নিজস্ব প্রতিবেদক :
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে আনা নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটির তদন্তকাজে স্থগিতাদেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে এ তদন্ত কার্যক্রম এখন বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। মাউশির অধীন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে চার হাজার কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন পিন্টু শেখ নামের এক ব্যক্তি। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মাউশির দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করার নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। জানা গেছে, অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক মাউশির কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী এবং সদস্যসচিব বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি মাউশির উপ-পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) মো. রুহুল মোমিনের বদলির পর তার স্থলাভিষিক্ত হন বিপুল চন্দ্র। কিন্তু কমিটি গঠনের একদিনের মাথায় তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া হয়। জানা গেছে, দ্বিতীয় শ্রেণির পদে শুধু এমসিকিউ (মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন) পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) বাদ দিয়ে খাতা দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে। গত বছরের অক্টোবরে ২৮টি পদে চার হাজার ৩২ জনকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় মাউশি অধিদপ্তর। এতে আবেদন করেন আট লাখ ৯৭ হাজার ৪৯ জন। এরইমধ্যে বেশিরভাগ পদের এমসিকিউ টাইপের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এখন তারা মৌখিক পরীক্ষার অপেক্ষায় আছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের বিরুদ্ধে গত ২ ডিসেম্বর ডিআইএ পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ৭ ডিসেম্বর থেকে তদন্তকাজ শুরু করে। ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রম চালানোর কথা বলা হয়েছিল নির্দেশনায়। তবে তদন্তকাজ শুরুর একদিন পরই গত ৮ ডিসেম্বর তা বন্ধের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে কমিটির আহ্বায়ক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীর বলেন, এটা মন্ত্রনালয়ের বিষয়। স্থগিতাদেশ থাকায় এখন তদন্ত কার্যক্রম বাতিল করা হবে। মাউশি সূত্রে জানা গেছে, সরকারি কলেজে ১০টি বিষয়ের প্রদর্শক, গবেষণা সহকারী, সহকারী গ্রন্থাগারিক-কাম-ক্যাটালগার, ল্যাবরেটরি সহকারীর পদগুলো দশম গ্রেডের। এ ধরনের ৬১০টি পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী, দশম থেকে দ্বাদশ গ্রেড পর্যন্ত দ্বিতীয় শ্রেণির পদ। মাউশির নিয়োগবিধিতে এ পদগুলোকে তৃতীয় শ্রেণির দেখিয়ে শুধু এমসিকিউ পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়। অন্যান্য পদের মধ্যে ২০তম গ্রেডের অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা প্রহরী, মালি, পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং ১৬তম গ্রেডের অফিস সহকারী, হিসাব সহকারী, ক্যাশিয়ার, স্টোরকিপার, গাড়িচালকসহ আরও কিছু পদে সব প্রার্থীরই এমসিকিউ পদ্ধতির পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।