• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ
উপজেলা ভোটে দুর্গম এলাকা ছাড়া সব কেন্দ্রে ব্যালট যাবে সকালে থাইল্যান্ড সফর দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পক উন্নয়নে এক মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী মেহনতি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নই আ. লীগের মূল লক্ষ্য: কাদের সংসদ অধবিশেন চলবে ৯ মে র্পযন্ত মাদ্রাসার সভাপতি হতে স্বাক্ষর জালিয়াতি, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বান্দরবানে কেএনএফের আরো ১ নারী আটক: রিমান্ড ফেরত ১৪ জন আসামি কারাগারে অফিস সময়ে চিকিৎসকরা হাসপাতালের বাইরে গেলে ব্যবস্থা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ৪৬ কিলোমিটার বাড়ছে ঢাকা আউটার রিং রোডের দৈর্ঘ্য, ব্যয় বাড়ছে তিনগুণ বৃহস্পতিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে: শিক্ষামন্ত্রী জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির

পথশিশুদের নামে লাখ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ

Reporter Name / ১৩৮ Time View
Update : রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
পথশিশুদের তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করার ব্রত নিয়ে রাজধানীর অর্ধশতাধিক স্থানে অনুদান সংগ্রহ করত প্রথম অক্ষর ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা। প্রতিদিন গড়ে সহায়তা মেলে দুই লাখ টাকা। এর পঁচাত্তর ভাগ নিজেদের পকেটে নিয়ে নেন প্রথম অক্ষর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব। ছয় বছর ধরে পথশিশুদের নামে টাকা তুলে আঙুল ফলে কলাগাছ হওয়া দুই শীর্ষ পদধারীর বিরুদ্ধে রয়েছে যৌন নির্যাতন, মাদক বিক্রিসহ নানা অভিযোগ। পথশিশু ও দুঃস্থদের মাঝে বিনামূল্যে খাবার বিতরণ কর্মসূচির জন্য তহবিল যোগাড়ে রাজধানীর পঞ্চাশ থেকে সত্তরটি স্থানে তৎপর ছিল প্রথম অক্ষর ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা। প্রতিদিন উত্তোলিত হয় দুই লাখের বেশি টাকা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যেসব তরুণ-তরুণীকে পোস্টারে মোড়ানো বক্স হাতে টাকা তুলতে দেখা যায়, তাদের একটি অংশ এই প্রথম অক্ষর ফাউন্ডেশনের কর্মী। ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে এই কর্মকা-। মানবিক কারণে অনেকে সাধ্যমতো সহযোগিতাও করেন তাদের। কিন্তু মানবিক কাজের নামে ফাউন্ডেশনের আড়ালে নির্বিঘেœ মাদক বিক্রি ও অসামাজিক কাজের অভিযোগ প্রথম অক্ষরের কর্তা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, মানুষের সরলতার সুযোগে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলে প্রতারণা করত সংগঠনটির উদ্যোক্তারা। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা-ফেনসিডিলসহ প্রথম অক্ষর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইমন চৌধুরী ও মহাসচিব নুসরাত জাহান লিন্ডাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সবুজবাগের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে উত্তরা গোয়েন্দা বিভাগের বিমানবন্দর জোনাল টিম। সবুজবাগের অতীশ দীপঙ্কার রোডের ১-ই/ডি হোল্ডিংয়ের রহিম টাওয়ারের তৃতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে ইমন-লিন্ডার বাসায় তিন হাজার ৪০০টি ইয়াবা, ১০ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়। পুলিশের হাতে ধরাপড়া ইমন চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায়। আর লিন্ডার বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি এলাকায়। ইয়াবা ও ফেনসিডিল উদ্ধারের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে সবুজবাগ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ। গতকাল রোববার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কায়সার রিজভী কোরায়েশী এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ইমন ও লিন্ডার বিরুদ্ধে মাদক মামলা হয়েছে। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনেও আরেকটি মামলা হবে। এ ছাড়া প্রতারণার শিকার কোনো ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে তারা টাকা তোলেন। কখনো তারা শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করার কথা বলে, কখনো আবার ক্ষুধার্তদের মাঝে খাবার বিতরণের কথা বলে সাহায্য চায় মানুষের কাছে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কেউ চিকিৎসা সহায়তা পায়নি বলে জানা গেছে। আবার দানের শীতবস্ত্র নিজেদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করতেন এই ফাউন্ডেশনের লোকজন। গত সাত বছর ধরে তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করে আসছে। ওই ফাউন্ডেশনের শারমিন আক্তার (ছদ্মনাম) নামের এক কর্মী জানান, তিনি রাজধানীর বসুন্ধরা কমপ্লেক্সে একটি বোরকার দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৬ সালে তার এক বান্ধবীর মাধ্যমে তিনি প্রথম অক্ষর ফাউন্ডেশনে কাজ শুরু করেন। ওই বান্ধবীর সঙ্গে ইমন চৌধুরীর অবৈধ সম্পর্ক ছিল, যা তিনি পরে জানতে পেরেছেন। ওই নারীর অভিযোগ, কাজ করার একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইমন চৌধুরী তার সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রলোভন দেখায় ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনে দেবে। কিন্তু সেসব কিছু না দিয়ে উল্টো সাত মাস আগে ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়া নতুন এক মেয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক শুরু করে ইমন। পরে তাকে অফিসে না রেখে ১৫ হাজার টাকা বেতনে বাইরে কাজে পাঠানো হয়। কিন্তু গত তিন মাস ধরে কোনো বেতন দেওয়া হয়নি। ওই নারী বলেন, প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০টি বক্স দিয়ে তরুণ-তরুণীদের রাস্তায় পাঠান ইমন চৌধুরী। প্রতিদিন তিন হাজার টাকা টার্গেট দেওয়া হয়। এর অর্ধেক ফাউন্ডেশন আর অর্ধেক পাবেন কর্মী- এই হলো ভাগাভাগির বন্দোবস্ত। কিন্তু কর্মীদের প্রতিদিন ৫০০ টাকার বেশি দেওয়া হয় না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে হাতে মাদক দিয়ে ছবি তুলে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়া হতো বলেও অভিযোগ করেন এই নারী। সংগঠনটির সাবেক এই কর্মীর ভাষ্যমতে, ইমন চৌধুরীর পিটিভি নামের একটি ইউটিউবভিত্তিক চ্যানেল আছে। ওই প্রতিষ্ঠানের নামে সাংবাদিকদের কার্ড তৈরি করে দিতেন তারা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category