• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন

দেনমোহর: ধর্ম-আইন ও বাস্তবতা

Reporter Name / ৪০৭ Time View
Update : রবিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২১

মোহাম্মদ আরিফ উদ্দীন চৌধুরী
দেনমোহর বা মোহরানা ইসলামে বিয়ের ক্ষেত্রে ০৫টি শর্তের মধ্যে একটি অত্যাবশ্যকীয় পালনযোগ্য শর্ত। একজন মুসলমান হিসেবে বিয়ে করার ক্ষেত্রে স্বামী তার স্ত্রীকে আকদ্ সম্পন্ন হওয়ার আগ মুহুর্তে বা পরবর্তিতে মোহর পরিশোধ করতে বাধ্য। বিয়ের সময় মোহর ধার্য্য করা হোক বা না হোক মোহর পরিশোধ থেকে স্বামী কখনো মুক্তি পান না। স্ত্রীকে মোহর পরিশোধ করা ফরয। এ বিষয়ে পবিত্র হাদিস শরীফে এসেছে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো নারীকে কম বা বেশি মোহর ধার্য্য করে বিয়ে করল, অথচ তার অন্তরে মোহরের সে হক আদায়ের কোনো ইচ্ছাই নেই, সে ব্যক্তি কেয়ামতের মাঠে ব্যাভিচারী হিসেবে উপস্থিত হবে।” উপরোক্ত হাদিস শরীপ থেকে ধারণা করা যায় যে, স্ত্রীকে মোহর পরিশোধ করা একজন স্বামীর জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর অন্য এক হাদীস শরীফে বলেন, সবচেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ শর্ত যা পূরণ করা জরুরী, তা হলো সেই বস্তু যা দ্বারা তোমরা (স্ত্রীদের) গুপ্তাঙ্গ হালাল করে থাকো। সুতরাং স্ত্রীকে তার ঐ প্রদেয় মোহরানা প্রদান করা ফরয। মোহরানা হিসেবে জায়গা, জমি, নগদ অর্থ, অলঙ্কার, কাপড় চোপড় ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে। বরং প্রয়োজনে পাত্রীপক্ষ সম্মত হলে কোরআন শিক্ষাদান, ইসলাম গ্রহণও মোহর হতে পারে। মোহর প্রদান সংক্রান্ত বিষয়টি স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বিধান। এই বিষয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে সূরা আন-নিসা, আয়াত সংখ্যা ০৪ এ বলেন, আর তোমাদের স্ত্রীদের তাদের দেনমোহর দিয়ে দাও খুশি মনে। অবশ্য স্ত্রী চাইলে দেনমোহরের কিছু অংশ বা সম্পূর্ণ অংশ ছেড়ে দিতে পারে। এ ছাড়াও সূরা আল-আহজাব, আয়াত-৫০ এ উল্লেখ আছে, হে নবী! আমি আপনার জন্য বৈধ করেছি আপনার স্ত্রীদেরকে, যাদের দেনমোহর আপনি প্রদান করেছেন। তাহলে এটা পরিস্কার যে, বিয়ের ক্ষেত্রে স্ত্রীকে মোহর প্রদান করতেই হবে। তবে তা কত প্রদান করতে হবে তা নির্দিষ্ট করা হয় নি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর জামানায় তার নিজের ক্ষেত্রে এবং কন্যাদ্বয়ের বিয়ের ক্ষেত্রে কম দেনমোহর ধার্য্য করার প্রবণতা বা তৎমুহুর্তে হবু-স্বামীর যা আছে তা থেকে ধার্য্য করার উদাহরণ লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম মোহর সংক্রান্তে বলেন, সে নারী বরকতের মাঝে আছে যাকে প্রস্তাব দেয়া সহজ ও যার দেনমোহর অল্প। হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয় যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, সবচেয়ে বরকতময় বিয়ে হচ্ছে সুন্নতি বিয়ে অর্থ্যাৎ যে বিয়েতে খরচ কম হয় এবং কোনো জাঁকজমক থাকে না। এছাড়াও পবত্রি কোরআনে সূরা নিসার আয়াত নম্বর ২৪ এ বলা হয়েছে এবং নারীদের মধ্যে সধবা নারী ছাড়া সকল নারীকে তোমদের জন্য হালাল করা হয়েছে যে, তোমরা তোমাদের অর্থের (মোহরের) বিনিময়ে তাদেরকে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য, অবৈধ যৌনাচারে লিপ্ত হওয়ার জন্য নয়। সুতরাং তাদের মধ্যে তোমরা যাদেরকে ভোগ করেছ তাদেরকে তাদের নির্ধারিত মোহর দিয়ে দাও। আর নির্ধারণের পর, যে ব্যাপারে তোমরা পরস্পর সম্মত হবে তাতে তোমাদের উপর কোন অপরাধ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।”
