• রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৩:৪৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
নারী-শিশু মামলায় বাদী ব্যক্তিগত আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে আইন হাতে তুলে নিচ্ছে জনগণ: নয় বছরে ৫০৭ জনকে পিটিয়ে হত্যা সর্বজনীন পেনশন স্কিমে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে বস্তিবাসী-রিকশাচালকও ফ্ল্যাটে থাকবে: প্রধানমন্ত্রী ভিডিও বার্তায় কেএনএফের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি ৬ষ্ঠ উপজেলায় নির্বাচন জয় হয়েছে চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ শুল্ক জটিলতায় বন্দরে আটকা ২০ অ্যাম্বুলেন্স, ক্ষুব্ধ আমদানিকারকরা চত্রনায়ক সোহেল হত্যায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন হজযাত্রীদের আবেগ-অনুভূতিকে সম্মান দেখাতে হবে: ধর্মমন্ত্রী এরশাদের ট্রাস্টের গাড়ি আত্মসাৎ, ফেরত পেতে আদালতের দ্বারস্থ বিদিশা

সাকিবের ব্যাটে শেষের লড়াই, তবু হার বাংলাদেশের

Reporter Name / ২১৭ Time View
Update : সোমবার, ৪ জুলাই, ২০২২

স্পোর্টস ডেস্ক
ম্যাচটা আদতে শেষ হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের ইনিংসের ১৪ ওভার পার হতেই। শেষ ৬ ওভারে টাইগারদের দরকার পড়ে ১০০ রান। ছয়ের আশেপাশে রান তুলতে থাকা বাংলাদেশের পক্ষে ওভারপ্রতি সাড়ে ১৬-এর ওপর নেওয়া সম্ভব?
অসম্ভবই ছিল বটে। বাংলাদেশ সেই অসম্ভবকে সম্ভব করতেও পারেনি। তবে শেষের দিকে টাইগাররা লড়েছে সাকিব আল হাসানের ব্যাট।
৪৫ বলে ফিফটি পূরণ করার পরই সাকিব খোলস পাল্টে ফেলেন। চার-ছক্কায় টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখান। তবে ততক্ষণে হার নিশ্চিত হয়ে গেছে সফরকারীদের। বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরেছে ৩৫ রানে।
এতে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছিল। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ৭ জুলাই প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশের তাই সিরিজ বাঁচানোর সুযোগ আছে এখনও।
১৯৪ রানের বড় লক্ষ্য। শুরুটা যেমন করা দরকার ছিল, পারেনি বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে চার নম্বরে নেমে লিটন দাস ১৪ বলে খেলেছিলেন ৯ রানের ধীর ইনিংস। এবার মুনিম শাহরিয়ারের বদলে ওপেনিংয়ে সুযোগ পান তিনি। কিন্তু ব্যর্থতা দূরে ঠেলতে পারেননি।
ওপেনিংয়ে নেমে ৪ বলে ৫ রান করে ফেরেন লিটন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ওবেদ ম্যাকয়কে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ ব্যাকস্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। পরের বলেই বোল্ড এনামুল হক বিজয়ও (৪ বলে ৩)।
শরীরের বাইরের বল ড্রাইভ খেলতে গিয়ে উইকেটে টেনে আনেন বিজয়। ৮ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে ছিল আশার ঝলক।
ওডিয়েন স্মিথকে টানা দুই বলে একটি করে চার আর ছক্কা মেরেছিলেন টাইগার দলপতি। কিন্তু ওই ওভারেই থামতে হয় তাকে। ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে মিডঅফে ক্যাচ দিয়ে বসেন মাহমুদউল্লাহ (৭ বলে ১১)।
সাকিব আল হাসান আর আফিফ হোসেন এরপর হাল ধরেন দলের। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেটে ৪৪ রান তোলে বাংলাদেশ।
আফিফ খেলছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। অবশেষে ১১তম ওভারে তাকে তুলে নেন রোমারিও শেফার্ড। ২৭ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় ৩৪ রান করে আফিফ স্কুপ করতে গিয়ে ধরা পড়েন উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। ভাঙে ৪৪ বলে ৫৫ রানের জুটি।
এরপরই বলতে গেলে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। রানের চাহিদা মেটাতে পারেননি সাকিব কিংবা নুরুল হাসান সোহান। তাদের ধীরগতির জুটিতে ২৫ বলে আসে ১৯ রান। সোহান ১৩ বলে ৭ করে আকিল হোসেনের শিকার হয়ে ফেরেন।
