নিজস্ব প্রতিবেদক :
কোটা আন্দোলন আদালতের বিষয় উল্লেখ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, আদালত যে আদেশ দেবেন সেটি সবাইকে মানতে হবে। যদি কেউ আইনশৃঙ্খলা ভাঙার চেষ্টা করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর পুরান ঢাকায় পবিত্র আশুরা ও তাজিয়া মিছিলকে কেন্দ্র করে ইমামবাড়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। কোটা আন্দোলন চলমান অবস্থায় নিরাপত্তা পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, চলমান কোটা আন্দোলনের বিষয়টি আদালতের বিষয়। আদালত যে আদেশ দেবেন সেটিকে শ্রদ্ধা ও মানা নাগরিকের দায়িত্ব। আমরা আদালতের নিয়ম মানতে বাধ্য। পুলিশ যেসব নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে সেটি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই করবে। যদি কেউ আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গে কোনো ধরনের অপতৎপরতা চালায়, সেটি যেই হোন তাদের শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে। আশুরা ও তাজিয়া মিছিল কেন্দ্রীক জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাজিয়া মিছিলকে কেন্দ্র করে অতীতেও জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাই এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে এবছর আমরা সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রণয়ন করেছি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এরই মধ্যেই নিরাপত্তা স্বার্থে আমরা আশপাশে তল্লাশি সম্পন্ন করেছি। পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্য কাজ করছে। ইমামবাড়ার আশপাশে যেসব উঁচু ভবন রয়েছে সেসব ভবন থেকে কেউ বা কোনো গোষ্ঠি যাতে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ঘটাতে না পারে সেজন্য এসব ভবনের উপরেও ও নিচে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। তিনি বলেন, আগামী ১৭ জুলাই পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ঢাকা মহানগরে শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় আচার, তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। তিনি বলেন, রাজধানীতে যেসব ইমামবাড়া রয়েছে সে সমস্ত জায়গায় পুলিশের ডগ স্কোয়াট চেকিং সুইপিং সবকিছু এরই মধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার। এখানে (ইমামবাড়ায়) যারা প্রবেশ করবেন, তাদের অবশ্যই আর্চয়ে গেটে তল্লাশির মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। ইমামবাড়ার সন্নিকটে যেসব উঁচু ভবন রয়েছে সেসব ভবন থেকে পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরিং করবে। ইমামবাড়াসহ পুরো এলাকায় পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। ইমামবাড়ার আশপাশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। পুরো এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা মনিটরিং করা হবে। তিনি বলেন, ইমামবাড়া থেকে মিছিল বের হয়ে যে স্থানে যাবে, এবং সে রাস্তায় দিয়ে যাবে সবখানে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। কেউ বা কোনো গোষ্ঠী গুজব বা অপপ্রচার করতে না পারে সেজন্য সাইবার স্পেসেও মনিটরিং করা হবে-যোগ করেন ডিএমপি কমিশনার। ডিএমপি কমিশনার বলেন, ইমামবাড়ার ভেতরে যাতে কেউ ছুরি-চাকু দিয়াশলাই বা দাহ্য পদার্থ নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষকেও আমরা নজরদারির জন্য অনুরোধ করছি। একই সঙ্গে পুলিশও এ বিষয়টি নজরদারি করবে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের যেহেতু পতাকা নেওয়ার একটি প্রচলন রয়েছে সেজন্য পতাকা যাতে খুব বেশি উঁচু না হয় বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে যেন স্পর্শ না করে সে বিষয়ে খেয়াল রাখার জন্য কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। ইমামবাড়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করে তাজিয়া মিছিলের সব নিরাপত্তা প্রণয়ন করা হয়েছে। আশা করছি আগামী তিন দিনব্যাপী ধর্মীয় এ অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।