উপরোক্ত ধর্মীয় বিধান ও আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর হাদিস শরীফ হতে একটা বিষয় পরিস্কারভাবে বলা যায় যে, ইসলামে একজন মুসলমান পুরুষ বিয়ে করতে চাইলে তার হবু-স্ত্রীকে অবশ্যই দেনমোহর প্রদান করিতে বাধ্য। তবে “চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী”, প্রকৃতপক্ষে আমদের দেশে চলমান সামাজিক বাস্তবতার দিকে তাকালে দেখা যাবে, মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিয়ের ক্ষেত্রে মোহর ধার্য্য করা এবং ধার্য্যকৃত মোহর পরিশোধ করার মধ্যে ব্যাপক অপসংস্কৃতি, উদাসীনতা, লৌকিকতা, ধর্মীয় বিধানের মূল উদ্দেশ্য পরিপন্থি কাজই বেশি হয়। মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ এর ১০ ধারাতে বলা হয়েছে, “যিবৎব হড় ফবঃধরষং ঃযব সড়ফব ড়ভ ঢ়ধুসবহঃ ড়ভ ফড়বিৎ ধৎব ংঢ়বপরভরবফ রহ ঃযব হরশধযহধসধ, ড়ৎ ঃযব সধৎৎরধমব পড়হঃৎধপঃ, ঃযব বহঃরৎব ধসড়ঁহঃ ড়ভ ঃযব ফড়বিৎ ংযধষষ নব ঢ়ৎবংপৎরনবফ ঃড় নব ঢ়ধুধনষব ড়হ ফবসধহফ” অর্থ্যাৎ দেনমোহর প্রদান বা পরিশোধের পদ্ধতি সম্পর্কে কাবিননামা বা বৈবাহিক চুক্তিতে উল্লেখ না থাকলেও স্ত্রী চাহিবামাত্র তা পরিশোধ করতে হবে। এমনকি দেনমোহর ধার্য্য করা না থাকলেও। দেনমোহর প্রদান বা পরিশোধের ক্ষেত্রে যদি কোন ব্যাক্তি কারো স্বামীর পক্ষে তার স্ত্রীকে দেনমোহর পরিশোধের দায়িত্ব বা জিম্মাদার হয়ে থাকেন তাহলে ঐ জিম্মাদার মোহর পরিশোধে দায়বদ্ধ থাকবেন। দেনমোহর ধার্য্য ও কাবিননামার শর্ত মোতাবেক পরিশোধ পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে দু-ধরণের হয়ে থাকে, যথা ১.মুয়াজ্জল (আশু), ২. মু-অজ্জল (বিলম্বিত)। মুয়াজ্জল দেনমোহর হলো, যে দেনমোহর নগদে স্ত্রীকে প্রদান করতে হয় বা বিয়ের আগ মুহুর্তে দিতে হয় অর্থ্যাৎ যে দেনমোহর বিয়ের আসরে বা সংসার জীবন চলাকালীন স্ত্রী চাওয়া মাত্র পরিশোধ করিতে হয়। আর মুঅজ্জল দেনমোহর হলো, ধার্য্যকৃত মোহরের যেই অংশটুকু স্বামীর মৃত্যুর পর বা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের পর পরিশোধ করিতে হয়। উল্লেখ্য যে, দেনমোহর অপরিশোধিত অবস্থায় স্ত্রী যদি স্বামীর আগে মারা যায় তাহলে মৃত স্ত্রীলোকের পক্ষে তার উত্তরাধিকারীরা ঐ অপরিশোধিত দেনমোহর পাওয়ার আইনত অধিকারী হবে এবং উক্ত উত্তরাধিকারীরা তৎপ্রেক্ষিতে আদালতে মামলা করতে পারবে। এক্ষেত্রে ১৯৮৫ সনের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশের ৩ ধারার বিধান প্রযোজ্য হবে। সারা দেশের সকল সহকারী জজ/সিনিয়র সহকারী জজ নিজ অধিক্ষেত্রে পারিবারিক আদালতের জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেবেন। উল্লেখ্য যে, খোরপোষ, মোহরানা, বিবাহ বিচ্ছেদ, দাম্পত্য স্বত্ত পুনরুদ্ধার এবং অভিভাবকত্ব ও শিশু সন্তানের প্রতিপালন বিষয়ে যে কোন সংক্ষুব্ধ ব্যাক্তি নিজ ধর্মের অনুবলে তৈরী আইন মোতাবেক উপরোক্ত পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন। উক্তরূপ মামলা দায়েরে প্রথমদিকে ২৫ টাকা, পরবর্তিতে ৬০ টাকা কোর্ট