• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ

ইমো হ্যাক চক্রের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার

Reporter Name / ১০০ Time View
Update : সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
হুট করেই কোনো প্রবাসীর ইমো নম্বর থেকে দেশে তার ঘনিষ্ঠজনের কাছে বার্তা আসে। সেখানে নানা সমস্যার কথা জানিয়ে চাওয়া হয় টাকা। দেশে থাকা ঘনিষ্ঠজন বা পরিবারের সদস্যরা কোনো কিছু চিন্তা না করেই মেসেজ পাওয়া বিকাশ নম্বর বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লাখ লাখ টাকা পাঠিয়ে দিতেন। এমন ইমো হ্যাকার চক্রের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগ। আজ সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, টাকার বিনিময়ে তারা ট্রেনিং নিয়েছে। গত দুই তিন মাসে প্রবাসীদের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. আবদুল মমিন (১৮), মো. রবিউল ইসলাম ওরফে রবি (১৮), মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে শহিদ (১৯), মো. সাব্বির (১৮), মো. চাঁন মোল্লা (৩৫) ও মো. আরিফুল ইসলাম (২৬)। এসময় তাদের কাছে থেকে ১২টি মোবাইলফোন, হ্যাকিং কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের ১৯টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়। হারুন অর রশীদ বলেন, ইমো নম্বরটি হ্যাক হয়েছিল এবং প্রবাসী সেই ব্যক্তির অসুস্থতা বা নানা সমস্যার কথা বলে হ্যাকাররা স্বজনদের থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। দেশে এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এমন ইমো হ্যাকার চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগ। তিনি বলেন, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের অধিকাংশের বাড়ি রাজশাহী ও নওগাঁ জেলায়। গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, গ্রেপ্তাররা অল্প শিক্ষিত হলেও তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইমো হ্যাক করায় তারা ছিলেন দক্ষ। সর্বোচ্চ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা এই হ্যাকাররা ইমো হ্যাক করার প্রশিক্ষণ নিতো মাদারীপুরের একটি চক্রের থেকে। বিনিময়ে তাদের দিতে হতো মোটা অঙ্কের টাকা। গত ৯ অক্টোবর রাতে নুরুল ইসলামের বড় ভাই কাতার প্রবাসী কাশেমের ইমো আইডি থেকে একটি মেসেজ আসে। যেখানে বলা হয়, আমার টাকার প্রয়োজন, আমি বিকাশ নম্বর পাঠাইলে টাকা দিও। পরে গত ১০ অক্টোবর দুপুরে নরুল ইসলামের ইমোতে আরও একটি মেসেজ আসে- আজকে বিকাশের রেট কত ২৫ হাজার টাকা পাঠানো যাবে। এরপর আরও কয়েকটি মেসেজ ও ভয়েজ মেসেজ আসে। ভিকটিম নুরুল ইসলাম সেই মেসেজের ওপর ভিত্তি করে হ্যাকারদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে তিনবারে (২৫ হাজার+২৫ হাজার+১৫ হাজার) মোট ৬৫ হাজার টাকা পাঠান। গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান বলেন, পরবর্তীসময়ে নুরুল তার বড় ভাইয়ের ইমো আইডি বন্ধ পেলে তার ভাবির ইমো আইডি থেকে বড় ভাই মো. আবুল কাশেমকে ৬৫ হাজার টাকা পাঠানোর কথা জানায়। প্রতিউত্তরে তার বড় ভাই কাতার প্রবাসী কাশেম বলেন, তার ইমো আইডি হ্যাক হয়েছে, আইডিটি তার নিয়ন্ত্রণে নেই। পরে ভুক্তভোগী বুঝতে পারেন সুকৌশলে তার কাছ থেকে হ্যাকারা টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। একই কৌশল অবলম্বন করে গ্রেপ্তার চক্রটি গত তিন মাসে পঞ্চাশ লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা প্রবাসীদের স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনদের কাছে থেকে। তিনি আরও বলেন, ইমো হ্যাক করার জন্য যারা প্রশিক্ষণ দেয় তাদের কয়েকজনকে আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমাদের টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রুতই তাদের আটক করা হবে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে ডিএমপি’র ওয়ারী থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ইমো হ্যাকের জন্য মাদারীপুরে কোনো ট্রেনিং সেন্টারের সন্ধান পাওয়া গেছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে হারুন বলেন, এমন কোনো ট্রেনিং সেন্টারের খোঁজ আমরা পায়নি। এ বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category