• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন

দেশে পোস্ট ও লং কভিড রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

Reporter Name / ৪১৫ Time View
Update : রবিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশে পোস্ট ও লং কভিড রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সেজন্য হাসপাতালের পাশাপাশি মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞদের চেম্বারেও বাড়ছে লং কভিড ও পোস্ট কভিড রোগীর ভিড়। কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের চিকিৎসকরা এখন ওই ধরনের রোগীদের প্রথমেই বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠাচ্ছে। লং কভিড হিসেবে রোগীর মানসিক ও স্নায়ুতান্ত্রিক সমস্যাও বাড়ছে। অনেকেই ভুগছে ক্ষণে ক্ষণে মেমোরি লসের সমস্যায়ও। পাশাপাশি শারীরিক দুর্বলতা, অল্পতেই ঠা-া-সর্দি জ্বরে ভুগছে কভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষ। তাছাড়া লং কভিডের প্রভাবে অনেকেরই ঘুমের সমস্যা প্রকট হয়ে উঠছে। কিছুক্ষণের জন্য মনে না থাকা, অল্পতেই ঠা-া-হাঁচি-কাশি, শরীর ব্যথা, পায়ে ব্যথার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। আর যাদের ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, হার্টের রোগ ছিল তাদের সেগুলো আবার মাঝে-মধ্যেই দেখা দিচ্ছে। ফলে তাদেরও সব সময়ের জন্য নিজ নিজ ক্ষেত্রের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা দরকার হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি তাদের নিয়মিত চেকআপ ও ফলোআপও এখন জরুরি। স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে পুনরায় কভিডে আক্রান্ত হওয়ার হারও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলোতে লং কভিড রোগীদের চিকিৎসাব্যবস্থা সাজানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কোনো কোনো হাসপাতালে পোস্ট কভিড ইউনিট চালু করা হয়েছে। আর পুরুষের চেয়ে নারীরাই বেশি পোস্ট কভিডে ভুগছে। বর্তমানে করোনায় আক্রান্তরা সুস্থ হওয়ার পরও অনেকেই পোস্ট কভিডে আক্রান্ত হচ্ছে। সেজন্যই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে আমাদের হাসপাতালে আলাদা করে পোস্ট কভিড ইউনিট চালু করা হয়েছে। সেখানে রোগীদের নিয়মিত চিকিৎসাও চলছে। অনেকে ভর্তি হয়েই চিকিৎসা নিচ্ছে।
সূত্র জানায়, অনেক রোগীই করোনামুক্ত হওয়ার পর সিটি স্ক্যান করায় না বা তার ফুসফুসের পরিস্থিতি কেমন আছে তা না দেখেই কেবল ওষুধ ব্যবহার করতে থাকে। বিভিন্ন কারণে অনেক চিকিৎসকও রোগীকে হাসপাতাল থেকে বিদায় দেয়ার সময় সিটি স্ক্যান করেন না। কিন্তু করোনা রোগীর ক্ষেত্রে তা জরুরি। কারণ ওষুধে সাময়িক স্বস্তিবোধ হলেও বা উপসর্গ কমে গেলেও ভেতরে সংক্রমণ সুপ্ত অবস্থায় কিছুদিন থেকে করোনা আগের চেহারায় আবার জেগে উঠতে পারে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট পোস্ট কভিড ও লং কভিডের রোগীদের তথ্য পাচ্ছে। ক্রমান্বয়ে তা বাড়ছেও। আর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই বাংলাদেশেও সেক্ষেত্রে নারী রোগীদের সমস্যা বেশি হচ্ছে। প্রথম দফায় কভিডমুক্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার পর অনেকেরই ১৫ দিন থেকে ৩ মাসের মধ্যে পোস্ট কভিডের প্রভাবে আগের মতোই উপসর্গ দেখা দেয়। কারো শ্বাসের সমস্যা, কারো জ্বর-সর্দি-কাশি দেখা দেয়। ফলে তাদের অবশ্যই দ্রুত সময়ের মধ্যে কাছের হাসপাতাল বা মেডিসিনের চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। ৬ থেকে ৯ মাস পর্যন্ত অনেকেরই এমন অবস্থা চলতে পারে। তার পর ধীরে ধীরে সমস্যাগুলো ঠিক হয়ে আসতে পারে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কাজী সাইফুদ্দিন বেন্নুর জানান, প্রতিদিনই পোস্ট কভিডের রোগী পাওয়া যাচ্ছে এবং তা বাড়ছে। সেক্ষেত্রে অনেকেরই আগের মতো ফুসফুসের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এর যথাযথ কারণ এখনো বলা যায় না। ধারণা করা যায় কভিড যেভাবে আক্রান্তদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সংক্রমিত করে, তাতে প্রথম দফায় সুস্থ হওয়ার পরও অনেকের ক্ষেত্রে অন্তর্গত ক্ষতির প্রভাব থেকেই যায় এবং হয়তো দীর্ঘদিন তা থেকে যাবে। তার মধ্যে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসাপেক্ষে কারো উপসর্গ বেশি, কারো কম দেখা দিতে পারে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া জানান, কভিড রোগীদের পাশাপাশি নন-কভিড রোগীদেরও সেবা শুরুর জন্য সব কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালকে চিঠি দেয়া হয়েছে এবং তা করাও হচ্ছে। যেহেতু পোস্ট কভিড রোগীরা সাধারণত নন-কভিড হিসেবেই বিবেচিত হয় তাদের কভিড টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ থাকার কারণে। সেজন্য তারা যাতে কোনো হাসপাতালে গিয়ে সেবাবঞ্চিত না হয় সেদিকে নজর রেখেই তা করা হয়েছে। তাছাড়া কোনো কোনো হাসপাতালে আলাদা পোস্ট কভিড ইউনিটও চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনে অন্যগুলোতেও করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category