নিজস্ব প্রতিবেদক :
মুজিব কোট পরলেই মুজিব সৈনিক হওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মুজিব সৈনিক হতে হলে মুজিবের আদর্শের সৈনিক হতে হবে। মুজিব সৈনিক হতে হলে শেখ হাসিনার খাঁটি কর্মী হতে হবে। আজ মঙ্গলবার নোয়াখালী শহর ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সম্মেলনে যুক্ত হন ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা শাসক নন, তিনি জনগণের সেবক। ‘আন্দোলনের মাধ্যমে নির্যাতনের জবাব দেওয়া হবে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, নির্যাতন কাকে বলে? বিএনপি কত হত্যাকা- ঘটিয়েছে? পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর থেকে শুরু করে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হত্যাকা-। আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে বিএনপি হত্যা করেছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন বিএনপি নেতারা ঘরে আছেন। অথচ আমরা তাদের শাসনামলের ৫ বছরে ৫০ দিনও ঘরে থাকতে পারিনি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আন্দোলন করেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করুক কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আগুন নিয়ে খেললে, সহিংসতা করতে এলে আমরা সতর্কতার সঙ্গে প্রস্তুত আছি। জনগণের জানমাল রক্ষায় সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সালে চোখের পলকে ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে। খন্দকার মোশতাক পলাশীর মীরজাফর। পলাশীর সেনাপতি মীরজাফর, আর বাংলাদেশের সেনাপতি জিয়াউর রহমান। (বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ে) জিয়া জড়িত না থাকলে আরেকটি খুনি চক্র তাকে হত্যার দুঃসাহস পেতো বলে আমি মনে করি না। ইতিহাস বড়ই নির্মম, বাঁচতে পারেনি জেনারেল জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর দুকন্যা শেখ হাসিনা আর শেখ রেহানাকে এতিম করেছে যে বুলেট, সেই বুলেট বেগম খালেদা জিয়াকে বিধবা করেছে। ‘বিশ্বাসঘাতকতার পরিণতির ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ইতিহাস কোনো স্বৈরাচারী প্রভুর রক্তচক্ষু পরোয়া করে না। ইতিহাসের আদালতের বিচারে কেউই রক্ষা পাবে না। অনেকেরই মৃত্যুদ- কার্যকর হয়ে গেছে। বিদেশে যারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে, একদিন তাদের যে দ-, সেই দ-ও কার্যকর করা হবে, ইনশাআল্লাহ। জিবকোট পরলেই মুজিব সৈনিক হওয়া যায় না মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মুজিবকোট খুনি খন্দকার মোশতাকও পরেছে। মুজিব সৈনিক হতে হলে, মুজিবের আদর্শের সৈনিক হতে হবে। আমার বার্তা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, বঙ্গবন্ধুর কন্যার বার্তা। আওয়ামী লীগকে আরো ঐক্যবদ্ধ, আরও সংগঠিত, আরও সুশৃঙ্খল করতে হবে। নোয়াখালীর আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর দুর্গ ছিল, এখন এটাকে শেখ হাসিনার শক্তিশালী দুর্গে পরিণত করতে হবে। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, রাজনীতি একদিনের ব্যাপার নয়, এক বছর, কয়েক বছরেও ব্যাপার নয়। নোয়াখালীতে আমি আর বিভেদ দেখতে চাই না। ক্ষমা করার উদারতা আমার আছে। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে, এ দেশ এত দিনেও স্বাধীন হতো কিনা, সন্দেহ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মহান আল্লাহ পাক বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যই বঙ্গবন্ধুকে জন্ম দিয়েছিলেন। আর মুক্তির জন্য জন্ম দিয়েছেন শেখ হাসিনাকে। একজন স্বাধীনতার জন্য আরেকজন মুক্তির জন্য। আমাদের মুক্তির সংগ্রামের অসীম সাহসী কা-ারী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নোয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু। এতে আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব উদ্দিন শাহীন, সহিদ উল্লাহ খান সোহেল, সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী প্রমুখ।