নিজস্ব প্রতিবেদক :
রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা মামলার যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ১১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার মামলাটির যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ধার্য ছিল। তবে এ মামলার আসামি মুফতি আবদুল হাইকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এজন্য ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক রফিকুল ইসলাম যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আগামী ১১ আগস্ট পরবর্তী দিন ধার্য করেন। এর আগে ৩ এপ্রিল আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন সাত আসামি। অপর আসামিরা পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি। এ মামলায় গত ২১ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল (বাংলা ১৪০৮ সনের ১ বৈশাখ) পহেলা বৈশাখের দিন ভোরে রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানস্থলে দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয় এবং পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে তা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি ও ১০-১৫ মিনিট পর আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। বোমা হামলায় প্রাণ হারান ১০ জন। আহত হন আরও অনেকেই। ওই ঘটনার পর রমনা থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) কবির হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদ- এবং ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- মাওলানা আকবর হোসাইন, মুফতি আবদুল হাই (পলাতক), হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর (পলাতক), মাওলানা আবু বকর, মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মাওলানা তাজউদ্দিন (পলাতক) ও আরিফ হাসান সুমন। আসামিদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকর করার আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়াও তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির, হাফেজ ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আবদুর রউফ ও মাওলানা শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল। ৩০২/৩৪ ধারায় তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদ- দেয়া হয়। বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। বিস্ফারক মামলার অভিযুক্তরা হলেন- মুফতি আবদুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসাইন, মুফতি আবদুল হাই, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর, মুফতি শফিকুর রহমান, মাওলানা তাজউদ্দিন, আরিফ হাসান সুমন, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির, হাফেজ ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আবদুর রউফ ও মাওলানা শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল। অভিযুক্ত মুফতি আবদুল হান্নানের ফাঁসি ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে কার্যকর হয়েছে। সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে তাকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়। তাই মামলা হতে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।