ফি দিতে হয়। তবে কোর্ট ফিস অ্যাক্ট, ১৮৭০ (সংশোধনী ২০১০) মতে বর্তমানে ১০০ টাকা কোর্ট ফি ধার্য্য আছে। তবে, আদালতে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ১৯০৮ সনের তামাদি আইনের তফসিল-০১ এর অনুচ্ছেদ- ১০৩ ও ১০৪ প্রয়োগ হবে। মুয়াজ্জল মোহরের ক্ষেত্রে স্ত্রী দাবী করে ব্যার্থ হওয়ার ০৩ বছরের মধ্যে আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে আর মুঅজ্জল মোহরের ক্ষেত্রে স্ত্রীর মৃত্যু বা তালাকের কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে, ঐ তারিখ থেকে ০৩ বছরের মধ্যে। স্ত্রী লিখিতভাবে তালাক প্রাপ্ত হলে ঐ লিখিত তালাক দানের নোটিশ বা তথ্য বা সংবাদটি অবহিত হওয়ার পর থেকে তামাদির মেয়াদ শুরু হবে। স্ত্রীও আদালতে মোহরানার মামলা দায়ের করতে পারবে। একটি প্রশ্ন মনে চলে আসে, দেনমোহর মাপ পাওয়া যায় কিনা! এই বিষয়ে আদালতের বক্তব্য হলো, দেনমোহর কখনোই মাপ পাওয়া যায় না। স্বামী যদি মারাও যায় তবে স্বামীর রেখে সম্পদ থেকে দেনমোহর আদায় করা যাবে। (২২ ডিএলআর, পৃষ্ঠা- ৬৭৭)। এটির সাথে স্ত্রী সহবাসের বিষয় জড়িত আছে। যদি স্ত্রী সহবাসের পূর্বেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাহলে অর্ধেক মোহর পরিশোধ করতে হবে তবে স্বামী চাইলে ধার্যকৃত পুরো মোহর পরিশোধ করতে পারবে। আর যদি দাম্পত্য মিলন হওয়ার পূর্বেই স্বামী মারা যায় সেক্ষেত্রে স্ত্রী পুরো দেনমোহর পাবে। একই সাথে উল্লেখ্য যে, মুয়াজ্জল (আশু) মোহর স্ত্রী চাওয়ার পর স্বামী পরিশোধ না করলে স্বামীর দাম্পত্য অধিকারে যেতে স্ত্রী অস্বীকার করতে পারবে। দেনমোহরের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে ডিএফ মোল্লা বলেছেন, মোহর বা মোহরানা হলো কিছু টাকা বা অন্য কিছু সম্পত্তি যা বিবাহের প্রতিদানস্বরূপ স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে পাওয়ার অধিকারী। দেনমোহরকে বৈবাহিক চুক্তির মুল্য বা শর্ত বলা যাবে না। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের ১০ ধারা মোতাবেক, দেনমোহর দেয়ার নিয়ম সম্পর্কে প্রচলিত কাবিননামায় বিস্তারিত উল্লেখ না থাকলেও স্ত্রীর চাহিদামাত্র মোহরের সম্পূর্ণ টাকা স্বামী পরিশোধ করতে হবে। উপমহাদেশে ইসলামের চার মাযহাবের মধ্যে হানাফী মাযহাবের ফলোয়ার বেশি বিধায় মোহর ধার্য্য করার ক্ষেত্রে মাযহাবের নিয়ম কানুন মানার চেষ্টা করা হয়। হানাফি মাযহাব মতে, মোহরের সর্বনিম্ন পরিমাণ হলো ১০ দিরহাম বা ২.৭৫ তোলা রূপা। ০১ তোলা রূপার দাম আনুমানিক ১৫০০/- টাকা করে হিসাব করলে সর্বনিনিম্ন মোহরের দাম দাঁড়ায় ৪১২৫/- টাকার মতো। যদিও এই পরিমাণ মোহর এখন ধার্য্য করার কোনো সম্ভবনা নাই। বরং সর্বোচ্চ কত মোহর ধার্য্য করা যায় তা নিয়ে শঙ্কা কাজ করে। তবে, ইসলামে বা কোন মাযহাবে সর্বোচ্চ কত মোহর ধার্য্য করা যাবে তা নিয়ে কোন সুনির্দিষ্ট বক্তব্য নেই। ইসলামের শাসক বা খলিফাগণ অতিরিক্ত বা অতিরঞ্জিত মোহর ধার্য্য করা নিয়ে বিভিন্ন সময় শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তা সংশোধন করার চেষ্টাও করেছেন কিন্তু পবত্রি কোরআনে সূরা নিসার ০৪ নং আয়াতে “ৃআর তোমাদের স্ত্রীদের তাদরে দেনমোহর দিয়ে দাও খুশি মনে” থাকার কারণে মোহরের পরিমাণে কেউ মাথা ঘামাতে পারে নি। বর্তমানে সর্বনিম্ন মোহর ধার্য্য নিয়ে কোন সমস্যা নেই