• বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ
অফিস সময়ে চিকিৎসকরা হাসপাতালের বাইরে গেলে ব্যবস্থা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ৪৬ কিলোমিটার বাড়ছে ঢাকা আউটার রিং রোডের দৈর্ঘ্য, ব্যয় বাড়ছে তিনগুণ বৃহস্পতিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে: শিক্ষামন্ত্রী জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘন করলেই মালিকদের জরিমানা: আইনমন্ত্রী মে দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা করলেন প্রতিমন্ত্রী জরাজীর্ণ রেললাইন ও সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন নাটোরে অন্তঃসত্ত্বার রেডিওলজি পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট, তদন্ত কমিটি আগামী বছর হজের খরচ আরও কমে আসবে: ধর্মমন্ত্রী শ্রমিকদের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে: স্পিকার

কমলাপুরে টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ৬

Reporter Name / ১১৮ Time View
Update : শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে টিকিট কালোবাজারি চক্রের অন্যতম মূলহোতা আবদুল হাকিমসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। রিকশাচালক, শ্রমিক ও দিনমজুরদেরকে অল্প টাকার বিনিময়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে তাদের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করতো চক্রটি। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তির এনআইডি ব্যবহার করে অনলাইনেও টিকিট সংগ্রহ করতো। এরপর ওইসব টিকিট সাধারণ যাত্রীদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করতো চক্রটি। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পৃথক অভিযানে রাজধানীর কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৩। গ্রেপ্তাররা হলেন- চক্রের মূলহোতা মো. আবদুল হাকিম (৩৭), মো. জয়নাল আবেদীন (৫৯), মো. শামীম ওরফে স¤্রাট (২৭), মো. আবদুল জলিল (১৯), মো. খোকন মিয়া (৫৫) ও মো. উজ্জ্বল ভূঁইয়া (৩৩)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ট্রেনের ২১টি টিকিট, মোবাইল ফোন ৫টি, সিমকার্ড ৩টি, মানিব্যাগ ২টি, আইডিকার্ড একটি ও টিকিট বিক্রির নগদ ৯ হাজার ৮১৮ টাকা উদ্ধার করা হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলি র‌্যাব-৩ এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, রাজধানীর কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলস্টেশনসহ সারা দেশের ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্র। কমলাপুর রেলস্টেশনে এই কালোবাজারি চক্রটির একজন অন্যতম মূলহোতা মো. আবদুল হাকিম ও অন্যান্য সদস্যরা মিলে রেলস্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন এনআইডি ব্যবহার করে টিকিট সংগ্রহ করতো। এছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন এনআইডি ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেও টিকিট সংগ্রহ করতেন চক্রের সদস্যরা। এভাবে টিকিট সংগ্রহের পর আবদুল হাকিমের নেতৃত্বে ট্রেন ছাড়ার ৩/৪ ঘণ্টা আগে থেকে তারা বেশি দামে টিকিট বিক্রির তৎপরতা শুরু করতেন। র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ট্রেন ছাড়ার সময় যত ঘনিয়ে আসে তাদের মজুত করা কালোবাজারি টিকিটের দাম তত বাড়তে থাকে। তারা সাধারণত দ্বিগুণ মূল্যে টিকিট বিক্রি করতো। সুযোগ এবং সময় বুঝে অনেক ক্ষেত্রে তারা টিকিটের দাম আরও বাড়িয়ে দিতো। লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, চক্রটি মূলত তূর্ণা নিশিথা, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, তিস্তা এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী, চট্টলা এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস এবং পারাবত এক্সপ্রেসের টিকিট কালোবাজারি করতো। চক্রের প্রতিটি ইউনিটে ৫ থেকে ৭ জন করে সক্রিয় সদস্য রয়েছেন। যারা তাদের টার্গেট করা ট্রেনগুলোর টিকিট কালোবাজারি করে সাধারণ যাত্রীদের কাছে চড়াদামে বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা অর্জন করেন। গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চক্রের মূলহোতা আবদুল হাকিম নিজ জেলা কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের পরিচয় ব্যবহার করে ও রেলস্টেশনে কর্মরত অসাধু একটি চক্রের যোগসাজসে ২০১৮ সাল থেকে টিকিট কালোবাজারির ব্যবসা শুরু করেন। তিনি মূলত নিজে টিকেট কাটার কাজ না করে তার অধীনস্ত কর্মীদের দিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে টিকেট সংগ্রহ করে চড়া দামে বিক্রি করতেন। বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও তিনি কখনো গ্রেপ্তার হননি। কারণ তিনি অত্যন্ত সুকৌশলে তার কর্মীদের দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টিকেট চোরাকারবারের ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, রেল স্টেশনে যে সংখ্যক টিকিট বরাদ্দ থাকে তার মধ্যে ৫০ শতাংশ বিক্রি হয় অনলাইনে। যার ফলে কাউন্টারে এসে অনেকে টিকিট না পেয়ে ফিরে যান। আর এই সুযোগটিই নেয় টিকিট কালোবাজারি চক্রের সদস্যরা। এমনকি অনেক সময় তারা রিকশাচালক, শ্রমিক ও দিনমজুরদেরকে অল্প টাকার বিনিময়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে তাদের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করেন। এছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন এনআইডি ব্যবহার করেও টিকিট সংগ্রহ করেন। সংগ্রহ করা টিকিট নিয়ে তারা রেলস্টেশনের ভেতরে ছড়িয়ে পড়েন। এরপর যেসব যাত্রী কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন বা টিকিট পেতে চেষ্টা করছিলেন- তাদের কাছে কালোবাজারি করে টিকিট বিক্রি করতেন। লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ট্রেন ছাড়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে যাত্রী সমাগম শুরু হলে তাদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। তারা তখন দ্বিগুণ মূল্যে টিকিট বিক্রি করেন। সুযোগ এবং সময় বুঝে অনেক ক্ষেত্রে তারা টিকিটের দাম আরও বাড়িয়ে দেন। এটা তাদের স্বাভাবিক সময়ের কার্যক্রম। কিন্তু ঈদসহ বিভিন্ন ছুটিকে কেন্দ্র করে তারা এক একটি টিকিট ৩-৪ গুণ পর্যন্ত বেশি মূল্যে বিক্রি করেন। চক্রটি ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে ৫০০ টাকার টিকিট দুই হাজার টাকায়ও বিক্রি করেছে বলে জানায়। চক্রের সদস্যরা প্রত্যেকে দীর্ঘদিন ধরে এই পেশার মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহ ও যাবতীয় খরচ চালিয়ে আসছিলেন বলেও জানায় র‌্যাব। চক্রটির মূলহোতা হাকিম দীর্ঘ ৫ বছর ধরে দেশব্যাপী টিকিট কালোবাজারির শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে কালোবাজারির ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। চক্রের সদস্য খোকন মিয়ার নামে টিকিট কালোবাজারির দায়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মোট ৫টি মামলা রয়েছে। তিনি গত ২০ অক্টোবর র‌্যাব-৩ এর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ৩২ দিন জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান। জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও টিকিট কালোবাজারির কাজে লিপ্ত হন। গ্রেপ্তার শামীমের বিরুদ্ধে মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। শামীম বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটেছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category