নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর সাতারকুলে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খৎনার জন্য অজ্ঞান করা শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে নতুন কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন। কমিটিতে তিনজন চিকিৎসক, দুইজন সিভিল সোসাইটির ব্যক্তি ও একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে রাখা হয়েছে। কমিটি এক মাসের মধ্যে আয়ানের মৃত্যুর পুরো ঘটনা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে। শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের অবহেলা আছে কি না, তার মৃত্যুর ঘটনায় কারা দায়ী, এই কমিটি তা খুঁজে বের করবে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম। ইউনাইটেড হাসপাতালের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা। এডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতাল গুলশান ও সাতারকুল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল দুটি প্রতিষ্ঠান। রিট পিটিশনার গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালকেও মামলায় পার্টি করেছেন। আমরা আজ (গতকাল মঙ্গলবার) ইউনাইটেড হাসপাতাল গুলশানের পক্ষে ওকালতনামা দাখিল করে আদালতে শুনানি করেছি। আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) আমরা আট সপ্তাহ সময় প্রার্থনা করে সব পক্ষকে শুনে আদালতের কাছে আদেশ প্রার্থনা করেছিলাম। আদালত বিষয়টি নিয়ে আরো একটি তদন্ত কমিটি করে আদেশ দিয়েছেন। নতুন এই কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ২০ মার্চ আদালতের সামনে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। এর আগে সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে রাজধানীর বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট লোক দেখানো (আইওয়াশ) ও হাস্যকর বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম। পরে শিশু আয়ানের বাবা রিটে পক্ষভুক্ত হন। নতুন করে রিটে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়। গত ৮ জানুয়ারি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যায় শিশু আয়ান। এর আগে তাকে বাড্ডার সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নাতে খৎনা করানোর জন্য নেয়া হয়েছিল। সেখানে অজ্ঞান করার পর তার আর জ্ঞান ফেরেনি। সাত দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর মারা যায় শিশুটি।