• বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ
মির্জা ফখরুলকে আর ঢাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না: মেয়র তাপস নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি চায় বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী খেলাপি ঋণ আদায়ের মামলা নিষ্পত্তির ধীরগতিতে আটকে পড়েছে বিপুল টাকা আপাতত ইসির অধীনেই থাকছে এনআইডি রোহিঙ্গা ইস্যুতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির ডেঙ্গু চিকিৎসায় অনিয়ম: ৩ হাসপাতালকে জরিমানা, ২ ডায়াগনস্টিক বন্ধ বান্দরবানে প্রায় আড়াই কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস বান্দরবানে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস উপলক্ষে এলজিইডি কার্যালয়ে এ মেলা বান্দরবানে রুমায় কেএনএফ সদস্য গুলিবিদ্ধ বান্দরবানে “জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ এবং কোভিড ১৯ প্রতিবেদন ” প্রকল্পের প্রচার সভা

গ্রাহক আমানত ফেরত না পাওয়ায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে

Reporter Name / ২৮৭ Time View
Update : সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান সময় মতো আমানতের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বাইরে পদ্মা, আইসিবি ইসলামী, বাংলাদেশ কমার্স, বেসিকসহ কয়েকটি ব্যাংকও সময় মতো আমানত ফেরত দিতে পারছে না। বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক কিংবা আরেক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা আটকে যাওয়ায় আর্থিক খাতে এক ধরনের আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে। এমন অবস্থায় ৮ থেকে ১২ শতাংশ সুদ অফার করার পরও সাধারণ আমানতকারীদের মতো করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখতে চাইছে না। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত ২০১৯ সালে পিপলস লিজিং অবসায়নের উদ্যোগের পর থেকেই বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সাধারণ আমানতকারীর মতো ব্যাংক এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর একযোগে টাকা তোলার চাপ তৈরি হয়। তখন অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে তা জানাজানি হয়ে যায়। অধিকাংশ ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নতুন করে তহবিল জোগান বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট তহবিলের ৬০ শতাংশের মতো ব্যাংক থেকে আসে। পিপলস লিজিংয়ের অবসায়ন প্রক্রিয়ার ২ বছর পার হলেও এখনো কোনো আমানতকারী টাকা ফেরত পায়নি। ওই প্রতিষ্ঠানটিতে ২ হাজার ৩৬ কোটি টাকা আমানতের মধ্যে সাড়ে ৭শ কোটি টাকা ব্যক্তিপর্যায়ের আমানত রয়েছে।
সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় জ¦ালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ২০১৮ সালে আইসিবিতে ৩ মাস মেয়াদি ৫শ কোটি টাকার আমানত রাখে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও মূল টাকা ফেরত না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটি বারবার তা নবায়ন করে আসছে। তবে বিভিন্ন চেষ্টার একপর্যায়ে ২০০ কোটি টাকা ফেরত পেলেও বাকি ৩০০ কোটি টাকা এখনো পায়নি। দ্রুত টাকা ফেরত চেয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে আবারো চিঠি দেয়া হয়েছে। তাছাড়া আইসিবিতে অগ্রণী ব্যাংকের এক হাজার ৫০ কোটি টাকা আছে। আসল টাকা ফেরত না পেয়ে বাধ্য হয়ে ব্যাংকটি বছরের পর বছর পুনর্বিনিয়োগ করছে। শুধু যে আইসিবির কাছে অন্য প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের টাকা আটকে আছে, তা নয়। আইসিবিও অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে আর ফেরত পাচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানটি ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে ১৪৫ কোটি, ফার্স্ট ফাইন্যান্সে ১১৮ কোটি ও প্রিমিয়ার লিজিংয়ে ৩৩ কোটি টাকা জমা রেখে তুলতে পারছে না। তার বাইরেও আরো কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে আটকে গেছে। অর্থ আদায়ে ওসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আইসিবি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকার্স সভায় মামলা না করে সমঝোতার ভিত্তিতে অর্থ আদায়ের জন্য বলা হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, ব্যাংকগুলো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তহবিল জোগান বন্ধ করে দিয়েছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান একবারে টাকা তুলে নেয়ায় বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। তাদের ঋণের বেশির ভাগই দীর্ঘমেয়াদি। যে কারণে অনেক ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের তহবিল সময় মতো ফেরত দিতে পারছে না। অথচ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান। ফলে ওসব প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখা অন্যায় নয়। কিন্তু বিদ্যমান অবস্থায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখার ক্ষেত্রে এখন সব ব্যাংকই অনেক সতর্কতা দেখাচ্ছে এবং জমানো টাকা ফেরত নেয়ার চেষ্টা করছে। একবারে এই চাপ তৈরি না হলে হয়তো এমন অবস্থা হতো না।
এদিকে অর্থনীতিবিদদের মতে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের ক্ষেত্রে কাদের ওসব প্রতিষ্ঠান দেয়া হচ্ছে, তারা চালাতে পারবে কিনা তা ভালোভাবে দেখা হয়নি। আবার অনুমোদনের পর ওসব প্রতিষ্ঠান ঠিকভাবে তদারকি করা হয়নি। যে কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান থেকেই আমানতকারী আর টাকা তুলতে পারছে না। যা খুব দুঃখজনক। দ্রুত এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো জরুরি। সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়াও দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সিআইডি থেকে কাজ করে দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, টাকা ফেরত পাওয়া আমানতকারীর অধিকার। কোনো প্রতিষ্ঠান সময় মতো অর্থ ফেরত দিতে না পারলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অভিযোগ এলে তা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category