• শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী নাইজেরিয়ান চক্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামে কোকেন পাচার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় নদী শাসনে ব্যয় বাড়ছে পিএসসির উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীরসহ ৬ জনের রিমান্ড শুনানি পিছিয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট রাজাকারের পক্ষে স্লোগান সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র-আলোকচিত্র প্রদর্শনী

মামলায় প্ররোচনার অভিযোগ সাবেক ভিসির পিএস আমিনুর’র বিরুদ্ধে

Reporter Name / ৪৩২ Time View
Update : শনিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২১

মোঃ মমিনুর রহমান, রংপুর প্রতিনিধি :
দশ মাস অতিবাহিত হলেও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বহুল আলোচিত ইংরেজি বিভাগে ফলাফল প্রকাশে গুরুতর অনিয়মের কোন সুরাহা হয়নি। উল্টো যে সকল শিক্ষক এই অনিয়মের বিপক্ষে কথা বলেছেন তাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে সাবেক উপাচার্যের একান্ত সচিব আমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে। সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজমুল হক গত ০৬ অক্টোবর লিখিতভাবে এই অভিযোগ করেন এবং সাজানো ও মিথ্যা মামলায় তাকে প্ররোচিত করে বাদী করায় তিনি সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। জানা যায়, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি রাতের অন্ধকারে ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর ১ম পর্ব পরীক্ষার মূল নম্বরপত্র এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর ছাড়াই গোপনে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের দুই কর্মকর্তা ফলাফল প্রকাশ করেন। ঐ দুই কর্মকর্তা হলেন উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সামসুল হক ও নিখিল চন্দ্র বর্মন। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক জিনাত শারমিন জানান, আমি পরীক্ষা কমিটির সদস্য অথচ আমি নিজেই ফলাফল প্রকাশের বিষয়টি জানি না। তৎকালীন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোরশেদ হোসেন জানান, যে কোন পরীক্ষার ফলাফল বিভাগের শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত পরীক্ষা কমিটির মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রন দপ্তরে আসার কথা এবং পর্যায়ক্রমে জুনিয়র অফিসার হতে সিনিয়রিটি মেইন্টেন করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে আসার পর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর হয়ে ফলাফল প্রকাশিত হয়। কিন্তু এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। আমার (পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক) স্বাক্ষরও নেওয়া হয়নি।
এঘটনার জেরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পদ হতে ড. মোরশেদ হোসেনকে সরিয়ে দিয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজমুল হককে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে ফলাফল প্রকাশে অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখে পুনরায় ফলাফল প্রকাশের দাবিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমন্বিত সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ তৎকালীন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. নাজমুল হককে ১৪ জানুয়ারি ঘেরাও করেন। এ ঘটনায় তৎকালীন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. নাজমুল হককে বাদী করে পরদিন তাজহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলা আদালত আসামীদের অব্যাহতি দিয়ে সেই মামলা খারিজ করে দেন। তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল হক ভিসি কলিমউল্লাহর একান্ত সচিব আমিনুর রহমানের প্ররোচনায় এবং তার প্রভাবে মামলাটি করা হয়েছে উল্লেখ করে লিখিতভাবে জানিয়েছেন মামলার বাদী ড. নাজমুল হক। ড. নাজমুল হক তার পত্রে উল্লেখ করেন, ১৪ জানুয়ারি তারিখের ঘটনায় আমি মামলা করার কথা ভাবিনি। কেউ কেউ জিডি করার কথা বলেছিলেন। সেটাও আমলে আনিনি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের বারবার চাপে বাধ্য হয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে একদিন পর ঘটনার একটা সাধারণ বিবরণ কাউকে অভিযুক্ত না করে হাতে লিখে উপাচার্য বাংলোয় অপেক্ষমান পিএস আমিনুর রহমানের হাতে দিই। সেখানে আমাকে যেতে বাধ্য করা হয়। আমার হাতে লেখা বিবরণটি তার মতো করে কম্পোজ করার পর স্বাক্ষরের জন্য আমার হাতে দিলে আমি দু’একটি বিষয়ে আপত্তি তুলি। আমি একাধিকবার বলেছিলাম, আমি কিন্তু মামলা চাই না। কি ঘটেছিলো শুধু সেটাই অবহিত করতে পারি। কিন্তু তিনি (আমিনুর) বলেন, কোন সমস্যা হবে না, এটাই নিয়ম। এরপর আমি বাসায় চলে যাই। পিএস (আমিনুর) পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। বাসায় ফেরার ঘন্টা দুয়েক পর আমি জানতে পারি একটি মামলা হয়েছে।”
ড. নাজমুল হক জানান, সাঁজানো মামলায় হয়রানীর শিকার সহকর্মীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে পত্র দিয়েছি।
উপাচার্য দপ্তরের একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, নাজমুল স্যারকে দিয়ে এক ধরনের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়েই ঐদিন সাবেক পিএস আমিনুর রহমান ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সামসুল হক এই মামলাটি করিয়েছেন। তারা দুইজনই এই মামলার ড্রাফট করেছেন এবং নাজমুল স্যারের স্বাক্ষর নিয়েছেন। অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহবায়ক প্রফেসর ড. মতিউর রহমান বলেন, ইংরেজি বিভাগের ফলাফল প্রকাশে যে অনিয়ম হয়েছে তা খতিয়ে দেখে এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাই। একই সাথে যারা সাঁজানো ও মিথ্যা ফৌজদারী মামলা দিয়ে আমাদের (শিক্ষক-কর্মকর্তা) হয়রানী করেছেন. সামাজিকভাবে হেয় করেছেন এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
অভিযোগের ব্যাপারে সাবেক পিএস আমিনুর রহমান বলেন, উনি (নাজমুল হক) একজন সিনিয়র অধ্যাপক। উনি নিজে এসে এই কাজটা করেছেন। এতদিন পরে এমন অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে ষঢ়যন্ত্র বলে আমি মনে করি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category