• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ
শ্রমিকদের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে: স্পিকার ‘মাদক নিয়ে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স’ আইনগত সহায়তা দরিদ্র-অসহায় নাগরিকের অধিকার: আইনমন্ত্রী রোগীর প্রতি চিকিৎসকের অবহেলা সহ্য করা হবে না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী নৌকা-জাল মেরামতে ব্যস্ত, নদীতে নামার অপেক্ষায় জেলেরা বান্দরবানে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত হয়েছে সাংবাদিকবৃন্দদের সাথে মতবিনিময় উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুছ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কৃত্রিম বৃষ্টিতে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে ভিজলেন মেয়র আতিক বিএনপির ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই: কাদের

আশঙ্কাজনক হারে করোনা বাড়লেও বুস্টার ডোজে পিছিয়ে রয়েছে দেশ

Reporter Name / ১২৪ Time View
Update : রবিবার, ৩ জুলাই, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বর্তমানে দেশে আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। কিন্তু বুস্টার ডোজে পিছিয়ে রয়েছে দেশ। যদিও সরকার নানা উৎস থেকে করোনা টিকা সংগ্রহ করে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। কিন্তু বুস্টার ডোজ প্রয়োগে আশানুরূপ গতি নেই। এখনো দেশের লক্ষ্যমাত্রার ৪৬ শতাংশ জনগোষ্ঠী বুস্টার ডোজ টিকার বাইরেই রয়েছে। আর সরকারের হাতে পর্যাপ্ত টিকা থাকলেও দ্রুত সময়ে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে বুস্টার ডোজ দেয়ার ব্যাপারে এখনো আশানুরূপ দৃশমান কার্যকলাপ নেই। করোনা নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কারিগরি কমিটি ও বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা ঠেকাতে স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি দ্রুত সময়ে ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে বুস্টার ডোজের আওতায় আনতে হবে। অন্য দেশ এ পদ্ধতিতেই জোর দিচ্ছে বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে সরকার আবারো ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতি নিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে ৬ দফা আদেশ বাস্তবায়নের চিঠি দিয়েছে। দেশে এখন ১৫ শতাংশের ওপরে করোনা সংক্রমণ। আর যেভাবে সংক্রমণের হার বাড়ছে, তাতে আর কয়েক দিনেই দেশে করোনার চতুর্থ ঢেউ শুরু হবে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তারপরও টিকার বুস্টার ডোজের ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে কোনো রকম তোড়জোড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত দেশে ১২ কোটি ৯ লাখের বেশি মানুষ করোনা টিকার এক ডোজ পেয়েছে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৭৫.৭৫ শতাংশ। আর টিকার দুই ডোজ পাওয়া নাগরিকের সংখ্যা ১১ কোটি ৯৩ লাখের বেশি, যা মোট জনগোষ্ঠীর ৭০.০৫ শতাংশ। বুস্টার ডোজ দেয়া হয়েছে ২ কোটি ৮৯ লাখ ২৩ হাজার ১৬২টি, যা মোট জনগোষ্ঠীর২৪.২৪ শতাংশ। ওই হিসাবে এখনো ৪৬ শতাংশ মানুষ বুস্টার ডোজ পায়নি।
সূত্র জানায়, গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি সরকার সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে। ওই সময় জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনায় তা বদল করে এখন ৭০ শতাংশ করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ ৩ মাসেরও বেশি সময় করোনা পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক থাকায় টিকা নেয়া ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবার মধ্যে অনীহা দেখা দেয়। সম্প্রতি টিকার বুস্টার ডোজ ক্যাম্পেইনেও তার প্রভাব পড়েছে। ৭ দিনে দেড় কোটি টিকা দেয়ার পরিকল্পনা থাকলেও মাত্র ৯৬ লাখ মানুষকে বুস্টার ডোজের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। করোনার টিকা নিলে ৬ থেকে ৯ মাস পর্যন্ত কার্যকারিতা থাকে। সেক্ষেত্রে অনেকেরই টিকা নেয়ায় অ্যান্টিবডি হয়ে আবার চলেও গেছে। সেজন্যই বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে সংক্রমণ প্রতিরোধে দ্রুত সময়ে বুস্টার ডোজ নিশ্চিতের তাগিদ দিচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের মতো বুস্টার ডোজ টিকা প্রয়োগে সরকারের তেমন কোনো তৎপরতা নেই। যে কারণে দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রয়োগে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হলেও বুস্টার ডোজে অনেক পিছিয়ে রয়েছে দেশ। সেজন্য বড় ক্যাম্পেইন হাতে নিলে ওই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। তবে এখন থেকেই ওই বিষয়ে যথাযথ পরিকল্পনা নিতে হবে।
এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো কোনো দেশ তৃতীয় ডোজ শেষ করে চতুর্থ ডোজ দেয়া শুরু করেছে। তবে এ বিষয়ে এদেশে তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই। যুক্তরাজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থাও এমনই। কিন্তু এদেশ এখনো বুস্টার ডোজ প্রয়োগে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। যে কারণে সংক্রমণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কয়েক দিনের মধ্যে হাসপাতালে রোগী ভতির হার বাড়বে। যদিও মনে করা হচ্ছে, এবারের সংক্রমণে হাসপাতালে ভর্তির হার কিছুটা কম হবে। সেজন্য একদিকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, অন্যদিকে বুস্টার ডোজ প্রয়োগে জোর দিতে হবে। যদি দ্রুততম সময়ে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে টিকা প্রয়োগ করা সম্ভব না হয়, তাহলে বেশি বয়সী ও যারা অন্য রোগে ভুগছেন, তাদের আগে বুস্টার ডোজ নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যদিকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. এ এস এম আলমগীর দাবি করেন, অন্য দেশের চেয়ে বুস্টার ডোজ প্রয়োগে এদেশ পিছিয়ে নেই। ৬ মাসের মধ্যে ২৩ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে বুস্টার ডোজ প্রয়োগ সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি একটি বড় ক্যাম্পেইন হয়েছে। সেখানেও ভালো সাড়া পড়েছিল। আগামী মাসে আরেকটি ক্যাম্পেইন করা হবে। যার মাধ্যমে ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে ওই টিকার আওতায় আনা সম্ভব হবে।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব শামসুল হক জানান, বুস্টার ডোজ নিয়ে এখনই বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি বড় ক্যাম্পেইন করেছে। এখন নতুন করে আরো একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। কিছুদিন পর এ বিষয়ে জানানো হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category