• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:১৫ পূর্বাহ্ন

দুই বছরের দ- ২৭ বছর পর বাতিল, রায়ের কপি যাচ্ছে সব আদালতে

Reporter Name / ১৮ Time View
Update : রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :
তিন দশক আগে নীলফামারীতে গরু চুরির মামলায় দ-িত এক আসামিকে খালাস দিয়েছে হাই কোর্ট। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করে। ১২ পৃষ্ঠার সেই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে গত শনিবার। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, তোফাজ্জল হোসেন নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, গ্রহণ ও তদন্তে ‘ব্যাপক অবহেলা, অনিয়ম ও অন্যায়’ হয়েছে। বিচারিক আদালতেরও ‘চরম অবহেলা ও অনিয়ম’ হয়েছে। হাই কোর্টের এই রায় ও আদেশের অনুলিপি অবগতি ও পর্যালোচনার জন্য দেশের সব অধস্তন আদালতের সব বিচারককে ই-মেইলে পাঠাতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এছাড়া বাংলাদেশের প্রত্যেক থানার সব এজাহার গ্রহণকারী ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটেও (জেএটিআই) এ রায় ও আদেশের অনুলিপি পাঠাতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার নথি থেকে জানা যায়, ১৯৯৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি নীলফামারী সদর উপজেলার ধোবাডাঙ্গা গ্রামের মানিক চন্দ্র রায় তাদের পাঁচটি গরু চুরির অভিযোগে সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় সাইফুল ইসলাম ও তোফাজ্জাল হোসেনকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দবির উদ্দিন তদন্ত শেষে সাইফুল ইসলাম, তোফাজ্জাল হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন নামে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন নীলফামারীর হাকিম আদালত আসামি সাইফুল ইসলাম ও দেলোয়ার হোসেনকে খালাস দেন এবং আসামি তোফাজ্জল হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদ- ও ২০০ টাকা জরিমানা করেন। ২০০৬ সালের ৩১ জানুয়ারি নীলফামারীর দায়রা জজ আদালত বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে ফৌজদারি রিভিশন আবেদন করেন তোফাজ্জল হোসেন। শুনানি নিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট অধস্তন উভয় আদালতের রায় ও আদেশ বাতিল করে। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, “নীলফামারীর প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও দায়রা জজ আদালত ‘গতানুগতিকভাবে’ রায় দিয়েছে। সাক্ষ্য ও নথি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণে উভয় আদালত ‘চরম অবহেলা ও অনিয়ম করেছেন, যা বিচারক সুলভ নয়’। “নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে যার গরু চুরি হয়েছে তার থেকে পুলিশই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে, এটা খুবই দুঃখজনক।” পর্যবেক্ষণে বলা হয়, “নীলফামারীর অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের ১৯৯৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারির আদেশে ২৫ ফেব্রুয়ারি দায়ের করা মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে আসামি গ্রেপ্তার বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই। কিন্তু ২৮ ফেব্রুয়ারির আদেশে দেখা যায়, ২৭ ফেব্রুয়ারি এ মামলার আসামিদের ৫৪ ধারায় পুনঃগ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়।” ২৫ ফেব্রুয়ারি আসামিদের গরুসহ থানায় হাজির করা হলে ২৭ ফেব্রুয়ারি কীভাবে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়, হাই কোর্টের পর্যব্ক্ষেণে সেই প্রশ্ন করা হয়েছে। “এতে স্পষ্ট যে, আসামির বিরুদ্ধে ১৯৯৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দায়ের করা এজাহার মিথ্যা। আসামিকে ফাঁসানোর জন্য এজাহারকারী মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category