স্পোর্টস ডেস্ক :
সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারাতেই নাকের পানি চোখের পানি এক হওয়ার অবস্থা। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের অবস্থাও তাতে ফুটে উঠেছে খানিকটা। তবে এমন জয়েও দলের ভেতরের আবহ দারুণ, তারা যে দেখতে পাচ্ছেন ইতিবাচক ছবিটাই! চাপের মধ্যে কঠিন পরিস্থিতিতে এমন জয় বিশ্বকাপে ভালো করতে দলকে বিশ্বাস জোগাবে বলে মনে করেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে দুবাইয়ে অনুশীলনের পাশাপাশি দুই ম্যাচের এই সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। আইসিসি সহযোগী দেশ আরব আমিরাত প্রথম ম্যাচে তরুণ দল নিয়েও লড়াই জমিয়ে তোলে তুমুল। উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত শেষ ওভারে গিয়ে ৭ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। ম্যাচের পরদিন বিসিবির ভিডিও বার্তায় মিরাজ বললেন, কঠিন পথে এসেছে বলেই এই জয়ের ওজন বেড়ে গেছে অনেক। “আমাদের একটা জয় খুব দরকার ছিল। কারণ সবশেষ আমরা যে কয়টি সিরিজ খেলেছি বা এশিয়া কাপ হেরেছি, আমরা খুব কাছে গিয়ে হেরে গেছি। জিততে জিততে হেরে গেছি। কালকেও পরিস্থিতি ওরকম ছিল। আমাদের বোলাররা খুব ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং সবার মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস কাজে লাগবে বিশ্বকাপে।” “আমাদের যে জিনিসটা দরকার ছিল যে কীভাবে একটা ম্যাচ জিততে হবে এই চাপের পরিস্থিতিৃ কারণ এরকম ম্যাচ আমরা অনেক হেরেছি। ছোট ছোট যে জিনিসগুলো করা হয়েছে, সেটা নিয়ে কথা বলা হয়েছে।” গত বিশ্বকাপের পর থেকে ১৪ টি-টোয়েন্টি খেলে বাংলাদেশের মাত্র তৃতীয় জয় ছিল এটি। আরব আমিরাত বিশ্ব ক্রিকেটের প্রতিষ্ঠিত কোনো শক্তি না হলেও তারা লড়াইয়ে কমতি রাখেনি। একপর্যায়ে ১১ ওভারে ৭৭ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহান ৯ ওভারে ৮১ রানের জুটি গড়েন। রান তাড়ায় আমিরাত একপর্যায়ে সহজে হারবে বলে মনে হলেও পরে লোয়ার অর্ডারে দারুণ ব্যাটিংয়ে তারা চমকে দেয় বাংলাদেশকে। শেষে গিয়ে অবশ্য পেরে ওঠেনি অল্পের জন্য। মিরাজ বললেন, কঠিন পরীক্ষায় উতরে জয় ধরা দিয়েছে বলে ইতিবাচক আবহ ছড়িয়েছে দলে। “আমাদের একটা ম্যাচ জেতা দরকার ছিল। কালকে আমরা সেই ম্যাচ জিতেছি। তো দলের ভেতর খুব ভালো একটা আবহ ছিল। বিশেষ করে আমাদের কোচিং স্টাফ যারা ছিলেন, তারা আমাদের সবার প্রশংসা করছেন। আফিফ অনেক ভালো ব্যাট করেছে। আফিফকে করেছেন (প্রশংসা), সোহান ভাইকে করেছেন এবং যারা ছোট ছোট অবদান রেখেছে, তাদেরকেও করেছেন।” ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে এই জয়ে বড় অবদান রাখেন মিরাজ। তবে আপাতত আলোচনা বেশি তার ব্যাটিং নিয়ে। বলা ভালো, ব্যাটিং পজিশন নিয়ে। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের পর এই ম্যাচেও তাকে দেখা যায় ওপেনিংয়ে। এশিয়া কাপের ম্যাচে ২৬ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে তিনি বেশ চমকে দিয়েছিলেন। আরব আমিরাতের বিপক্ষে রোববার করতে পারেন ¯্রফে ১৪ বলে ১২। তবে নিজের নতুন এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি বেশ রোমাঞ্চিত। “টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে একটা সুযোগ দিয়েছে। হয়তো তারা মনে করছেন যে আমি ওপেন করলে ভালো। চেষ্টা করছি নিজেকে ওইভাবে তৈরি করার জন্য এবং ওপেনার হিসেবে আমাদের অবদানটা গুরুত্বপূর্ণ।” “আমার কাছে হয়তো অনেক বড় রান আশা করা হয় না। তবে আমি যদি ছোট ছোট ‘ইম্প্যাক্ট’ রাখতে পারি, এটাই দলের জন্য অনেক ভালো হবে। ওইভাবেই নিজেকে মানসিকভাবে তৈরি করছি এবং ভালো খেলার চেষ্টা করছি।” আরব আমিরাতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি মঙ্গলবার। নিজের চাওয়ার পাশাপাশি সামনে তাকিয়ে দলের লক্ষ্যের কথাও জানালেন মিরাজ। “দেখুন, এখানে আমরা একটা উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছি। বিশ্বকাপের ভালো প্রস্তুতির জন্যই এখানে এসেছি। সবশেষ দুই-তিন দিন এখানে অনুশীলন করেছি, ম্যাচ খেলেছি। আমাদের যে ছোট ছোট সমস্যা ছিল বা ভুল ছিল, সেই ভুলের পরিমাণ যেন কমিয়ে নিয়ে আসি। সেটাই আমরা চেষ্টা করছি এবং পরের ম্যাচে প্রয়োগের চেষ্টা করব।”