নিজস্ব প্রতিবেদক :
একুশে বইমেলায় মডেল-অভিনেত্রী নাজিফা তুষিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিটিআরসিকে এ নির্দেশ দেন। আদেশে বলা হয়েছে, যদি ওই নারী মনে করেন সাজা দেওয়ার প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি, তাহলে তিনি আইনি প্রতিকার চাইতে উপযুক্ত আদালতে যেতে পারবেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দেওয়ার সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেননি বলেও মনে করেন হাইকোর্ট। এর আগে রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জরিমানা করার ঘটনা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন নাজিফা তুষি। তার পক্ষে অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা বাবু রিটটি দাখিল করেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে করোনা বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি কার্যকরবিষয়ক অভিযান পরিচালনা করছিলো ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি না মানায় দর্শনার্থী ও প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের অপরাধের মাত্রা বুঝে অর্থদ- দেওয়া হয়। ওইদিন একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচনে অতিথি হিসেবে অংশ নিতে মেলায় গিয়েছিলেন নাজিফা তুষি। মাস্ক ব্যাগে রেখে ঘোরাঘুরির একপর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নজরে পড়েন তিনি। এ সময় তুষিকে ২০০ টাকা অর্থদ- করেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা রানী কর্মকারের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে একজন নির্বাহী হাকিমের সঙ্গে তুষির তর্কে জড়ানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা ঘটনার ভিডিও ধারণ করলে মেজাজ হারিয়ে তুষি হাকিমকে বলেন, তাকে কেন জনসম্মুখে ‘হেনস্তা’ করা হচ্ছে? এসময় তুষির উদ্দেশে ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা বলেন, এখানে আদালত পরিচালনা হচ্ছে, এটি কোনো শুটিং নয়। আপনি স্বাস্থ্যবিধি মানছেন কি না, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমরা সেটা দেখছি। আপনাকে দ-বিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারা অনুযায়ী ২০০ টাকা অর্থদ- দিচ্ছি। করোনাকালীন মাস্ক না পরে মেলায় ঘোরাফেরার করার জন্য এ সময় দুঃখ প্রকাশ করেন তুষি। তবে সাংবাদিকদের ভিডিও ধারণ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় তুষি বলেন, জিনিসটা (ভিডিও) ভাইরাল হলো; অনেকেই এ নিয়ে কথা বলছে। আমার তো একটা পরিচয় আছে, ব্যক্তিগত জীবন আছে। আমার ভুল হতে পারে, সেটা যে কোনো মানুষেরই হতে পারে। কিন্তু আমার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন। বারবার বলা সত্ত্বেও ক্যামেরায় শুট করা হচ্ছিল। পরে আমার বন্ধুরাও এসেছিল, ওদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। জরিমানার শিকার এ মডেল-অভিনেত্রীর ভাষ্য, আমি তাকে (ম্যাজিস্ট্রেট) বলেছিলাম, আমার কোনো পানিশমেন্ট হলেও সাইডে গিয়ে কথা বলেন। কিন্তু উনি সেটি করছিলেন না। প্রকাশ্যে ভিডিও করা হচ্ছিলো। অথচ আমি অর্থদ-ও দিলাম। অনেক মানুষের সামনে, অনেক ক্যামেরার সামনে আমাকে বারবার হয়রানি করা হচ্ছিলো। তখন আমি শাউট করে বলছিলাম, আমাকে হ্যারাস কেন করছেন? আমাকে ফাইন করেন, আমি টাকা দিয়ে দিচ্ছি। মেলায় আরও মানুষ ছিল কোনো মাস্ক পরেনি। এমনকি পুলিশ সদস্যদেরও অনেকে মাস্ক পরেনি। সেটাও বলছি না। কিন্তু আমার পারমিশন ছাড়া সেটা ক্যামেরায় কেন নেবেন। ২০১৬ সালে ‘আইসক্রিম’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তুষি। ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ শিরোনামের একটি ওয়েব সিরিজেও কাজ করেন তিনি। তার একাধিক চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায়। ২০১৪ সালে একটি সৌন্দর্য বিষয়ক প্রতিযোগিতা থেকে শোবিজ অঙ্গনে উঠে আসেন তুষি। নিয়মিত কাজ করছেন বিজ্ঞাপন ও টিভি নাটকে।