• রবিবার, ২১ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪২ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী নাইজেরিয়ান চক্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামে কোকেন পাচার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় নদী শাসনে ব্যয় বাড়ছে পিএসসির উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীরসহ ৬ জনের রিমান্ড শুনানি পিছিয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট রাজাকারের পক্ষে স্লোগান সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র-আলোকচিত্র প্রদর্শনী

সাইবার নিরাপত্তায় পিছিয়ে রয়েছে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো

Reporter Name / ৪৬৫ Time View
Update : সোমবার, ৪ অক্টোবর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাইবার নিরাপত্তায় পিছিয়ে রয়েছে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। অথচ দিন দিন দেশে ডিজিটাল মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের পরিধি বেড়ে চলেছে। কিন্তু অনেক ব্যাংকই সাইবার নিরাপত্তায় নেক্সট জেনারেশন ফায়ারওয়াল পুরোপুরি স্থাপন করতে পারেনি। তাছাড়া অর্ধেক ব্যাংক এটিএম বুথে এ্যান্টিস্কিমিং ডিভাইস স্থাপন করতে পারেনি। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও সাইবার নিরাপত্তা খুবই দুর্বল। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্ক করে দেয়ার পরপরই ব্যাংকগুলো অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম সীমিত করেছে। এটিএম বুথ সেবাও কিছু কিছু ব্যাংক বন্ধ রেখেছে। এখন সব ব্যাংকেরই যতো দ্রুত সম্ভব সাইবার নিরাপত্তা আরো উন্নত করে তোলা জরুরি হয়ে উঠেছে। ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের সব ব্যাংক এখনো নেক্সট জেনারেশন ফায়ারওয়াল পুরোপুরি স্থাপন করতে সক্ষম হয়নি। আর অধিকাংশ ব্যাংকই সব এটিএম বুথে এ্যান্টিস্কিমিং ডিভাইস স্থাপন করতে পারেনি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের একের পর এক নির্দেশনার পর থেকে ব্যাংকগুলো অনেক বেশি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। যদিও বেশির ভাগ ব্যাংক পৃথক আইটি বিভাগ করার পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তিতে অভিজ্ঞদের নিয়োগ দিয়েছে। সূত্র জানায়, বিআইবিএমের এক গবেষণার তথ্যানুযায়ী দেশের মোট ব্যাংকের ৫০ শতাংশ এখনো সাইবার নিরাপত্তায় নেক্সট জেনারেশন ফায়ারওয়াল পুরোপুরি স্থাপন করতে পারেনি। তার মধ্যে ৩৫ শতাংশ ব্যাংক আংশিক এবং ১৫ শতাংশ ফায়ারওয়াল স্থাপনের অনুমোদন পর্যায়ে রয়েছে। ফলে আংশিক ও অনুমোদন পর্যায়ে থাকা ওই ৫০ শতাংশ ব্যাংকের সাইবার নিরাপত্তা এখনো ঝুঁকিতে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি এবং দেশে এটিএম বুথে জালিয়াতির পর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাইবার নিরাপত্তা জোরদারে বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একাধিক নির্দেশনা দিয়েছে। ওসব নির্দেশনায় প্রতিটি ব্যাংকে নেক্সট জেনারেশন ফায়ারওয়াল স্থাপন, এটিএম বুথে এ্যান্টিস্কিমিং ডিভাইস স্থাপন, পিন শিল্ড ডিভাইস বসানো, স্বয়ংক্রিয় এসএমএসের মাধ্যমে লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণ এবং নিয়মিত তথ্য যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। তাছাড়া সাইবার সিকিউরিটি ও ডাটাবেজের নিয়মিত ব্যাকআপ সংরক্ষণ নিশ্চিতের জন্যও প্রত্যেক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাইবার সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট টিম গঠন করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ন্যূনতম প্রতি কর্মদিবস শেষে সামগ্রিক লেজার, ডাটাবেজ এবং ব্যাকআপ সংগ্রহ করে গাইডলাইন অনুযায়ী তা যথাযথভাবে সংরক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, বৈশ্বিক সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকির তালিকায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। প্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান কম্পেয়ারটেক বিশ্বের ৭৫টি দেশের ওপর সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সাইবার ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, দেশের সাইবার জগতের বিভিন্ন বিভাগেই রয়েছে নিরাপত্তাসংক্রান্ত নানা দুর্বলতা। ম্যালওয়্যার দ্বারা মোবাইল ডিভাইস আক্রান্তের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। ব্যবহৃত মোবাইলের ১৭ দশমিক ১৮ শতাংশই বিভিন্ন ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। আর সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশের গড় নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে ৩৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আর ৩৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ ঝুঁকি নিয়ে প্রথম অবস্থানে আছে তাজিকিস্তান। তালিকার তিন নম্বরে চীনের অবস্থান। ঝুঁকিতে থাকা শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে তারপর রয়েছে ভিয়েতনাম, আলজিরিয়া, ভারত, ব্রাজিল, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান ও ইকুয়েডর। দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা গত বছরে ৩২ দশমিক ৪২ শতাংশ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। ম্যাকাফি সিকিউরিটির তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ৫ হাজার ৭৭৯টি ঝুঁকিপূর্ণ ইমেলের শিকার হয়েছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, ব্যাংকগুলোর সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা পরিপালনে বিভিন্ন সময় কঠোরভাবে বলা হয়েছে ও হচ্ছে। তারপরও মাঝেমধ্যে এ ধরনের সাইবার হামলার হুমকি আসায় ব্যাংকগুলো নিজে থেকেই সতর্কতা ও নিরাপত্তা জোরদার করেছে। সরকারের ডিজিটাল ক্রাইম এজেন্সিও সাইবার নিরাপত্তা ইস্যুতে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পূর্বাভাস পেলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করে আসছে। ওসব তৎপরতার কারণে ব্যাংকগুলো অনেক বেশি সচেতন হয়েছে এবং সতর্ক করার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হচ্ছে। ফলে সেক্ষেত্রে তেমন ভয়ভীতি নেই। তবে এ ব্যাপারে সব সময়ই সতর্ক থাকতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category