• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৩:১০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
সফলতার সঙ্গে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছি: মেয়র তাপস ঢাকার নামকরা স্কুলগুলো ভারপ্রাপ্ত প্রধানের অধীনে সুনাম হারাচ্ছে ওএমএস বিতরণে গাফিলতি হলে জেল-জরিমানার হুঁশিয়ারি খাদ্যমন্ত্রীর শিল্প গড়ে উঠুক, বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে: প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে রেলের টার্ন টেবিল নির্মান রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে এনবিআর নারী স্পিকারদের সামিট অভিজ্ঞতা বিনিময়ের এক অনবদ্য প্লাটফর্ম: স্পিকার জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাবে খাদ্যে ফরমালিন মেশানো বন্ধ হচ্ছে না উচ্চ রক্তচাপ বিষয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

এরশাদের ট্রাস্টের গাড়ি আত্মসাৎ, ফেরত পেতে আদালতের দ্বারস্থ বিদিশা

Reporter Name / ৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ট্রাস্টের দুটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করতেন তার স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক এবং ছেলে শাহাতা জারাব এরশাদ (এরিক)। এই ট্রাস্টের দুটি গাড়ি এরিকের ব্যক্তিগত সহকারী ও বিদিশা সিদ্দিকের গাড়িচালক মোর্শেদ আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় চালক মোর্শেদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন বিদিশা। মামলার পর মোর্শেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর পুলিশ আত্মসাৎ হওয়া দুটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া মাইক্রোবাস দুটি নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেছেন বিদিশা সিদ্দিক। মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, শাহাতা জারাব এরশাদ এরিকের দেখাশোনা করতেন আসামি মোর্শেদ মঞ্জুর রুবেল। মাঝে-মধ্যে তিনি বিদিশা সিদ্দিকের গাড়িও চালাতেন। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের ২৮ বা ২৯ তারিখে বিদিশার মালিকানাধীন ৯০ লাখ টাকা দামের গাড়ি ওয়ার্কশপে মিস্ত্রি দেখানোর কথা বলে প্রেসিডেন্ট পার্ক থেকে নিয়ে যান তিনি। গাড়িটি বাসায় পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে কেন, জানতে চাইলে মোর্শেদ মঞ্জুর তাকে বিভিন্ন রকমের অজুহাত দেখিয়ে গাড়ি দিতে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। গাড়ি কোথায় আছে জিজ্ঞেস করলে কখনো তার বসুন্ধরার বাসার নিচে রেখেছেন, কোনো সময় উত্তরায় রেখেছেন বলে জানান। মামলায় বিদিশা সম্পূরক এজাহার দায়ের করেন। তিনি সম্পূরক এজাহারে উল্লেখ করেন, মোর্শেদ মঞ্জুর (রুবেল) আমার কর্মচারী থাকা অবস্থায় গত আগস্ট/২০২৩ তারিখ থেকে বিভিন্ন তারিখ ও সময় আমার ঠিকানার বাসা থেকে আমার ১৬টি চেক, আমার স্বাক্ষরিত বিভিন্ন ডকুমেন্ট ও আমার স্বামী প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ট্রাস্টের মালিকানাধীন দুটি মাইক্রোবাস তার নিকট রয়েছে। তিনি আমাকে ও আমার পরিবারকে অর্থনৈতিক ক্ষতি ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে আমার কর্মচারী থাকাকালীন আমার বিশ্বাস অর্জন করে আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার বিশ্বাস ভঙ্গ করে ১৬টি চেক, আমার স্বাক্ষরিত বিভিন্ন ডকুমেন্ট ও ২টি গাড়ি আত্মসাৎ করেছেন। উল্লিখিত বিষয়ে সম্পূরক এজাহার গ্রহণপূর্বক পূর্ববর্তী এজাহারের সঙ্গে সংযুক্ত করতে মর্জি হয়। মামলার এজহারে বিদিশা আরও উল্লেখ করেন, বিষয়টি বিদিশার সন্দেহজনক মনে হলে ২৪ মার্চ চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে গাড়ি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য বললে তখন তিনি গাড়ি নিয়ে কুমিল্লার কান্দিরপাড় নামক স্থানে রয়েছেন বলে জানান। তার এমন অসংলগ্ন কথাবার্তায় বিদিশা ধারণা করেন, তিনি