে ১ ডলার বা ১০২ টাকা করা হয়েছে। ফলে বেড়ে গেছে দেশীয় এয়ারলাইনসগুলোর পরিচালনা ব্যয়। কারণ এয়ারলাইনসগুলোর পরিচালনা ব্যয়ের ৪০-৪৬ ভাগই জ¦ালানি বা জেট ফুয়েল ক্রয় বাবদ খরচ হয়। এমন পরিস্থিতিতে ওসব প্রতিষ্ঠান সরাসরি জেট ফুয়েল আমদানির অনুমতি চাচ্ছে। এভিয়েশন অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (এওএবি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অতি মূল্যায়িত জেট ফুয়েলের দাম সমন্বয় এবং যৌক্তিক সমাধান চেয়ে এওএবির প্রতিনিধিরা বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। জেট ফুয়েল নিয়ে সমস্যা সমাধানে এওএবির পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাবে দেশীয় প্রাইভেট সেক্টর এয়ারলাইনস এবং হেলিকপ্টার অপারেটরদের জন্য সরাসরি পারটেক্স পেট্রোলিয়াম থেকে জ¦ালানি ক্রয়ের অনুমোদন, প্রয়োজনে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে বিদেশ থেকে জেট ফুয়েল আমদানির অনুমোদন প্রদান, অভ্যন্তরীণ জ¦ালানি মূল্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জ¦ালানি মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করার কথা বলা হয়।
সূত্র জানায়, জ¦ালানি খরচেই ব্যয় হয় এয়ারলাইনস পরিচালনার ৪০-৪৬ ভাগ। বর্তমানে বাংলাদেশে অতিমূল্যায়িত জেট ফুয়েলের কারণে অস্তিত্বের সংকটে এভিয়েশন খাত। এমনিতেই এভিয়েশন খাত দীর্ঘ করোনাকালীন আঘাতে বিধ্বস্ত। তারপর ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে জ¦ালানি তেলের অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি এ খাতকে আরো বিপর্যস্ত করে তুলেছে। জেট ফুয়েল বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য বাংলাদেশে প্রায়ই আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের চেয়ে ৩০-৪০ শতাংশ বেশি মূল্যে কিনতে হয়। ফলে জিএমজি, ইউনাইটেড ও রিজেন্টের মতো সম্ভাবনাময় এয়ারলাইনসগুলো দেউলিয়া হয়েছে। জেট ফুয়েল বিক্রির একক কর্তৃত্ব পদ্মা অয়েল কোম্পানির থাকায় এয়ারলাইনসগুলো প্রতিযোগিতামূলক দামে জেট ফুয়েল ক্রয়ের অধিকার থেকে বঞ্চিত। ফলে বিদ্যমান পরিস্থিতি দেশীয় বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর দেউলিয়া ঘোষণা শুধু সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, একই জ¦ালানি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জ¦ালানির চেয়ে ১৫-২৫ শতাংশ বেশি মূল্যে ক্রয় করতে হয়। অতিসম্প্রতি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জ¦ালানি মূল্য ৫ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। আর আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জ¦ালানি মূল্য ৯ সেন্ট (প্রায় ১০ টাকা) কমিয়ে ১ ডলারে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে এওএবির সেক্রেটারি জেনারেল ও বেসরকারি এয়ারলাইনস নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মফিজুর রহমান জানান, অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য জেট ফুয়েলের দাম বাড়ানো হলেও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে কমানো হয়েছে। তাতে বিদেশী এয়ারলাইনসগুলো লাভবান হলেও দেশীয় এয়ারলাইনসগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য যেখানে মাসে ২০ লাখ লিটার জ¦ালানি প্রয়োজন হয়, সেখানে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য প্রয়োজন হয় মাত্র এক লাখ লিটার। জ¦ালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ রুটে আকাশপথে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে যাত্রী সংখ্যা হিসাব করলে গত বছরের তুলনায় বর্তমানে ৩০ ভাগ কম প্রবৃদ্ধি। যা আরো কমে যাবে।