নিজস্ব প্রতিবেদক :
সড়কে মারামারির ঘটনায় টিকটকার ইয়াসিন আরাফাত অপু ওরফে ‘টিকটক অপু’ ওরফে ‘অপু ভাই’সহ ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন পুলিশ। আদালত চার্জশিটটি গ্রহণ করে আসামি মো. রনি প্রকাশ সৈয়দ রাকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একইসঙ্গে মামলায় আসামি মুন্না ওরফে লুৎফর রহমান (২২), জমির উদ্দিন (৪৫), মো. সুমন শেখ ওরফে পাপনের (২৭) বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণের স্বপক্ষে কোনো নিরপেক্ষ প্রত্যক্ষ সাক্ষী না পাওয়ায় এবং ঘটনার সঙ্গে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযোগের দায় থেকে তাদের অব্যাহতির আবেদন করেন পুলিশ। গত ১১ অক্টোবর আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে মামলার দায় হতে তাদের অব্যাহতি দেন। টিকটক অপু (২০) বাদে চার্জশিটে অপর আসামিরা হলেন- মো. শাকিল হোসেন (২৬), মো. শাহদত হোসেন (৩০), মো. সানি (২২), মো. নাজমুল (২১) ও মো. রনি প্রকাশ সৈয়দ রাকিবুর রহমান (২৫)। আজ বুধবার সকালে উত্তরা পূর্ব থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক লিয়াকত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার উপপরিদর্শক মো. আজিজুর তালুকদার টিকটক অপুসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। অপরদিকে মুন্না ওরফে লুৎফর রহমানসহ তিনজনের অব্যাহতির আবেদন করেন। গত ১১ অক্টোবর আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে মামলার দায় হতে তাদের অব্যাহতি দেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২০ সালের ২ আগস্ট মামলার বাদী এস এম মাহবুব আলমের ছেলে মেহেদী হাসান রবিন (৩০) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শ্বশুর বাড়ি রাজধানীর উত্তরা থেকে ফিরছিল। উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৬নং সেক্টরস্থ আলাউল এভিনিউয়ের ৫২ নম্বর বাসার সামনে পাকা রাস্তায় পৌঁছালে রবিনের পথরোধ করে টিকটক ভিডিও করতে থাকে। এ সময় প্রাইভেটকারে বসে থাকা রবিনসহ তার বন্ধুরা হর্ন বাজালে আসামি সাকিল, শাহদত, সানি, টিকটক অপু, নাজমুল, রনি, মুন্না ও জমির উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে রবিন ও তার বন্ধু আফসানুল কবির, সরকার সজল মাহমুদ ও মুরাদুল হককে প্রাইভেটকার থেকে টেনে রাস্তায় নামান। এরপর ধারালো অস্ত্র, লোহার রড ও ইট দিয়ে মাথায়, ঘাড়ে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে তাদের জখমসহ রক্তাক্ত করে টিকটকাররা। এ সময় আসামিরা ভুক্তভোগীদের কাছে থেকে স্যামসাং ফোন ও নগদ ২১ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং তাদের নানা রকম ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ঘটনার পরদিন ৩ আগস্ট উত্তরা পূর্ব থানায় এস এম মাহবুব আলম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই সন্ধ্যায় উত্তরা এলাকা থেকে সহযোগী নাজমুল হাসানসহ টিকটক স্টার অপুকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সড়ক অবরুদ্ধ করে বাদীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম, চুরি ও হুমকির অভিযোগে মামলা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার দায় স্বীকার করেন অপু। পরে ১৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ তার জামিন মঞ্জুর করেন। টিকটক ভিডিও নির্মাতা অপু নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর শহীদ ইসলামের ছেলে। শহীদ রাজধানীর দক্ষিণখানের গোয়ালটেক এলাকায় থাকেন। অপু ‘টিকটক অপু’ নামে পরিচিত। টিকটকে তার বিপুলসংখ্যক অনুসারী আছে।