বরং সর্বোচ্চটা কত হতে পারে তা নিয়েই যত বিপত্তি। বর্তমানে মোহর ধার্য্যরে বিষয়টি পাত্রকে ঘায়েল করার বা বশে রাখার বা সংসার টিকিয়ে রাখার বা প্রতারণা করে প্রচুর সম্পদের মালিক হওয়ার মানসে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যাতিক্রমও আছে কিন্তু এমন উদাহরণ খুব কম। এটা ছাড়াও মোহরটাকে বর্তমানে মেয়ের আর্থিক নিরাপত্তার হাতিয়ার হিসেবে দেখা হয় অতচ এটি কোরআনে এটিকে আর্থিক নিরাপত্তার থেকেও সম্মান প্রদর্শনের জন্য গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বেশি। এটা ছাড়াও নবী করিম সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম, মোহরানার নিয়ম ব্যাবহারে কখনো আর্থিক নিারপত্তার বিষয়ে জোর দেন নি বা এ রখম কোন উদাহরণও নেই বরং মর্যাদা ও সম্মান প্রতিষ্ঠায় একটি লোহার আংটি বা কয়েকটি সূরা হলেও শেখানোর কথা বলেছেন। আর এটা নিচক সাধারণ জ্ঞান যে, একজন মেয়ের আর্থিক নিরাপত্তা কত হতে পারে সেটা কিভাবে নির্ধারণ হবে ইসলামে বিয়েটাকে খুব সহজ করা হয়েছে। সন্তানাধি সাবালক হওয়ার সাথে সাথে তাদের বিবাহ করানোর নির্দেশ রয়েছে। অভিভাবক এবং সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিবাহ সম্পন্ন করা সহ ০৫ টি শর্ত যুক্ত করা হয়েছে,যাতে সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় থাকে। সব গুলো শর্ত ভালভাবে বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, এগুলো বিবাহের বন্ধনটাকে সুদৃড় এবং পারিবারিক-সামাজিক শৃঙ্খলাকে মজবুত রাখার জন্য যুক্ত করা হয়েছে। অতচ আমাদের সমাজ ব্যাবস্থা এই সহজ-সরল পদ্ধতিটার অপব্যাবহার করে কত কঠিন বেড়াজাল বানিয়ে ফেলেছে। ফলত: লাখ টাকা খরছ করেও বৈধ বিবাহ করা যায় না, কিন্তু অল্প টাকা খরছে ডার্ক রেস্টুরেন্টে গিয়ে অবৈধ মেলামেশা করা যায়। বর্তমান সমাজ ব্যাবস্থা বলছে, “হে যুবক! তুমি হাজার টাকা খরছ করে বিয়ে করিও না বরং শ-টাকা খরছ করে পতিতালয়ে যাও।” বর্তমান যুব-যুবতি সমাজের নৈতিক স্খলনের পেছনে বিয়ের কঠিন আস্তরণ একটা বড় ফ্যাক্টর। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে সূরা আর-রুমের আয়াত-২১ এ এরশাদ করেন, তার (আল্লাহর) নিদর্শনগুলোর মধ্যে একটি এই যে, তিনি (আল্লাহ্) তোমাদের মধ্যে থেকেই তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করছেন যাতে তোমরা তাদের পেয়ে পরিতৃপ্ত হও। তিনি (আল্লাহ্) তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক প্রেম-ভালোবাসা ও মমত্ববোধ সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে চিন্তাশীল লোকদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। বিষয়টা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। প্রকৃত ধর্মাচার ও সুশৃঙ্খল সমাজ বিনির্মানে বিয়ে একটি অপরিহার্য শর্ত। তাই মোহর ধার্য্য করা এবং তা আশু পরিশোধ করা বিষয়ে আমাদের সকলকে সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে। বিশেষ করে, মসজিদের খতিব, ঈমাম, বিয়ে পড়ানো মাওলানা, কাবিন রেজিস্ট্রি করা কাজী, আইনজীবী, কোর্ট এবং সরকারকে যুগোপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রকৃত অর্থে, ধর্মের বিধান মেনে আইনের অনুশাসন তৈরী করতে হবে এবং তা মানতে সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category