সাকিব অনেকটা সময় টিকে থাকলেও বাংলাদেশ ম্যাচে ছিল না একেবারেই। শেষদিকে সাকিব ঝড় তোলেন ব্যাটে। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে দুই হাজার রানের মাইলফলকও ছুঁয়ে ফেলেন। ৫২ বলে ৫ চার আর ৩ ছক্কায় শেষ পর্যন্ত ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
এর আগে রভম্যান পাওয়েলের ২৮ বলে ৬ ছক্কায় ৬১ রানের হার না মানা ইনিংসে ভর করে ৫ উইকেটে ১৯৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ডমিনিকার উইন্ডসর পার্কে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টসভাগ্যটা সহায় ছিল না বাংলাদেশের। প্রথমে ফিল্ডিংয়ে নামে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করে উড়ন্ত সূচনা।
দলে ফেরা তাসকিন আহমেদের প্রথম ওভারে ১৪ রান তুলে নেয় ক্যারিবীয়রা। কাইল মায়ার্স হাঁকান একটি চার আর ছক্কা। দ্বিতীয় ওভারেও চড়াও হয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। শেখ মেহেদি হাসানের প্রথম বলেই মারেন চার। তবে এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান মেহেদি। পরের তিন বলে এক রানও দেননি। পঞ্চম বলে তো অফস্পিন ভেল্কিতে বোল্ডই করে দেন ভয়ংকর মায়ার্সকে। হাঁটু গেড়ে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে মিডল স্টাম্প হারান ৯ বলে ১৭ করা মায়ার্স।
এক ওভার পর আরও এক আঘাত ক্যারিবীয় ইনিংসে। এবার সাকিব আল হাসানকে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে আকাশে বল তুলে দেন শামারাহ ব্রুকস (০)। শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচটি তালুবন্দী করতে একদমই কষ্ট হয়নি মাহমুদউল্লাহর। ২৬ রানে ২ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
তারপরও পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে ২ উইকেটে ৪৫ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আস্তে আস্তে হাত খোলেন নিকোলাস পুরান আর ব্রেন্ডন কিং। তৃতীয় উইকেটে এই যুগল ক্যারিবীয়দের বড় পুঁজির ভিত গড়ে দেন। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ২৬ রানে ২ উইকেট হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকে ব্রেন্ডন কিং আর নিকোলাস পুরানের ঝড়ো জুটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিকরা।
কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। কিং-পুরানের জুটি ভাঙতে রীতিমত গলদঘর্ম হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। অবশেষে বল হাতে নিয়েই ১৩তম ওভারে ৫৫ বলে ৭৪ রানের এই জুটিটি ভাঙেন মোসাদ্দেক হোসেন।
মোসাদ্দেকের ঘূর্ণিতে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে প্যাডে লেগে যায় পুরানের। আম্পায়ার আঙুল তুলে দেন আবেদনে। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক। কাজ হয়নি। ৩০ বলে ৩৪ রান করে তাকে ফিরতে হয় সাজঘরে। ৩৬ বলে ফিফটি তুলে নেন কিং। এরপর ঝড় তোলেন রভম্যান পাওয়েল। ১৬তম ওভারে সাকিবকে তিনটি ছক্কা, এক চারে ৫ বলেই ২৩ রান তুলে নেন হার্ডহিটিং এই ব্যাটার।
পরের ওভারে তাসকিনকেও দুই ছক্কা আর এক বাউন্ডারি হাঁকান ভয়ংকর পাওয়েল। ওভারে আসে ২১ রান। টানা দুই ওভারে ৪৪ রান নিয়ে বড় স্কোরের পথে এগিয়ে যায় ক্যারিবীয়রা।
শরিফুল ইসলাম ১৮তম ওভারের প্রথম বলে হাফসেঞ্চুরিয়ান ব্রেন্ডন কিংকে (৪৩ বলে ৫৭) বাউন্ডারিতে সাকিবের ক্যাচ বানান। পরের বলেই ২০ বলে ফিফটি পূরণ করেন পাওয়েল। ওই ওভারে মাত্র ৩ রান দেন শরিফুল। তবে পাওয়েলের তাণ্ডব চলেছে ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত। ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজ দেন ১০। শেষ ওভারে শরিফুলকেও দুটি ছক্কা হাঁকান পাওয়েল।
শরিফুল ২ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে খরচ করেন ৪০ রান। খরুচে ছিলেন বাকিরাও। সাকিব ৪ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩৭ আর তাসকিন ৩ ওভারেই ৪৬ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। এছাড়া শেখ মেহেদি হাসান ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। মোসাদ্দেক হোসেন ১ ওভার করে একটি মেইডেনসহ ১ উইকেট নিলেও তাকে আর বোলিংয়ে আনেননি মাহমুদউল্লাহ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category