• রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৭:২৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
অননুমোদিত স্টিকারে ৩৬৩ মামলা, দুই হাজার গাড়ি ডাম্পিং: ট্রাফিক পুলিশ এবার মানবপাচার মামলায় রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা দায়মুক্ত হয়েছি: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী মুসলিমদের একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকটের সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরকার পরিচালনাকারী সবাই ফেরেশতা নয়: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ফ্ল্যাটের ভুয়া দলিল দেখিয়ে ৫০ কোটি টাকা ঋণ, গ্রেপ্তার ৮ বিচারকাজ পরিচালনায় আপিল বিভাগে দুই বেঞ্চ গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, চালকসহ আহত ৪ উপজেলা ভোটে দুর্গম এলাকা ছাড়া সব কেন্দ্রে ব্যালট যাবে সকালে থাইল্যান্ড সফর দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পক উন্নয়নে এক মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী

জ¦ালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক: সিপিডি

Reporter Name / ৩১৪ Time View
Update : বুধবার, ১০ নভেম্বর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সরকার সম্প্রতি জ¦ালানি তেল ডিজেল ও কেরোসিনের যে দাম বাড়িয়েছে তাকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জ¦ালানি তেল আগের দামে ফিরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করেছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, কেরোসিন ও ডিজেলের দাম বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যুক্তিসংগত নয়। সরকারের নীতিমালার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয় এবং রাজনৈতিকভাবে এটা কোনো আলোকিত সিদ্ধান্ত না।  বুধবার ‘জ¦ালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি কতটুকু প্রয়োজন ছিল?’ শীর্ষক একটি ব্রিফিংয়ে সিপিডির পক্ষ থেকে এ সুপারিশ এবং অভিমত তুলে ধরা হয়। মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সম্মানীয় ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান এবং গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যুক্তিসংগত নয়। সরকারের নীতিমালার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয় এবং রাজনৈতিকভাবে এটা কোনো আলোকিত সিদ্ধান্ত নয় বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিপিডির মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন ফাহমিদা খাতুন। মূল প্রবন্ধ তুলে ধরার সময় তিনি বলেন, জ¦ালানি তেলের দাম বাড়ানোর ফলে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি ও মানুষের জীবনযাত্রার ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। এই মূল্যবৃদ্ধির ফলে হয়তো বিত্তবানদের ওপর খুব একটা প্রভাব পড়বে না। কিন্তু যারা দরিদ্র এবং যারা নতুন করে দরিদ্র হয়েছে, যারা কোভিড আক্রান্ত অর্থনীতিতে নতুন করে রিকোভারির চেষ্টার মধ্যে রয়েছে, তাদের ওপর যে প্রভাব পড়বে, আমরা যদি ন্যায্যতার কথা বলি সেই ন্যায্যতার দিক থেকেও এটা (জ¦ালানি তেলের দাম বৃদ্ধি) একটা অন্যায্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, বলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক। তিনি বলেন, এই দাম বাড়ানো হচ্ছে বিপিসির লোকসানের কথা বলে। বিপিসির লোকসানের কারণ কি? আমরা জানি এখানে সুশাসনের অভাব রয়েছে। বিপিসির তেল সংগ্রহ, বিক্রি, মার্কেটিংয়ে সিস্টেমের ব্যবস্থাপনা ও সুশাসনের অনেক অভিযোগ রয়েছে। তারা বিভিন্ন মার্কেটিং কোম্পানিকে দিয়ে তেল মার্কেটিং করে। সেখানেও আমরা দেখি দুর্নীতির খবর এসেছে। যে হারে দাম বাড়ানো হয় বাজারে তার থেকে বেশি হারে প্রভাব পড়ে এমন অভিযোগ করে ফাহমিদা বলেন, যখন কোনো একটা জিনিসের মূল্য ৫, ১০ বা ২০ শতাংশ বাড়ানো হলো, তখন আমরা বাজারে গিয়ে দেখবো, মূল্য অনেক বেশি। এই যে এখন তেলের দাম ২৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, সেখানে বাসের ভাড়া প্রকৃতপক্ষে ৫০ শতাংশ বেশি নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মূল্য নির্ধারণ করার মেকানিজমে আমরা বৈজ্ঞানিক কোনো মেথড দেখি না। আমরা যদি আন্তর্জাতিক বাজারের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকি, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে যখন মূল্য কম থাকে তখন সেটার সুফল কেন জনগণ পায় না? যখন আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি হয়, লোকসানের দোহাই দিয়ে দাম বাড়ানো হয়। এই যুক্তিকে কোনো বৈজ্ঞানিক বা সঠিক যুক্তি বলে মনে হয় না। সুতরাং এই প্রাইস মেকানিজমটিকে ঠিক করার প্রয়োজন রয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি বিভিন্ন নেতিবাচক দিক তুলে ধরে জ¦ালানি তেল আবার আগের দামে ফিরিয়ে নেয়ার সুপারিশ করে ফাহমিদা বলেন, এটি (জ¦ালানি তেল) একটি কৌশলগত পণ্য। এই পণ্য ছাড়া অর্থনীতি অচল হয়ে পড়বে। এই প্রেক্ষিতে আমরা বলছি পূর্ববর্তী দামে ফিরে যাওয়া দরকার। ডিজেল এবং কেরোসিনের যে মূল্য বাড়ানো হয়েছে, আমরা এই মূল্য প্রত্যাহার করে আগের মূল্যে ফেরত যাওয়ার সুপারিশ করছি। তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এটা কিভাবে সম্ভব তাও উল্লেখ করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক। তিনি বলেন, তেলের ওপর বিভিন্ন ধরনের শুল্ক কর রয়েছে। সেখান থেকে কোনো একটি শুল্ক প্রত্যাহার করে ভর্তুকি হিসেবে দেওয়া যেতে পারে। যখন অর্থনীতিতে কোনো ধরনের সংকট দেখা দেয় বা জরুরি অবস্থা দেখা দেয়, মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষের ওপর একটা বোঝা হয়ে দেখা দিচ্ছে, তখন সরকারের হাতে বিভিন্ন ধরনের ফিসক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট থাকে। সেই ফিসক্যাল ইন্সট্রুমেন্টগুলা তখনই ব্যবহার করার সময়। ভর্তুকি বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে দেওয়া হয়ে থাকে। এখানে কেন এই মুহূর্তে দেওয়া হবে না? না দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের উত্তরে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরকারের সরে আসা উচিত। এক প্রশ্নের উত্তরে ফাহমিদা বলেন, প্রতিদিন ২০ কোটি টাকা ধরলে বছরে ৭ হাজার দুইশ কোটি টাকা। এই ৭ হাজার দুইশ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া খুব কঠিন বিষয়? মনে তো হয় না। একই বিষয়ে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ২০২২ অর্থবছরে প্রক্ষেপণ হচ্ছে বিপিসি থেকে আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ সরকার ৭ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা আয় করার কথা লিখেছে। সুতরাং ৭ হাজার দুইশ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার জন্য এই আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করলে আর বাড়তি টাকার প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট সমন্বয় করেই সরকার লোকসানের টাকা সমন্বয় করতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category