• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কৃত্রিম বৃষ্টিতে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে ভিজলেন মেয়র আতিক বিএনপির ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই: কাদের পুঁজিবাজারে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩ বিদেশি ঋণের বেশিরভাগই সুদাসল পরিশোধে ব্যয় হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সুসংহত করতে হবে: ধর্মমন্ত্রী ঢাকার ১০ থানায় কিশোর গ্যাং বেশি: ডিএমপি কমিশনার দিনে ১০-১২ বার লোডশেডিং, গরমে অতিষ্ঠ নীলফামারীর মানুষ মালয়েশিয়া উচ্চশিক্ষার জন্য ভালো গন্তব্য: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

দেশেই রেলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরির উদ্যোগ

Reporter Name / ৩৬২ Time View
Update : শনিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশেই রেলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ওই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং আগামী মাসে তা চূড়ান্ত করা হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৮৭ শতাংশ ইঞ্জিন ও ৭৭ শতাংশ কোচের আয়ুষ্কাল শেষ। দিন দিন ওই সংখ্যা আরো বাড়ছে। মূলত চলমান অথবা আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে যাওয়া ইঞ্জিন-কোচ মেরামতে আমদানিনির্ভর যন্ত্রাংশের বিকল্প উৎস সৃষ্টির লক্ষ্যে নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। আর রেলওয়ের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে বলে রেলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। রেলপথ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা- চলছে। এমনকি ইলেকট্রিক-বুলেট ট্রেন চালুর পরিকল্পনাও নেয়া হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ ট্রেনেরই ইঞ্জিন-কোচ বয়সের ভারে ন্যুব্জ। আর ওসব সচল রাখতে সব ধরনের যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হচ্ছে। কিন্তু কোটি কোটি টাকার যন্ত্রাংশ কেনায় টেন্ডার আহ্বান ও মালামাল গ্রহণ থেকে নানা পর্যায়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এমন অবস্থায় দেশেই বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরির উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, রেলের আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে যাওয়া অথবা নতুন ইঞ্জিন-কোচ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়মিত বিপুল পরিমাণ যন্ত্রাংশের দরকার হয়। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ মজুত রাখতে হয়। আবার ইঞ্জিন সচল রাখতেও বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। তাছাড়া অধিকাংশ ইঞ্জিন যন্ত্রাংশের কোনো ড্রয়িং-স্পেসিফিকেশন না থাকায় পার্টস নম্বর ও বিবরণের ভিত্তিতে সেগুলো চিহ্নিত করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে পরনির্ভরশীলতা কমাতে অতীতে বিসিক নীতিমালার আওতায় এবং রেলওয়ের মেকানিক্যাল শাখা থেকে স্থানীয় শিল্প প্রস্তুতকারকদের সাময়িকভাবে যন্ত্রাংশ তৈরির অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু যথাযথ মনিটরিং ও গাইডলাইন না থাকায় তা আলোর মুখ দেখেনি। তাছাড়া কোনো শিল্পোদ্যোক্তাও এগিয়ে আসেনি। সেজন্যই শিল্পোদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ নিশ্চয়তা ও গুণগতমানের যন্ত্রাংশ ক্রয়ের নিশ্চয়তা রেখে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, নীতিমালা চূড়ান্ত হলে রেলওয়ের নিজস্ব কারখানায় যন্ত্রাংশ তৈরি করা যাবে। একইসঙ্গে শিল্পোদ্যোক্তারা বিভিন্ন দেশ থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করে রেলওয়েতে সরবরাহ করতে পারবে। বর্তমানে আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে যাওয়া ইঞ্জিন-কোচ রেলে বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তার ওপর ২০১৩ সালে চীন থেকে আনা ডেমুর আয়ুষ্কাল শেষ না হতেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ৬৫৪ কোটি টাকার ২০টি ডেমু ট্রেনের মধ্যে বর্তমানে মাত্র ৩টি সচল আছে। ৩৫ বছর আয়ুষ্কাল থাকলেও মাত্র এক বছর যেতে না যেতেই নষ্ট হতে থাকে আধুনিক ডেমু ট্রেন। অচল হয়েপড়া ডেমু ট্রেনগুলো মেরামত করতে হলে শুধু চীন থেকেই যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করতে হবে। যার দাম বিশ্ব বাজারের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি। আর কেনার পর মেরামত করতে প্রায় সমপরিমাণ টাকা লাগবে। কিন্তু নীতিমালা চূড়ান্ত হলে ডেমুর অধিকাংশ যন্ত্রাংশ দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্টদের মতে, নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার পর রেলে আমূল পরিবর্তন আসবে। একই সঙ্গে দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তারা উপকৃত হবে। আর দেশের অর্থ দেশেই থাকবে। কারণ একটি রেলইঞ্জিনে ২৫ হাজার ধরনের যন্ত্রাংশের প্রয়োজন হয়। আর তার ৯৫ শতাংশ যন্ত্রাংশই বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করতে হয়। তাতে রেলের কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে সময় মতো যন্ত্রাংশ কেনাও সম্ভব হয় না। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যন্ত্রাংশ না পাওয়ায় ইঞ্জিনও যথাযথ মেরামত হয় না। ফলে ট্রেন পরিচালনায় হিমশিম খেতে হয়। এখন নীতিমালা চূড়ান্তের মাধ্যমে রেল কর্তৃপক্ষ ওসব সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে রেলপথ সচিব সেলিম রেজা জানান, নীতিমালা চূড়ান্ত হলে দেশেই নতুন কোচ তৈরি করা হবে। ইঞ্জিন মেরামত করতে আর আমদানি নির্ভর যন্ত্রাংশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। যন্ত্রাংশ তৈরি-উৎপাদনে দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের পাশে থাকবে রেলওয়ে।
এ প্রসঙ্গে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ রেল ইঞ্জিন-কোচসহ যন্ত্রাংশ তৈরি করছে। রেলের যন্ত্রাংশ ক্রয়ে দেশ প্রায় শতভাগ আমদানি নির্ভর। তাছাড়া যথাযথ সময়ে যন্ত্রাংশ ক্রয় করাও সম্ভব হয় না। যে কারণে অতি প্রয়োজনীয় ইঞ্জিন-কোচ সংস্কারে বিলম্ব ঘটে। তাছাড়া মেরামতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষাও করতে হয়। আবার কিছু যন্ত্রাংশ বিশ্ব বাজারেও পাওয়া যাচ্ছে না। তাতে বহুগুণ বেশি দামে যন্ত্রাংশ কিনতে হয়। ফলে ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে লোকসানও বাড়ে। নীতিমালা চূড়ান্ত হলে অধিকাংশ যন্ত্রাংশ স্থানীয় কোম্পানিগুলো তৈরি করবে। তাতে স্বল্প দামে যন্ত্রাংশ মিলবে, পাশাপাশি স্থানীয় শিল্পেরও বিকাশ ঘটবে। আর দেশের টাকা দেশেই থাকবে। দেশেই রেলের কোচ-ইঞ্জিন তৈরি করা সম্ভব হবে।

ন্ত্রাংশ তৈরির উদ্যোগ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category