• শনিবার, ২০ জুলাই ২০২৪, ০২:২০ অপরাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী নাইজেরিয়ান চক্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামে কোকেন পাচার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় নদী শাসনে ব্যয় বাড়ছে পিএসসির উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীরসহ ৬ জনের রিমান্ড শুনানি পিছিয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট রাজাকারের পক্ষে স্লোগান সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র-আলোকচিত্র প্রদর্শনী

ভারী যানের চালক সংকটে ভুগছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন

Reporter Name / ১০৬ Time View
Update : শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভারী যানের চালক সংকটে ভুগছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন। দীর্ঘদিন ধরেই এমন অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনেই অদক্ষ চালক দিয়ে ভারী যান চালানোর ঘটনাও ঘটছে। তবে গত বছরের নভেম্বরে দুই সিটির বর্জ্যবাহী গাড়ির চাপায় পরপর দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভারী যানচালক নিয়োগের বিষয়ে উদ্যোগ নেয়। কিন্তু নতুন ৫১ জন চালক নিয়োগের পরও দুই সিটিতে ১৫৪ জন ভারী যানচালক সংকট রয়েছে। মূলত নির্দিষ্ট বয়সসীমার কারণে ভারী যানচালক নিয়োগে জটিলতা দেখা দিয়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে দুই সিটির নিবন্ধিত মোট গাড়ির সংখ্যা ৯৪২টি। তার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) গাড়ি ৬০৯টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৩৩টি গাড়ি রয়েছে। আর ওসব গাড়ি চালানোর জন্য বৈধ লাইসেন্সধারী চালক আছে ২১০ জন। তার মধ্যে ডিএসসিসির ১৩৭ এবং ডিএনসিসির ৭৩ জন। দুই সিটি কর্পোরেশনে ভারী যানের সংখ্যা ৩৩০টি। তার মধ্যে ডিএসসিসির ১৮৩টি এবং ডিএনসিসির আছে ১৪৭টি। ওই গাড়িগুলো চালানোর জন্য বৈধ লাইসেন্সধারী চালক রয়েছেন ১৭৬ জন। ডিএসসিসির ১৩৭ জন এবং ডিএনসিসির ৩৯ জন। নতুন চালক নিয়োগের পরও দুই সিটি কর্পোরেশনে ১৫৪ জন ভারী যানচালকের সংকট রয়েছে। সম্প্রতি ডিএসসিসি ৫১ জন ভারী যানচালক নিয়োগ দিয়েছে। তারপরও সংস্থাটিতে আরো ৪৬ জন ভারী যানচালক প্রয়োজন। আর ডিএনসিসি ৪৭ জন ভারী যানচালক নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাসও হয়েছে। ওই সংখ্যক চালক নিয়োগ দেয়ার পরও সংস্থাটির ৬১ জনে ভারী যানচালক সংকট থাকবে।
সূত্র জানায়, ভারী যানের চালক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও চাহিদা মতো যানচালক পাওয়া যাচ্ছে না। মূলত নির্দিষ্ট বয়সসীমার কারণেই প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভারী যানচালক পাওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি প্রয়োজনের চেয়ে কম চালক নিয়োগ দেয়ায় দুই সিটি কর্পোরেশনেই চালক সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে। দুই সিটি কর্পোরেশনেই সমস্যাটির আশু সমাধান না হলে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাতে নগরবাসীর ভোগান্তি বাড়বে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) বিদ্যমান নিয়মানুযায়ী প্রয়োজনীয় যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং পরীক্ষার পর চালককে প্রথমে হালকা মোটরযানের (ওজন ২৫০০ কেজির নিচে) পেশাদার লাইসেন্স দেয়া হয়। ৩ বছর হালকা মোটরযান চালানোর পর একজন চালক মধ্যম শ্রেণীর মোটরযান (২৫০০ থেকে ৬৫০০ কেজি) চালানোর লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্য হয়ে ওঠে। একইভাবে ৩ বছর মধ্যম শ্রেণীর মোটরযান চালানোর পর চালককে ভারী মোটরযান (৬৫০০ কেজির ওপরে) চালানোর জন্য পেশাদার লাইসেন্স দেয়া হয়। ওই হিসেবে একজন চালক ২১ বছর বয়সে হালকা যানের লাইসেন্সের আবেদন করার পর ভারী যানের লাইসেন্স পেতে তার অন্তত ২৭ বছর বয়স হয়ে যায়। কিন্তু সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৩০ বছরের মধ্যেই আবেদন করতে হয়। যে কারণে সিটি করপোরেশনের ভারী যানচালক নিয়োগে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। তবে ওই শর্ত সাময়িক শিথিল করা হলে অর্থাৎ নিয়োগপ্রাপ্ত হালকা মোটরযানের লাইসেন্সধারী চালকরা ৩ বছরের কম অভিজ্ঞতা নিয়েই ভারী মোটরযানের লাইসেন্স পাওয়ার বিশেষ অনুমতি বিআরটিএ থেকে দেয়া হলে ভারী যানচালক সংকট সহজেই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
সূত্র আরো জানায়, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনেই যে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ভারী যানের চালক পাচ্ছে না বিষয়টি তা নয়। সারা দেশেই মাঝারি ও ভারী মোটরযানের চালক সংকট রয়েছে। বিআরটিএর হিসাবে, সারা দেশে নিবন্ধিত মোটরযান প্রায় ৪০ লাখ। তার বিপরীতে বিআরটিএ অনুমোদিত চালকের সংখ্যা মাত্র ২০ লাখ। দেশে মধ্যম ও ভারী দুই শ্রেণীর মোটরযান চালকেরই সঙ্কট রয়েছে। ওই সংকট কাটাতে সাময়িকভাবে লাইসেন্সপ্রাপ্তির শর্ত শিথিল করার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে কাগজপত্র জমা দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেয়া হলে সাময়িকভাবে ৩ বছরের বদলে মাত্র এক বছরের অভিজ্ঞতা দিয়েই মধ্যম শ্রেণীর মোটরযানের লাইসেন্স পাওয়া যাবে। একইভাবে ৩ বছরের পরিবর্তে এক বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেই মধ্যম শ্রেণীর মোটরযান চালকরা পাবে ভারী মোটরযান চালানোর লাইসেন্স।
এদিকে চালক ঘাটতি মেটাতে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ ২০২০ সালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে ১০৭ জন চালক নিয়োগের চিঠি দেয়। চিঠির জবাবে সংস্থাটি ৫০ জন চালক নিয়োগের অনুমিত পায়। গত বছরের ২৯ জানুয়ারি ৫০ জন চালক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সংস্থাটি মাত্র ১৯ জন চালক নিয়োগ দিতে পেরেছে। তারপর গত ৮ ডিসেম্বর ডিএসসিসি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আরো ৩২ জন চালক নিয়োগ দেয়।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ জানান, ডিএসসিসি দু’বারে ৫১ জন ভারী যানচালক নিয়োগ দিয়েছে। আরো কিছুসংখ্যক চালক নিয়োগ দেয়া হবে। বয়সসীমার কারণে ভারী যানচালক পাওয়া একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে যতোজন পাওয়া যাচ্ছে নেয়া হচ্ছে। বাকিদের আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হবে।
একই প্রসঙ্গে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা জানান, ডিএনসিসির ভারী যানচালক নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ৪৭ জন চালক নিয়োগ দেয়া হবে। তারপরও কিছু ঘাটতি থাকবে। তবে ডিএনসিসিকে আগের মতো আর বিড়ম্বনা পোহাতে হবে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category