• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১২:৫৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
উপজেলা ভোটে দুর্গম এলাকা ছাড়া সব কেন্দ্রে ব্যালট যাবে সকালে থাইল্যান্ড সফর দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পক উন্নয়নে এক মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী মেহনতি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নই আ. লীগের মূল লক্ষ্য: কাদের সংসদ অধবিশেন চলবে ৯ মে র্পযন্ত মাদ্রাসার সভাপতি হতে স্বাক্ষর জালিয়াতি, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বান্দরবানে কেএনএফের আরো ১ নারী আটক: রিমান্ড ফেরত ১৪ জন আসামি কারাগারে অফিস সময়ে চিকিৎসকরা হাসপাতালের বাইরে গেলে ব্যবস্থা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ৪৬ কিলোমিটার বাড়ছে ঢাকা আউটার রিং রোডের দৈর্ঘ্য, ব্যয় বাড়ছে তিনগুণ বৃহস্পতিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে: শিক্ষামন্ত্রী জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির

বেইলি রোডে অগ্নিকা-ের ঘটনায় মামলা

Reporter Name / ৩১ Time View
Update : শনিবার, ২ মার্চ, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর বেইলি রোডের ‘গ্রিন কোজি কটেজে’ অগ্নিকা-ের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে পুলিশ বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে। আজ শনিবার ডিএমপির রমনা জোনের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ সালমান ফার্সী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বেইলি রোডের আগুন লাগার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ বাদি হয়ে মামলাটি করেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কয়েকজন আটক আছে। তাদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। এদিকে আগুনের এই ঘটনায় ‘চুমুক’ নামের একটি খাবার দোকানের দুই মালিক আনোয়ারুল হক ও শফিকুর রহমান রিমন ও ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক মো. জিসানকে গত শুক্রবার আটক করে পুলিশ। সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার খ. মহিদ উদ্দিন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। অগ্নিকা-ের ঘটনায় ভবন মালিকের দায়িত্বে কোনও অবহেলা রয়েছে কিনা, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ভবনের মালিক থেকে শুরু করে এই ঘটনায় যার দায় পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও ৩ লাশ হস্তান্তর: নিহতদের মধ্যে আরও তিন জনের লাশসহ মোট ৪৩ লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে স্বজনদের কাছে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে মর্গে আরও ৩ জনের লাশ রয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর স্বজনদের কাছে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হবে। রাজধানীর রমনা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, রাজস্ব কর্মকর্তা শাহ জালাল উদ্দিন (৩৪), তার স্ত্রী মেহেরুন নেসা জাহান হেলালি (২৪) ও শিশু সন্তান ফাইরুজ কাশেম জামিরার (৩) লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে আরও তিনটি লাশ মর্গে রয়েছে। যাদের একজন নারী ও দুজন পুরুষের লাশ। তাদের ময়নাতদন্ত করানো হবে এবং ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে শনাক্তের পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা হলেন, অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুন, এ কে এম মিনহাজ উদ্দিন ও নাজমুল ইসলাম। বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর হিন্দু-মুসলিম পরিচয় নিশ্চিত হয়ে লাশ হস্তান্তরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর বাকি দুজনের লাশ বেশি পুড়ে যাওয়ায় কোনটি কার লাশ সেটা শনাক্ত করা হবে। এরপর এ তিনটি লাশ হস্তান্তর করা হবে। তাদের পরিবারের কাছ থেকে ডিএনএ-র নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এদিকে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তার আসল নাম বৃষ্টি খাতুন। ডিএনএ পরীক্ষার পর অভিভাবকত্বের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম প?শ্চিমপাড়া। বৃষ্টির ফুফু রোজিনা আক্তার জানান, তিনি সাভারে থাকেন। বৃষ্টি তার সঙ্গেই সাভারে থাকতেন। যাতায়াতের দূরত্ব কমানোর চিন্তা করেই বৃষ্টি হোস্টেলে ওঠেন। এখন নাম জটিলতায় তার লাশটিও পেতে পরিবারের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। ডিএনএ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে প্রশাসন থেকে জানিয়েছে। তিনি বলেন, ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃষ্টি তার মা বিউটি বেগমকে ফোন করে জানিয়েছিল অনুষ্ঠান শেষ হলো। সে হোস্টেলে ফিরবে। তারপর রাতে কথা বলবে। কিম্তু আর কথা হয়নি। পরের দিন ১ মার্চ খবর আসলো বৃষ্টি আর নেই। বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মজিদ বলেন, অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর আসল নাম বৃষ্টি। সে ইডেন কলেজে পড়াশোনা করতো। সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম বৃষ্টি। তার বাবা শাবলুল আলম সবুজ ঢাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি মেয়ের লাশ আনতে মর্গে গেছেন। তারপর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে। বৃষ্টি ওরফে অভিশ্রুতির সহকর্মীরা দাবি করেন, তিনি দ্য রিপোর্ট অনলাইন পোর্টালের ইলেকশন কমিশন বিটের রিপোর্টার। এই নামেই সবাই চেনেন তাকে। অন্য একটি অফিসে যে সিভি পাঠিয়েছিলেন সেখানেও তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। বৃষ্টি ওরফে অভিশ্রুতির বাবা শাবলুল আলম সবুজ জানান, তিন বোনের মধ্যে বৃষ্টি বড়। তিনি লাশ বুঝে নিতে ঢাকায় রয়েছেন। রাতে লাশ দেওয়া হয়নি। ডিএনএ পরীক্ষার পর সিদ্ধান্ত নেবে প্রশাসন। বৃষ্টির লাশ নিয়ে তিনি কুষ্টিয়ার বাড়িতে ফিরবেন। সেখানে বৃষ্টির জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হবে। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে থাকা আত্মীয়-স্বজনরা বাড়িতে আসছেন। সবুজ বলেন, আমার মেয়ের প্রকৃত নাম মোছা. বৃষ্টি খাতুন। সে লেখালেখি করে- সেজন্য তাকে সবাই অভিশ্রুতি নামে ডাকে বলে সে জানিয়েছিল। বৃষ্টি ইডেন কলেজের দর্শন বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। গত বছরই ওর পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। দুটি পরীক্ষা বাদ আছে। ওর রোল নম্বর-২৭৬। ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে ওকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। ওর মা চেষ্টা করছিল। আমিও চেষ্টা করেছি। ১ মার্চ জোহরের নামাজ পড়ার পর ওর এক বান্ধবীর ফোনকল পাই। সে বলে, বেইলি রোডের আগুনে অভিশ্রুতি মারা গেছে। এ খবর পেয়ে দ্রুত চলে আসি। রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে অগ্নিকা-ের ঘটনায় ধোয়ায় শ্বাসকষ্টজনিত কারণে বৃষ্টির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লেগে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন অন্তত ২২ জন। আগুন নেভানোর পর হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category