০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ | ই-পেপার

সার্ভে ও ফিটনেস ছাড়াই চলাচল করছে হাজার হাজার নৌযান

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের নৌপথে সার্ভে ও ফিটনেস ছাড়াই অবৈধভাবে চলাচল করছে হাজার হাজার নৌযান। ফলে প্রতিবছরই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নৌদুর্ঘটনা ও জানমালের ক্ষতির পরিমাণ। ওসব অবৈধ নৌযান চলাচলকে কোনোভাবেই রোখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সাগর ও নদীও তেলবাহীসহ জরাজীর্ণ বিপুল সংখ্যক নৌযান চলাচলের দৌরাত্ম্যে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। নৌপরিবহন অধিদফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নৌপথে হাজার হাজার অবৈধ নৌযান চলাচল রোধে এবং আইনী বাধ্যবাধকতা কার্যকর করতে নৌপরিবহন অধিদফতর ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। সংস্থাটি কোন কোন ক্ষেত্রে মেরিন ক্যাডেট, ইঞ্জিনচালিত বোটের চালক থেকে শুরু করে সনদধারীদের প্রয়োজনে আইনী রক্ষাকবচের আওতায় আনতে পারছে না। ফলে প্রতিবছরই নৌপথে দুর্ঘটনা এবং তার সঙ্গে জানমালের ক্ষতি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। দেশের নৌপথে বর্তমানে ২৭ হাজারেরও বেশি বিভিন্ন ধরনের নৌযান সার্ভে ও ফিটনেস ছাড়াই অবৈধভাবে অবাধে চলাচল করছে। তার মধ্যে রয়েছে যাত্রীবাহী, পণ্যবাহী নৌযান এবং কার্গো বোট, ফিশিং, ট্রলার, অয়েল ট্যাঙ্কার ইত্যাদি। অভ্যন্তরীণ নৌপথে ৩৫ হাজারেরও বেশি যে নৌযান চলাচল করছে তার মধ্যে প্রকৃত অর্থে সর্বোচ্চ ৮ হাজারের ফিটনেস সার্ভে হয়ে থাকে। অবশিষ্ট নৌযান অবৈধভাবে অতি সহজে বৈধতার সার্টিফিকেট বা সনদ পেয়ে যায়।
সূত্র জানায়, নৌবাণিজ্য দফতরে সব ধরনের জনবলের ছড়াছড়ি থাকলেও ইচ্ছে করেই জিঁইয়ে রাখা হয়েছে সার্ভেয়ার সঙ্কট। কারণ ওই কাজে অবৈধপথে অর্থ কামানোর অবারিত সুযোগ রয়েছে। বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের ভাগ-বাটোয়ারা সংশ্লিষ্টদের পকেটে চলে যায় বলে ওই কাজে গতি আনতে অনীহা। মূলত ওসব কারণে একদিকে যেমন হাজার হাজার ফিটনেসবিহীন এবং এর সঙ্গে লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা নৌযান চলাচল করতে পারছে। তেমনি দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে জানমালের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতিও ঢেকে আনছে। এমন অবস্থা চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গর এবং বিভিন্ন নৌপথের পাশাপাশি বে-ক্রসিংকে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি ও হুমকির মুখে রাখছে। সূত্র আরো জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরের আউটার এনকারেজ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে লাইটার জাহাজ চলাচল করে তাদের মূলত নদী এলাকার বাইরে আসার সরকারি অনুমোদন নেই। তাছাড়া ওই জাতীয় নৌযান নির্মাণ কাজেও বড় ধরনের ত্রুটি রয়েছে। প্রকৃত নেভাল আর্কিটেক্ট ছাড়াই নদী পথে চলাচলের বিপুল পরিমাণ নৌযান দেশীয় মিস্ত্রি দিয়ে তৈরি হয়ে যায়। আর ওসব নৌযান নদীপথ, সমুদ্র পথ সর্বত্রই চলাচল করে থাকে। ওসব নৌযানের মালিকরা কোন ফিটনেস বা সার্ভে ও ফিটনেসের ধার ধারে না। যখনই আইনী কোন বাধা চলে আসে তা তখনই আন্ডারহ্যান্ড অর্থের বিনিময়ে ঠিকঠাক করে ফেলা হয়।
এদিকে নৌবাণিজ্য দফতরে যেসব তেলবাহী জাহাজ উপকূলে ও নদীপথে চলাচল করে তার অধিকাংশই চলাচলের ক্ষেত্রে আইনের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। তার মধ্যে সরকারী সংস্থা বিআইডব্লিউটিসি’র ১১টি কোস্টাল ট্যাঙ্কার রয়েছে। যেগুলোর বয়স ৩০ বছরের বহু বেশি। অথচ আইনে রয়েছে ৩০ বছরের উর্ধে ওই জাতীয় নৌযান চলাচল করা যাবে না। বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত ২২০ তেলবাহী জাহাজের ৯০টির বয়সই ৩০ এর উর্ধে। ৫২টির বয়স ৫০ এবং ১২টির বয়স ৬০ এর উর্ধে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় পৃথিবীর সেরাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

