নিজস্ব প্রতিবেদক :
মার্কিন নাগরিক শেখ শোয়েব সাজ্জাদের মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় শোয়েবের স্ত্রীর বন্ধু কাজী ফাহাদকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার এ আদেশ দেন। আজ সোমবার ক্যান্টনমেন্ট থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত শনিবার আসামি ফাহাদকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তের স্বার্থে তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে একদিনের জন্য জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। গত ৩০ এপ্রিল বিকেলে রাজধানীর বনানী ডিওএইচএস’র মসজিদ গলির ১০৫ নম্বর বাসা থেকে শোয়েব সাজ্জাদের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড়ভাই শেখ সোহেল সায়াদ আহমেদ আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। এ মামলায় স্ত্রী সাবরিনা শারমিন ও তার বন্ধু কাজী ফাহাদকে আসামি করা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, শোয়েবের সঙ্গে ২০১৭ সালে সাবরিনার বিয়ে হয়। তারা দুজনেই আমেরিকাতে ছিলেন। ২০১৮ সালের দিকে ঢাকায় চলে আসেন সাবরিনা। এরপর তিনি পুরান ঢাকার ওয়ারীর ১৯১ নম্বর বাসার পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে থাকা শুরু করেন। এই বাসাটি শোয়েবদের। এখানে থাকার সময় পাশের বাসার কাজী ফাহাদ নামে এক তরুণের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সাবরিনা। ওই তরুণ নিয়মিত বাসায় আসতেন। যা পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে ধরা পরে। এ নিয়ে শোয়েবের সঙ্গে ফোনে প্রায়ই ঝগড়া হতো সাবরিনার। আমেরিকাতে বসে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরেন শোয়েব। প্রতিবেশী তরুণের সঙ্গে স্ত্রীর অনৈতিক সম্পর্কের কথা মহল্লায় ছড়িয়ে পরলে তিনি সামাজিকভাবে হেয় হন। মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, গত ১৬ মার্চ দেশে আসেন শোয়েব। দেশে এসেই শোয়েব তার স্ত্রী সাবরিনাকে নিয়ে শ্বশুর শাখাওয়াত হোসেনের বনানীর ডিওএইচএস’র বাসায় বসবাস শুরু করেন। এ সময় সাবরিনা শোয়েবের মোবাইল ও পাসপোর্ট সরিয়ে নিজের কাছে রাখেন। মোবাইল ও পাসপোর্ট ফেরত না দিয়ে, গত ১৫ এপ্রিল বাসা থেকে না বলে চলে যান সাবরিনা। তখন তিনি ফাহাদের সঙ্গে ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সাবরিনাকে এ সময় শোয়েবের মোবাইল ও পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার জন্য তার বাবাও মোবাইলে অনুরোধ করেন। তবে তারা কিছুই ফেরত দেননি। মানসিকভাবে এভাবে চাপে রাখায় শোয়েব আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।