নিজস্ব প্রতিবেদক :
জমির দাম বেশি দেখিয়ে রূপালী ব্যাংক থেকে ঋণ বাবদ ১৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭ হাজার ৭৩৯ টাকা উত্তোলন ও তা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার আসামিরা হলেন বি জি ব্ল্যাক টাইগার অ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ খান গেদু, রূপালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. মাহমুদুল ইসলাম ও সিনিয়র অফিসার কে বি এম সিরাজুদ্দৌলা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের জনসংযোগ দপ্তর সূত্র এ তথ্য জানিয়েছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, অসৎ উদ্দেশ্যে অন্যায়ভাবে আর্থিক লাভের জন্য প্রতারণা, দুর্নীতি, জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে বন্ধক নেওয়া ৩ দশমিক ৫৩২ একর জমি নিজের দাবি করে ব্যাংকে জামানত হিসাবে বন্ধকি প্রদান। এ ছাড়া বন্ধকীকৃত জমি অধিক মূল্যে মূল্যায়ন করে রূপালী ব্যাংক লিমিটেড থেকে ঋণ বাবদ ১৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭ হাজার ৭৩৯ টাকা নিয়ে পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেছেন। বি জি ব্ল্যাক টাইগার অ্যাগ্রো লিমিটেডের নামে ২০১৪ সালে ১৬ নভেম্বর রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, শামস্ ভবন করপোরেট শাখা খুলনায় চলতি হিসাব খোলা হয়। ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ খান গেদু প্রকল্প ঋণ বাবদ ২৯ কোটি ৩৯ লাখ এবং চলতি মূলধন ঋণ বাবদ ৮ কোটি টাকার জন্য ব্যাংকে আবেদন করেন। আবেদন প্রাপ্তির পর শাখার ঋণ কর্মকর্তা কে বি এম সিরাজুদ্দৌলা ও শাখা ব্যবস্থাপক মো. মাহমুদুল ইসলাম প্রকল্প এলাকাসহ বন্ধকী জমি পরিদর্শন করে ২ দশমিক ০১৭ শতক জমির মূল্য ১৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করেন। ওই বছরের মে মাসে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের ৯৭২তম সভায় গ্রাহক প্রতিষ্ঠান বি জি ব্ল্যাক টাইগার অ্যাগ্রো লিমিটেডের অনুকূলে ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ও সিসি (হাইপো) তিন কোটি কোটি টাকাসহ মোট ১৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা অনুমোদন করা হয়। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে আসামি মো. মাহমুদুল ইসলাম ও কে বি এম সিরাজুদ্দৌলার সহায়তায় আরেক আসামি মো. আব্দুল্লাহ খান গেদু দাকোপ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে বন্ধক নেওয়া ৩ দশমিক ৫৩২ একর জমিসহ ২০ দশমিক ১৭৩২ একর জমি সহায়ক জামানত হিসাবে রূপালী ব্যাংক লিমিটেড করপোরেট শাখা, খুলনা-এর অনুকূলে রেজিস্ট্রি করে দেন। দলিল দুটির সার্টিফাইড কপি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দলিল দুটির তফসিলে উল্লিখিত মূল মালিক যথাক্রমে মোস্তফা জামান (তুহিন) ও মোসা. জহুরা বেগম। এ ক্ষেত্রে বন্ধকীকৃত ২০ দশমিক ১৭৩ একর জমির মধ্যে ৩ দশমিক ৫৩২ একর অন্যের জমি ব্যাংকের অনুকূলে জামানত রেখে ঋণ অনুমোদন করা হয়। মামলার তদন্তকালে অন্য কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তা আমলে নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে দুদক।