• বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৪ অপরাহ্ন
  • ই-পেপার

রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট

Reporter Name / ৩৪ Time View
Update : সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে রেল ট্রানজিট পেয়েও ব্যবহার করছে না। মূলত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অনুমতি না দেয়ায় বন্ধ রয়েছে রেলপথে বাংলাদেশ থেকে ভারত হয়ে নেপালে পণ্য রপ্তানি। ফলে ব্যবসায়ীরা পণ্য ভারতের কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে খালাস করে ওই দেশের সড়ক কিংবা রেলপথ ব্যবহার করে নেপালে পাঠাচ্ছে। এতে ভারতের লাভ হলেও বাংলাদেশের কোনো আয় হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে কেন ভারত হয়ে নেপালে পণ্য রপ্তানির অনুমতি দিচ্ছে না তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে রেল মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে রেলওয়ে। আর এক চিঠিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানায়, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সই হওয়া ট্রানজিট চুক্তির আওতায় অপারেটিং মডালিটিস অনুমোদিত না হওয়ায় রপ্তানির অনুমতি দেয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে ট্রানজিট চুক্তি সই হয়। ২০১১ সালে সংশোধিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী পণ্য বাংলাদেশ থেকে ভারত হয়ে নেপালে যায়। এই পথ দিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৫ হাজার ৩৭৬ টন সার নেপালে পাঠানো হয়েছে। পরের অর্থবছরে কোনো অর্ডারই পাওয়া যায়নি। কিন্তু এর এক বছর পর ২০২০-২১ অর্থবছরে দ্বিগুণেরও বেশি ৫৪ হাজার ৫১০ টন সার রপ্তানি করা হয়। পরের অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ৪ হাজার ৫২৫ টনে। ২০২৩ সালে নেপালে ৫৫ হাজার ডিএপি সার রপ্তানির আদেশ পায় ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির পরিকল্পনা ছিল, চীন থেকে আমদানি করা সার চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের পর লাইটার জাহাজে যশোরের নওপাড়ায় আনবে। সেখানে সারগুলো ৫০ কেজির বস্তায় ভরে যশোর-খুলনা রেলপথে দিয়ে বাংলাদেশের রোহনপুর সীমান্ত, ভারতের সিংগাবাদ হয়ে নেপালে রপ্তানি করবে। কিন্তু এনবিআরের অনুমতি না মেলায় তা হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের অনুমতি না পেয়ে ভারতে ওই সার খালাস করে সেখান বস্তায় ভরার পর নেপালে পাঠানো হয়। অথচ বাংলাদেশে সার খালাসের পর ভারতের দেয়া ট্রানজিট ব্যবহার করে নেপালে রপ্তানি করলে দেশেরই লাভ হতো। পণ্য খালাসের জন্য যে টাকা কলকাতা বন্দর পেয়েছে, তা চট্টগ্রাম বন্দর পেত। ৫৫ হাজার টন সারের জন্য ১১ লাখ বস্তার প্রয়োজন হয়েছে। এগুলো বাংলাদেশ থেকে কিনলে দেশের লাভ হতো। বাংলাদেশি শ্রমিকরা কাজ পেতেন। কিন্তু সরকারের অনুমতি না পাওয়ায় রপ্তানির পুরো সুবিধা ভারত পেয়েছে। কলকাতা বন্দর রাজস্ব পেয়েছে, সে দেশ থেকে বস্তা কিনতে হয়েছে। আর ৫৫ হাজার টন সার রপ্তানিতে রেলের আয় যতটা না হতো, তার চেয়ে বেশি হতো ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ। চলতি অর্থবছরে ৭৪ হাজার টন সার আমদানির আগ্রহ জানিয়েছিল নেপাল। কিন্তুঅনুমতি জটিলতায় রেলওয়ে এতে সাড়া দেয়নি। সূত্র জানায়, রেলওয়ে ট্রানজিট চুক্তির আওতায় অনেক বছর ধরে নেপালে পণ্য রপ্তানি করছে। গত বছরের ১৭ মে দেশ ট্রেডিং করপোরেশন সার রপ্তানির জন্য রেল ব্যবহারের আবেদন করে। ৩১ মে ভারতের রেল কর্তৃপক্ষ ভারতীয় ওয়াগনে করে দেশটির রেলপথ ব্যবহার করে রপ্তানির অনুমতি দেয়। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের অনুমোদন না মেলায় নেপালে পণ্য রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ-নেপালের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সপ্তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ট্রানজিট চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত রুটে আমদানি-রপ্তানি করা যাবে। এর জন্য অন্য কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণের প্রয়োজন নেই। কিন্তু কী কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দিচ্ছে না, তা রেল মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জানতে চিঠি দেয়া হয়েছে। অনুমতি প্রাপ্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে। এদিকে কী কারণে রেল ট্রানজিট ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না- এ বিষয়ে এনবিআরের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও চুক্তি শাখার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কূটনৈতিক কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নেপালের সঙ্গে ট্রানজিট স্থগিত রেখেছে। তাই এনবিআর অনুমতি দিতে পারেনি। এ অনুমতি দিলে মোংলা বন্দর ও রোহনপুর স্টেশনে অর্থনৈতিক কর্মকা- বৃদ্ধি পেত ও দেশের লাভ হতো।

 

 

 

 

 

 

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category