সার্ভে ও ফিটনেস ছাড়াই চলাচল করছে হাজার হাজার নৌযান

আপডেট সময়ঃ ০৭:৪১:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের নৌপথে সার্ভে ও ফিটনেস ছাড়াই অবৈধভাবে চলাচল করছে হাজার হাজার নৌযান। ফলে প্রতিবছরই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নৌদুর্ঘটনা ও জানমালের ক্ষতির পরিমাণ। ওসব অবৈধ নৌযান চলাচলকে কোনোভাবেই রোখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সাগর ও নদীও তেলবাহীসহ জরাজীর্ণ বিপুল সংখ্যক নৌযান চলাচলের দৌরাত্ম্যে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। নৌপরিবহন অধিদফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নৌপথে হাজার হাজার অবৈধ নৌযান চলাচল রোধে এবং আইনী বাধ্যবাধকতা কার্যকর করতে নৌপরিবহন অধিদফতর ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। সংস্থাটি কোন কোন ক্ষেত্রে মেরিন ক্যাডেট, ইঞ্জিনচালিত বোটের চালক থেকে শুরু করে সনদধারীদের প্রয়োজনে আইনী রক্ষাকবচের আওতায় আনতে পারছে না। ফলে প্রতিবছরই নৌপথে দুর্ঘটনা এবং তার সঙ্গে জানমালের ক্ষতি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। দেশের নৌপথে বর্তমানে ২৭ হাজারেরও বেশি বিভিন্ন ধরনের নৌযান সার্ভে ও ফিটনেস ছাড়াই অবৈধভাবে অবাধে চলাচল করছে। তার মধ্যে রয়েছে যাত্রীবাহী, পণ্যবাহী নৌযান এবং কার্গো বোট, ফিশিং, ট্রলার, অয়েল ট্যাঙ্কার ইত্যাদি। অভ্যন্তরীণ নৌপথে ৩৫ হাজারেরও বেশি যে নৌযান চলাচল করছে তার মধ্যে প্রকৃত অর্থে সর্বোচ্চ ৮ হাজারের ফিটনেস সার্ভে হয়ে থাকে। অবশিষ্ট নৌযান অবৈধভাবে অতি সহজে বৈধতার সার্টিফিকেট বা সনদ পেয়ে যায়।
সূত্র জানায়, নৌবাণিজ্য দফতরে সব ধরনের জনবলের ছড়াছড়ি থাকলেও ইচ্ছে করেই জিঁইয়ে রাখা হয়েছে সার্ভেয়ার সঙ্কট। কারণ ওই কাজে অবৈধপথে অর্থ কামানোর অবারিত সুযোগ রয়েছে। বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের ভাগ-বাটোয়ারা সংশ্লিষ্টদের পকেটে চলে যায় বলে ওই কাজে গতি আনতে অনীহা। মূলত ওসব কারণে একদিকে যেমন হাজার হাজার ফিটনেসবিহীন এবং এর সঙ্গে লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা নৌযান চলাচল করতে পারছে। তেমনি দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে জানমালের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতিও ঢেকে আনছে। এমন অবস্থা চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গর এবং বিভিন্ন নৌপথের পাশাপাশি বে-ক্রসিংকে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি ও হুমকির মুখে রাখছে। সূত্র আরো জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরের আউটার এনকারেজ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে লাইটার জাহাজ চলাচল করে তাদের মূলত নদী এলাকার বাইরে আসার সরকারি অনুমোদন নেই। তাছাড়া ওই জাতীয় নৌযান নির্মাণ কাজেও বড় ধরনের ত্রুটি রয়েছে। প্রকৃত নেভাল আর্কিটেক্ট ছাড়াই নদী পথে চলাচলের বিপুল পরিমাণ নৌযান দেশীয় মিস্ত্রি দিয়ে তৈরি হয়ে যায়। আর ওসব নৌযান নদীপথ, সমুদ্র পথ সর্বত্রই চলাচল করে থাকে। ওসব নৌযানের মালিকরা কোন ফিটনেস বা সার্ভে ও ফিটনেসের ধার ধারে না। যখনই আইনী কোন বাধা চলে আসে তা তখনই আন্ডারহ্যান্ড অর্থের বিনিময়ে ঠিকঠাক করে ফেলা হয়।
এদিকে নৌবাণিজ্য দফতরে যেসব তেলবাহী জাহাজ উপকূলে ও নদীপথে চলাচল করে তার অধিকাংশই চলাচলের ক্ষেত্রে আইনের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। তার মধ্যে সরকারী সংস্থা বিআইডব্লিউটিসি’র ১১টি কোস্টাল ট্যাঙ্কার রয়েছে। যেগুলোর বয়স ৩০ বছরের বহু বেশি। অথচ আইনে রয়েছে ৩০ বছরের উর্ধে ওই জাতীয় নৌযান চলাচল করা যাবে না। বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত ২২০ তেলবাহী জাহাজের ৯০টির বয়সই ৩০ এর উর্ধে। ৫২টির বয়স ৫০ এবং ১২টির বয়স ৬০ এর উর্ধে।