লক্ষ্মীপুরে সহকর্মীকে হত্যার দায়ে ২ জনের যাবজ্জীবন

- আপডেট সময়ঃ ১০:১১:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪
- / ১২৩ বার পড়া হয়েছে
ওমর ইউসুফ রুবেল :
লক্ষ্মীপুরে রিয়াজ হোসেন নামে এক যুবককে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে তার সহকর্মী মো. কাউসার হোসেন (৩২) ও রাকিব হোসেনের (২৭) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-ের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদ- দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায়ের সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ভিকটিম রিয়াজ ও দ-প্রাপ্ত কাউসার সহকর্মী ছিলেন। পেশায় কাঠমিস্ত্রি ছিলেন তারা। জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দ-প্রাপ্ত কাউসার সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে এবং রাকিব তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের বিনোদধর্মপুর গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। ভিকটিম রিয়াজ হোসেন দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতোলা গ্রামের মৃত খোকনের ছেলে। আদালত সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে কাঠমিস্ত্রি রিয়াজ হোসেন নিখোঁজ হন। বিভিন্ন স্থানে তার খোঁজ করেন পরিবারের লোকজন। ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রিয়াজের মোবাইলফোন থেকে তার পরিবারের লোকজনের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অজ্ঞাতরা। ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার চুক্তি করে দুই হাজার টাকা বিকাশ করে রিয়াজের ভগ্নিপতি। পরে ১৭ ফেব্রুয়ারি চন্দ্রগঞ্জ থানায় অপহরণ মামলা করে রিয়াজের মা খুরশিদা বেগম (৫২)। বিষয়টি র?্যাবকে জানালে র?্যাব মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ এলাকা থেকে কাউসারকে গ্রেপ্তার করে। তার স্বীকারোক্তিতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী বাজারের দিঘলী সড়কের একটি ভাড়াবাসা থেকে কাউসারের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ এবং র?্যাব। এরপর র?্যাব চট্টগ্রাম থেকে কাউসারের দূর সম্পর্কের ভগ্নিপতি রাকিবকে গ্রেপ্তার করে। রাকিব মুক্তিপণের সহযোগী ছিলেন। কাউসার আদালতে রিয়াজকে খুনের দায় স্বীকার করে জানান, তারা দুজন একই সঙ্গে ফার্নিচারের নকশার কাজ করতেন। বিভিন্ন জায়গায় রিয়াজ কাজ কন্ট্রাক্ট নিলেও কাউসারকে কম টাকা দিতেন। এ ছাড়া কাউসারের স্ত্রীর সঙ্গে রিয়াজ বিভিন্ন সময়ে মোবাইলফোনে কথা বলতেন। এতে রিয়াজের প্রতি সন্দেহ হয় কাউসারের। কাউসার তার বন্ধু রিয়াজের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। তারা দুজন একসঙ্গে মান্দারী বাজারের দিঘলী সড়কের মুখে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে সেখানে থাকতেন। ২০২৩ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই বাসায় রিয়াজকে জুসের সঙ্গ চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে দিয়ে অজ্ঞান করে হাত-পা বাঁধে কাউসার। রিয়াজের চেতনা ফিরে এলে তিনি হাত-পা বাঁধার কারণ জানতে চাইলে কাউসার তার মুখে গামছা গুঁজে দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ওই কক্ষে মৃতদেহ রেখে পরদিন কাউসার তার আত্মীয় রাকিবকে সঙ্গে করে চট্টগ্রামে চলে যান। সেখান থেকে রিয়াজের নম্বর থেকে মুক্তিপণ দাবি করেন কাউসার। এরপর র?্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন কাউসার ও রাকিব। পরে সাক্ষ্য, প্রমাণের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার এ দুই আসামির বিরুদ্ধে রায় দেন আদালত।