নিজস্ব প্রতিবেদক :
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় আগুনের ঘটনায় হতাহতের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিট আবারও শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আবেদনে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য এক কোটি টাকা এবং আহতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য ২৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। চারটি মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন করা হয়েছে। আজ রোববার ব্যারিস্টার অনিক আর হক ও শারমিন আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। শারমিন আক্তার বলেন, হাইকোর্টের একটি দ্বৈত রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। আমরা জানতে পেরেছি নিহত ও আহত শ্রমিকদের নিকট থেকে লিখিত নেওয়া হয়েছে। তাদের দুই লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে আর ক্ষতিপূরণ দেবে না। তাই আমরা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করেছি। মানবাধিকার সংগঠনগুলো হলো- আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি। গত ৮ জুলাই বিকেলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসের জুসের কারখানায় আগুন লেগে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত ৫২ জন শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ২৫ জন শ্রমিক। এই হতাহতের ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক (সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক) আবুল হাসেম, তার ছেলে হাসীব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম, তানজীম ইব্রাহীম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাহান শাহ আজাদ, উপ-মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ ও প্রকৌশলী মো. আলাউদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে গত ১৪ জুলাই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের (সেজান জুস) কারখানায় অগ্নিকা-ে হতাহতের ঘটনায় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের প্রতি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছিলেন, এতজন শ্রমিক নির্মমভাবে মারা গেলেন, এফবিসিসিআইসহ দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো কোনো শোকবার্তা পর্যন্ত জানাল না। গণমাধ্যমে শোক জানিয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর কোনো বিবৃতিও চোখে পড়লে না। তাদের নূন্যতম দায়বদ্ধতাও নাই। রূপগঞ্জ ট্র্যাজেডি পরে শ্রমিকদের বেতন বকেয়ার বিষয়টি ১৪ জুলাই আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন। এ সময় হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন। হাইকোর্ট ওই সময় আরও বলেন, তারা (ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মালিক) আছেন শুধু সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় আর ব্যাংকের ঋণ লোন কীভাবে মওকুফ পাওয়া যায় সেই চেষ্টায়। ওই দিন আদালতে ব্যারিস্টার সারা হোসেন ও অনিক আর হক ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। আদালতের এসব মন্তব্যের বিষয় নিশ্চিত করেছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন।