নিজস্ব প্রতিবেদক :
গত ২৪ মার্চ বিকেলে ঢাকার বনানীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুই শতাধিক পরিবার। ঘরবাড়ি পুড়ে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে পরিবারগুলো। সেখানকার শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের বইখাতা, খেলার জিনিসপত্র সবই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ৮০০ মানুষের বসবাসের এই বস্তিতে তিন শতাধিক শিশু রয়েছে। প্রায় তিন বছর ধরে বস্তির শিশুদের সাথে ‘সেল্ফ ডিফেন্স টিম’ এবং ‘সূবর্ণরেখা’ কাজ করছে। করাইল গুদাম বস্তির শিশু এবং পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে সেল্ফ ডিফেন্স টিম। এই অসহায় মানুষগুলোকে সাহায্যের হাত বাড়ানোর জন্যে পদক্ষেপ নেয় সুবর্নরেখা লিমিটেড ও ঢাকার সেল্ফ ডিফেন্স টিম। ২৬ মার্চ দিনব্যাপী সহযোগিতার কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। বিভিন্ন রকম কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশু ও বস্তির বাসিন্দাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর কাজ করা হয়। কার্যক্রমের মধ্যে ছিল আর্ট ক্যাম্প, সচেতনতামূলক বক্তব্য, খেলাধুলার সামগ্রী বিতরণ, ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের মাঝে টি-শার্ট বিতরণ। এছাড়াও দুই বেলা দুপুর ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হয় প্রায় ১২০০ মানুষের জন্য। শিশুদের নানাভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়, তারা যেন কোনোভাবেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত না হয়ে পড়ে এবং খেলাধুলা প্রতি আরও আগ্রহ বাড়িয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন ধরনের ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। সেলফ ডিফেন্স টিমের কার্যক্রমগুলো হলো- বাচ্চাদের ভয়-ভীতি কাটানোর জন্যে আর্ট ক্যাম্পিং, যার মাধ্যমে তারা তাদের নিজেদের মনোভাবগুলো তুলে ধরতে পারে এবং তাদের ভয় কাটিয়ে তুলতে পারে। বস্তির বাচ্চাগুলোই পুরো টিমের সঙ্গে ভলান্টিয়ারের কাজ করেছে। বাচ্চাদের জন্যে পোশাকের ব্যবস্থা করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার প্রায় ১২০০ এর বেশি বস্তিবাসীর জন্যে করা হয় এক বেলা খাবারের ব্যবস্থা। ক্ষতিগ্রস্ত শিশু সানজিদা আক্তার বলে, আগুনের কারণে আমাদের বাড়িঘর সব পুইড়া গেছে। আমাদের বইখাতা এবং খেলার সামগ্রী সব ছাই হইয়া গেছে। বিলকিস আক্তার বলে, আমাদের থাহার আর কোনো জায়গা নাই। বৃষ্টি পড়ে, আমাদের জামাকাপড় নাই, ভাত খাবার থালা, রান্নার হাড়ি-পাতিল নাইগা। করাইল বস্তির সেল্ফ ডিফেন্স টিম এবং অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসী সবাই মিলে দুপুর এবং রাতের খাবারের আয়োজন করে। যেখানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছে অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত সেল্ফ ডিফেন্স টিমের সদস্যরা। ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসী এবং শিশুরা মিলে সবার বাসায় বাসায় খাবার পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে সবাইকে নিয়ে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে একতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। বস্তিবাসীর পক্ষ থেকে ফারুক মিয়া বলেন, অনেকেই আমাদের সহযোগিতা করছে। আমরা সবাই এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি। আপনাদের এই উদ্যোগে আমরা সবাই মিলেমিশে আজকে খাবার আয়োজন করতে পেরেছি।