তার গাড়ি আত্মসাৎ করেছেন। পরে গাড়ির বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে বিদিশা ও তার ছেলের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি সাধন করাসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন মোর্শেদ মঞ্জুর। মাইক্রোবাস ও চেক আত্মসাতের অভিযোগে ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ রাজধানীর গুলশান থানায় বিদিশা সিদ্দিক বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় মোর্শেদকে। মামলার পর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর গত ২২ এপ্রিল তাকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক হাফিজুর রহমান। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২৪ এপ্রিল দুই দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রিমান্ডে নেওয়ার পর চালক মোর্শেদ আত্মসাৎ করা মাইক্রোবাস ও চেকের বিষয় তথ্য দেন। তার দেওয়া তথ্যমতে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই হাফিজুর রহমান দুটি মাইক্রোবাস ও চেক উদ্ধার করেন। এরপর তিনি মূল জব্দতালিকায় আলামতগুলো ডকেট হিসেবে সংযুক্ত করার জন্য আদালতে আবেদন করেন। আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, মামলার এজাহারনামীয় আসামির দেওয়া তথ্যমতে, অত্র মামলা সংক্রান্তে আত্মসাৎকৃত আলামত গত ২৩ এপ্রিল বাদীনির প্রয়াত স্বামী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ট্রাস্টের মালিকানাধীন একটি সাদা রঙের নোহা, সিলভার রঙের সুপার জিএল, বাদীনির বিভিন্ন ব্যাংকের মোট ১৬টি চেকের পাতা এবং বাদীনির স্বাক্ষরিত বিভিন্ন ডকুমেন্ট উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে জব্দ তালিকামূলে জব্দ করা হয়। গত ২ মে উদ্ধার হওয়া গাড়ি দুটি ফেরত পাওয়ার জন্য একটি আবেদন করেছেন বিদিশা সিদ্দিক। আদালত বিআরটিএকে দশদিনের মধ্যে মালিকানা যাচাইপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। এদিন বিদিশা সিদ্দিক ও এরিক আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন। আবেদনে বলা হয়েছে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মালিকানাধীন দুটি গাড়ি বিদিশা সিদ্দিক প্রাপ্ত হয়ে ভোগ ও ব্যবহার করে আসছেন। গাড়ি দুটি আসামির কাছ থেকে উদ্ধার করে জব্দ তালিকামূলে জব্দ করা হয়। যেহেতু গাড়ি ২টি মূল্যবান, তাই থানা হেফাজতে অযতেœ অবহেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই বিদিশাকে গাড়ি দুটি দরখাস্তকারীর জিম্মায় প্রদানের আদেশ প্রদান করা একান্ত আবশ্যক। বিদিশা সিদ্দিকের পক্ষে আবেদনটি করেন তার আইনজীবী আতিকুর রহমান। এ বিষয়ে গুলশান থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই শাহ আলম বলেন, বিদিশা সিদ্দিক জব্দ হওয়া গাড়ি দুটি নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেছেন। আদালত বিআরটিএকে মালিকানা যাচাইপূর্বক দশদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদী বিদিশা সিদ্দিক বলেন, আমার স্বামী প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ট্রাস্টের মালিকানাধীন দুটি গাড়ি ও আমার ১৬টি চেক আত্মসাৎ করায় চালক মোর্শেদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমি ন্যায়বিচার চাই। বিদিশার আইনজীবী আতিকুর রহমান বলেন, মামলার পর গ্রেপ্তার হয়ে চালক মোর্শেদ কারাগারে আটক রয়েছেন। তিনি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ট্রাস্টের মালিকানাধীন দুটি গাড়ি আত্মসাৎ করেছেন। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই হাফিজুর রহমান বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন।আদালতে বাদী গাড়ি জিম্মার আবেদন করেছেন। আদালত বিআরটিএকে যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।আমরা প্রতিবেদনের জন্য আবেদন করেছি বিআরটিএতে। প্রতিবেদন দিলে আদালতে দাখিল করবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category