১১:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫ | ই-পেপার

চালের দাম নিয়ে ব্যবসায়ীদের দুষছেন খাদ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক :
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশে চালের অভাব নেই। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হয়। কেউ কৃত্রিম সংকট করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, যখন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিটিং করা হয় তখন চালের দাম কমে। তারপর আবার বাড়ে। বাড়ার সময় ৫ টাকা বাড়লেও কমার সময় সেভাবে কমে না। ব্যবসায়ীরা এক টাকা কমিয়ে বলে চালের দাম কমেছে। চাল ব্যবসায়ীদের এ প্রবণতা ত্যাগ করা উচিত। আজ মঙ্গলবার খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন রমজান মাসে চালের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষ হতে পারে, বিশ্ব ব্যাংকের এমন ঘোষণার পর অনেকেই অন্যায্যভাবে চালের দাম বাড়িয়েছেন, মজুত করেছেন। সেটা নিয়ন্ত্রণে ওএমএস বাজারে ছাড়তে হয়েছে। সরকার আমদানি করেছিল বলে বিতরণ করতে পেরেছে। তিনি বলেন, সরকার বিভিন্নভাবে বাজারে সরবরাহ ও দাম মনিটরিং করে। শুধু রমজান মাসেই নয় এ মনিটরিং সারা বছর চলে এবং চলবে। লাইসেন্স ছাড়া কেউ দেশে ধান চালের ব্যবসা করতে পারবে না। এটা করতে হলে তার ফুড গ্রেইন লাইসেন্স থাকতে হবে। আড়তদারদেরও এ লাইসেন্স থাকতে হবে। এটা নিয়মিত মনিটরিং হচ্ছে। ১৫ দিন পর পর কতটুকু তিনি ক্রয় করেছেন, কতটুকু বিক্রয় করেছেন তার রিটার্ন দাখিল করতে হবে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কৃষিতে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। এক সময়ের মঙ্গা পীড়িত এলাকা এখন খাদ্যে উদ্বৃত্ত। অনেকেই প্রশ্ন করেন উদ্বৃত্ত হলে আমদানি করেন কেন? আমদানির পথ খোলা থাকলে অবৈধ মজুতকারীরা কারসাজি করতে পারে না। নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোধ বরণ সাহা চন্দন বলেন, ধান চালের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এমন লোকেরা অবৈধ মজুত গড়ে তোলেন। তাদের অতি মুনাফা লাভের আশা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। তিনি বলেন, চাল আমদানির কোন প্রয়োজন নেই। দেশে যে ধান উৎপাদন হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় উদ্বৃত্ত। চাল ব্যবসায়ী কে এম লায়েক আলী বলেন, সরকারি ধান চাল সংগ্রহকালে দাম নির্ধারণ করে দিলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ যৌক্তিক দাম নির্ধারণ না করায় সরকারি গুদামে লস দিয়ে চাল দিতে হয়। বাবু বাজার পাইকারি চাল ব্যাবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের বাজার ডিমান্ড ও সাপ্লাই এর ওপর নির্ভর করে। আমদানি চালু থাকলে বাজার ঠিক থাকে। ধানের বাজার স্থিতিশীল রাখতে পারলে চালের বাজারও স্থিতিশীল থাকবে। বাংলাদেশ অটো, মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, সরকার মিল মালিকদের কথা চিন্তা করে না। ঢালাওভাবে চাল আমদানির বিরোধিতা করে। চাল আমদানির ফলে দেশের হাজার হাজার চালের মিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে চালের বাজার বাড়ার সম্ভাবনা নেই, স্থিতিশীল থাকবে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম সরকার, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ অটো, মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রামে মাঠ রক্ষার আন্দোলনে মেয়র শাহাদাতের একাত্মতা ঘোষণা

চালের দাম নিয়ে ব্যবসায়ীদের দুষছেন খাদ্যমন্ত্রী

আপডেট সময়ঃ ০৮:৩২:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশে চালের অভাব নেই। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হয়। কেউ কৃত্রিম সংকট করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, যখন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিটিং করা হয় তখন চালের দাম কমে। তারপর আবার বাড়ে। বাড়ার সময় ৫ টাকা বাড়লেও কমার সময় সেভাবে কমে না। ব্যবসায়ীরা এক টাকা কমিয়ে বলে চালের দাম কমেছে। চাল ব্যবসায়ীদের এ প্রবণতা ত্যাগ করা উচিত। আজ মঙ্গলবার খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন রমজান মাসে চালের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষ হতে পারে, বিশ্ব ব্যাংকের এমন ঘোষণার পর অনেকেই অন্যায্যভাবে চালের দাম বাড়িয়েছেন, মজুত করেছেন। সেটা নিয়ন্ত্রণে ওএমএস বাজারে ছাড়তে হয়েছে। সরকার আমদানি করেছিল বলে বিতরণ করতে পেরেছে। তিনি বলেন, সরকার বিভিন্নভাবে বাজারে সরবরাহ ও দাম মনিটরিং করে। শুধু রমজান মাসেই নয় এ মনিটরিং সারা বছর চলে এবং চলবে। লাইসেন্স ছাড়া কেউ দেশে ধান চালের ব্যবসা করতে পারবে না। এটা করতে হলে তার ফুড গ্রেইন লাইসেন্স থাকতে হবে। আড়তদারদেরও এ লাইসেন্স থাকতে হবে। এটা নিয়মিত মনিটরিং হচ্ছে। ১৫ দিন পর পর কতটুকু তিনি ক্রয় করেছেন, কতটুকু বিক্রয় করেছেন তার রিটার্ন দাখিল করতে হবে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কৃষিতে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। এক সময়ের মঙ্গা পীড়িত এলাকা এখন খাদ্যে উদ্বৃত্ত। অনেকেই প্রশ্ন করেন উদ্বৃত্ত হলে আমদানি করেন কেন? আমদানির পথ খোলা থাকলে অবৈধ মজুতকারীরা কারসাজি করতে পারে না। নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোধ বরণ সাহা চন্দন বলেন, ধান চালের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এমন লোকেরা অবৈধ মজুত গড়ে তোলেন। তাদের অতি মুনাফা লাভের আশা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। তিনি বলেন, চাল আমদানির কোন প্রয়োজন নেই। দেশে যে ধান উৎপাদন হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় উদ্বৃত্ত। চাল ব্যবসায়ী কে এম লায়েক আলী বলেন, সরকারি ধান চাল সংগ্রহকালে দাম নির্ধারণ করে দিলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ যৌক্তিক দাম নির্ধারণ না করায় সরকারি গুদামে লস দিয়ে চাল দিতে হয়। বাবু বাজার পাইকারি চাল ব্যাবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের বাজার ডিমান্ড ও সাপ্লাই এর ওপর নির্ভর করে। আমদানি চালু থাকলে বাজার ঠিক থাকে। ধানের বাজার স্থিতিশীল রাখতে পারলে চালের বাজারও স্থিতিশীল থাকবে। বাংলাদেশ অটো, মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, সরকার মিল মালিকদের কথা চিন্তা করে না। ঢালাওভাবে চাল আমদানির বিরোধিতা করে। চাল আমদানির ফলে দেশের হাজার হাজার চালের মিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে চালের বাজার বাড়ার সম্ভাবনা নেই, স্থিতিশীল থাকবে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম সরকার, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ অটো, মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।