• সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ১২:২৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
সন্ত্রাস দমন অভিযানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়নি বান্দরবানে সেনা প্রধান বিস্ফোরণের ঝুঁকিমুক্ত হওয়ায় বায়োগ্যাসে ঝুঁকছে গ্রাহকরা রেল দুর্ঘটনা রোধে সতর্ক থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ‘পেশাদার’ ও ‘রাজনৈতিক’ সমালোচকদের প্রতি তথ্যমন্ত্রীর পৃথক বার্তা বছরে তৈরি হচ্ছে ৮ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য, পরিবেশে মিশছে ৬০% বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণ: নিহত ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের স্মরণ সহকর্মীদের যৌক্তিক দাবির ভিত্তিতে ১০ সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন করা হয়েছে : ইসি নীলফামারীতে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মাণ হচ্ছে ‘ন্যায়কুঞ্জ’ বান্দরবানে প্রায় সাড়ে ৩কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস সংসদীয় আসনগুলোর চূড়ান্ত সীমানার গেজেট প্রকাশ, ১০টিতে পরিবর্তন

রাজধানীতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ

Reporter Name / ১১১ Time View
Update : রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীতে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। প্রতিদিনই মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আর আইসিডিডিআরবিতে যেভাবে রোগী বাড়ছে তাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মহামারীর আশঙ্কা করছেন। ২ দিনে ওই হাসপাতালটিতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে নতুন করে প্রায় দেড় হাজার রোগী ভর্তি হয়েছে। আর আক্রান্তদের বেশিরভাগই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, শনিরআখড়া, মোহাম্মদপুর, টঙ্গী, উত্তরা, আজিমপুরসহ নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা থেকে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে আইসিডিডিআর,বির ওপর চাপ কমাতে অন্যান্য হাসপাতালেও ডায়রিয়ায় রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সহজলভ্য করার আহ্বান জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গরমে ডায়রিয়াল জীবাণু অনুকূল পরিবেশ পায় এবং ওই সময়ে জীবাণু বেশিক্ষণ বেঁচে থাকে। তাছাড়া গরমের সময় অনেকে অনিরাপদ পানি পান করে। ফলে ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে বাইরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা জরুরি। যেখান সেখান থেকে পানি খাওয়াও নিরাপদ নয়। পানি যদি খেতে হল সেটি ফোটানো কিনা খেয়াল রাখতে হবে। অন্যথায় পানি জীবাণুমুক্ত তা নিশ্চিত হতে হবে। পাশাপাশি করোনাকালীন সময়ের দুই বছরে হাত ধোয়ার যে একটা ভাল অভ্যাস তৈরি হয়েছিল তা বজায় রাখতে হবে। ডায়রিয়া চিকিৎসায় আইসিডিডিআর,বিতে রোগী চাপ বাড়লে অন্য বড় হাসপাতালগুলোতেও ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। সেক্ষেত্রে একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিস নাম্বার চালু করা যেতে পারে। যেরকম করোনা রোগীদের জন্য করা হয়েছিল।
সূত্র জানায়, রাজধানীর অন্য হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর চাপ খুব একটা না থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত রয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ খুব একটা নেই। তবে যদি প্রয়োজন পরে তাহলে রোগীর চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। আর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ এ- হাসপাতালে মোট ১১শ’ জনের মতো রোগী ভর্তি রয়েছে। তাদের মধ্যে ডায়রিয়ার রোগী কয়জন ভর্তি আছে তার সঠিক কোন পরিসংখ্যান না থাকলেও ওই সংখ্যা খুব বেশি নয়। ওই হাসপাতালটিও প্রস্তুত রয়েছে। যদি ডায়রিয়া মহামারী আকার ধারণ করে তাহলে নিশ্চয়ই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেব।
সূত্র আরো জানায়, মহাখালী আইসিডিডিআর,বিতে চিকিৎসা নিতে একের পর এক এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য জায়গা থেকে রোগী আসছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে একজন সামান্য একটু সুস্থ হলে তাকে কাউন্সিলিং করে বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছে চিকিৎসকরা। গত শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও ওই হাসপাতালটিতে ১ হাজার ১৩৮ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তারপর রাত ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত নতুন ৪৮ জন, ২টা পর্যন্ত ৭৪ জন, ৩টা পর্যন্ত ৯৮ জন, ৪টা পর্যন্ত ১২০ জন, ভোর ৫টা পর্যন্ত ১৪০ জন, ৬টা পর্যন্ত ১৬১ জন, ৭টা পর্যন্ত ২০২ জন এবং সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৬৩ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। তার আগের আগের দুদিনে হাসপাতালটিতে ২ হাজার ৪০৯ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিল। তার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এক হাজার ১৭৬ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আইসিডিডিআর,বিতে এসে ভর্তি হয়েছেন। আর বুধবার রাত পর্যন্ত এক হাজার ২৩৩ রোগী ভর্তি হন। গত সাতদিনে হাসপাতালটিতে ৮ হাজার ১৫২ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার আগে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে এরকমই একটি প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল, যা একেবারে মহামারীর রূপ ধারণ করে। সেটি মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল।
এদিকে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবে প্রতিদিন যেভাবে রোগী বাড়ছে তাতে চলতি বছর তা মহামারীর রূপ নিতে পারে আশঙ্কা করে আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের প্রধান ডাঃ বাহারুল আলম জানান, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বছরে দু’বার বাড়ে। শীতের সময় আর গরমের সময়ে। সাধারণত প্রতিদিন সাড়ে তিনশ’ থেকে চারশ’ জন থাকলেও রোগী বাড়লে সর্বোচ্চ এক হাজারের মতো হয়। কিন্তু এবারই তা ১ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। দৈনিক এখানে ১২-১৩শ’ ডায়রিয়া রোগী আসছে। তাদের বেশিরভাগকেই ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর বাইরে তাবু খাটিয়েও রোগীর সঙ্কুলান করা মুশকিল হচ্ছে।
অন্যদিকে আইসিডিডিআর,বির সহযোগী গবেষক ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ লুবাবা শাহরিন জানান, ঢাকার সব জায়গা থেকেই এখানে রোগী আসছেন। তবে যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, উত্তরখান, মানিকনগর, জুরাইন, মুগদা- ওসব এলাকা থেকে বেশি রোগী আসছেন। আর ঢাকার বাইরে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা থেকে প্রচুর রোগী আসছেন। আসলে যেসব জেলা থেকে ঢাকার সড়ক পথে দূরত্ব কম- সেসব জেলা থেকে রোগী বেশি আসছে। কোন রোগীকে ফেরত দেয়া হচ্ছে না। যারা মারাত্মক পানিশূন্যতা নিয়ে আসছে তাদের সঙ্গে সঙ্গে স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। তাতে তারা দ্রুতই সুস্থ হচ্ছে। জায়গা স্বল্পতার কারণে কোন রোগী মোটামুটি সুস্থ হলেই বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। কারণ আরো অনেক রোগী ভর্তির জন্য আসছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category