• সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৪ অপরাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
দদুর্নীতির বড় অভিযুক্তরা পাশের দেশে আছেন: দুদক চেয়ারম্যান এবারও আসছে তীব্র তাপপ্রবাহ, নেই তেমন প্রস্তুতি লিবিয়ায় দুই গণকবর থেকে ৪৯ অভিবাসী-শরণার্থীর মরদেহ উদ্ধার তিন জিম্মির বিনিময়ে ১৮৩ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিলো ইসরায়েল শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্যে সাবেক এমপি চয়নকে গ্রেফতার করলো পুলিশ হাওরে কৃষি জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার ‘ডেভিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপারেশন চলবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই ২৫ কর্মকর্তার লকারই পায়নি দুদক কৃষিঋণ বিতরণ কমায় বোরো উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা আমরা একটি সুস্থ জাতি দেখতে চাই: সেনাপ্রধান

ইউপি নির্বাচন ঘিরে বেড়েই চলেছে সংঘাতে প্রাণহানি

Reporter Name / ১৭০ Time View
Update : বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ইউপি নির্বাচন ঘিরে বেড়েই চলেছে সংঘাতে প্রাণহানি। গত দু’সপ্তাহে সারাদেশে কয়েকটি জেলায় নির্বাচনী সহিংসতায় ১২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং কয়েক শতাধিক আহত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার একদিনে নির্বাচনী সহিংসতায় খুন হয়েছে ৩ জন। আসন্ন ইউপি নির্বাচন ঘিরে খুনোখুনি আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ সদর দফতর থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্বাচনী সহিংসতা রোধে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ সদর দফতর থেকে পুলিশের সব রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তাতে খুনোখুনি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারসহ সামগ্রিক বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। তাছাড়া বিজিবি, আনসার সদস্যরাও নির্বাচনী নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে। তারাও নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা রোধে কাজ করছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দেশের বিভিন্নস্থান দেশী ও বিদেশী অস্ত্রের মহড়া এবং ভাংচুরের ঘটনায় নির্বাচনী মাঠ গরম হয়ে উঠেছে। ফলে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী এলাকায় খুনোখুনি ও সংঘর্ষের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য নির্বাচন কমিশনের হাতে আইন-শৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রণ থাকে। তারপরও ইতিমধ্যে পুলিশ সদর দফতর থেকে জেলা পুলিশ সুপারদের কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। থানা ও জেলার সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের ডেকে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কোথাও সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকলে দ্রুত তা পুলিশকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের সার্বক্ষণিক টহল জোরদার করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাড়তি নজরদারি করা হচ্ছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করেই জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা কাজ করছে।
সূত্র জানায়, প্রার্থী ও সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন করতে অনুরোধ জানানো হলেও নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন জেলায় প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুনোখুনি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচন শেষে আগামী ১১ ও ২৮ নভেম্বর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে দুই ধাপের মনোনীতদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে। দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৮টি ও তৃতীয় ধাপে ১ হাজার ৭টি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া ২৮ নভেম্বর দেশের ১০টি পৌরসভায়ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকেই খুনোখুনি, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কয়েক জেলায় বড় ধরনের সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও প্রাণহানি ঘটেছে। সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ওই কারণে অতিসম্প্রতি পুলিশ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত সভায় ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচন কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় মাঠ পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী মাঠপর্যায়ের পুলিশ ইউপি ও পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত এলাকাগুলোয় টহল ও নজরদারি জোরদার করেছে। তারপরও প্রতিদিনই কোন না কোন এলাকায় হামলা, সংঘর্ষ ও খুনোখুনির মতো অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, নির্বাচন কমিশন ও মাঠপুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ইসি বিশেষ কিছু পরিকল্পনাও নিয়েছে। নির্বাচন কমিশনার, কমিশনের উর্ধতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সফর করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিচ্ছে। একই সাথে তফসিল ঘোষিত এলাকাগুলোয় পুলিশি টহল ও তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। ইসি ও পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে সতর্কবার্তা এবং মাঠপর্যায়ের পুলিশ সতর্ক থাকার পরও নির্বাচনে খুনোখুনি ও সহিংসতা থামছে না। বিগত ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনী সহিংসতায় ১১৭ জন নিহত হয়েছিল। মূলত যে এলাকায় ইউপি নির্বাচন হবে সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশের পাশাপাশি আধিপত্য বিস্তার, হামলা-পাল্টা হামলা, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ সন্ত্রাসকা- ও কেন্দ্র দখলের মতো অপরাধ ঘটতে পারে। ইউপি নির্বাচনে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার, বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারসহ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলা পুলিশ সুপারদের এ বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি।
এদিকে এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন ও প্ল্যানিং) হায়দার আলী খান জানান, স্থানীয় পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাচনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়। মাঠপুলিশকে সেভাবেই নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও টহল এবং স্ট্রাইকিং ফোর্সের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য চেয়ে একটি চাহিদা দেয়া হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সে অনুযায়ী সরবরাহ করে। তার বাইরে পুলিশ একটি নিজস্ব নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে কাজ করছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা ও ঝুঁকির বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদন থাকলে সেগুলো আমলে নিয়ে মাঠপর্যায়ে নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে সহিংসতার বিষয়টি নির্ভর করে মূলত প্রার্থীদের আচরণের ওপর। খুনোখুনি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারসহ সামগ্রিক বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে। পুলিশ ছাড়াও বিজিবি, আনসার সদস্যরাও নির্বাচনী নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে। তারাও নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা রোধে কাজ করছে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, ইউপি নির্বাচন নিয়ে যাতে কেউ ফায়দা লুটতে না পারে সেজন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যারা অপকর্ম করার চেষ্টা করবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দর হয় সেজন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। যে কোন দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আশা করা যায় বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটবে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category