নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দুই আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ’র আদালত গতকাল রোববার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। যে দুই আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে, তাঁরা হলেনÑমোহাম্মদ সেলিম ওরফে লম্বা সেলিম ও শওকত উল্লাহ। এর আগে গতকাল বেলা ১১টার দিকে পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় তাঁদের দুজনকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। কক্সবাজার কোর্ট পরিদর্শক চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার দুই আসামির সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল পুলিশ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এরই মধ্যে মুহিবুল্লাহ হত্যাকা-ের ঘটনায় চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মোহাম্মদ সেলিম ওরফে লম্বা সেলিম, জিয়াউর রহমান, আবদুস সালাম ও শওকত উল্লাহ। এর মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে গত শুক্রবার দুপুরে মোহাম্মদ সেলিম ওরফে লম্বা সেলিমকে এবং দিবাগত রাতে জিয়াউর রহমান ও আবদুস সালামকে আটক করে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। অপর দিকে, শওকত উল্লাহকে শনিবার বিকেলে আটক করে উখিয়া থানা পুলিশ। এর মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদ সেলিম ওরফে লম্বা সেলিম ও শওকত উল্লাহকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। এর আগে রোহিঙ্গানেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকা-ের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা করেন।
এদিকে, কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে তাকে গ্রেফতার করে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা। গ্রেফতারকৃতের নাম মো. ইলিয়াছ (৩৫)। তিনি কুতুপালং ৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। এ নিয়ে মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হলো। ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক জানান, কুতুপালং ৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় জড়িত এক আসামি অবস্থান করছে, এমন খবরে গতকাল রোববার দুপুর ১২টায় এপিবিএনের একটি দল অভিযান চালায়। সন্দেহজনক একটি বাড়ি ঘেরাও করলে কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায় ইলিয়াছ। পরে ধাওয়া দিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুহিবুল্লাহকে তাঁর নিজ কার্যালয়ে পাঁচ রাউন্ড গুলি করে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা। এ সময় তিন রাউন্ড গুলি তাঁর বুকে লাগে। এতে তিনি ঘটনাস্থলে পড়ে যান। খবর পেয়ে এপিবিএনের সদস্যেরা তাঁকে উদ্ধার করে ‘এমএসএফ’ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে উখিয়া থানা পুলিশকে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। রোহিঙ্গানেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকা-ের পর থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জেলা পুলিশ ও এপিবিএনের টহল বাড়ানো হয়। হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাঈমুল হক।