ঢাকা, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫ | ই-পেপার

জবি ছাত্রদল নেতা হত্যায় অভিযুক্ত মাহিরকে থানায় দিলেন মা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০৪:৪৫:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • / ২১ বার পড়া হয়েছে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের একজন মো. মাহির রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত জোবায়েদের পরিবারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মাহিরকে শনাক্ত করা হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার (২০ অক্টোবর) ভোরে মাহিরের মা নিজেই ছেলেকে নিয়ে বংশাল থানায় হাজির হন এবং তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। তবে এখনো এ ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি।

রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আরমানিটোলায় টিউশনিতে গিয়ে খুন হন পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও জবি ছাত্রদল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন। আরমানিটোলার একটি বাড়ির সিঁড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত বলেন, ‘আমরা পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করতে চেয়েছি—শিক্ষার্থী বর্ষা, তার বাবা-মা, বর্ষার প্রেমিক মাহির রহমান এবং মাহিরের বন্ধু নাফিসকে। কিন্তু বংশাল থানার ওসি মামলা নিতে রাজি হননি।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘ওসি বলেছেন, এতজনের নাম দেওয়া ঠিক হবে না। বর্ষার বাবা-মায়ের নাম দিলে মামলাটা নাকি হালকা হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা তাদের নাম দিতে চাই। আমরা ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।’

মামলা নিতে বিলম্বের কারণ হিসেবে শুরুতে বলা হয়, রাত ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ওসি থানায় ছিলেন না। পরে তিনি আসার পর অভিযুক্তের সংখ্যা কমানোর পরামর্শ দেন, যা দেরি আরও বাড়ায়।

এ বিষয়ে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তারা যাদের নাম দিতে চান, আমরা সেই নামেই মামলা নেব। শুধু পরামর্শ দিয়েছি যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।’

পুলিশ জানায়, রোববার বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির ‘রওশন ভিলা’ নামের বাড়ির সিঁড়ি থেকে রক্তমাখা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় সিসিটিভি ফুটেজে দুজন তরুণকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে, তবে তাদের মুখ স্পষ্ট নয়।

গত এক বছর ধরে ওই বাড়িতেই বর্ষাকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন জোবায়েদ। ঘটনার পর বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়। রোববার রাত ১১টার দিকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে বাসা থেকে থানায় আনা হয়।

হত্যার প্রতিবাদে জবি শিক্ষার্থীরা বংশাল থানার সামনে অবস্থান নিয়ে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। তারা তাতিবাজার মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এবং কিছু সময়ের জন্য আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায়।

নিহতের স্মরণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুই দিনের শোক ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে ২২ অক্টোবর নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের সব আয়োজন স্থগিত করা হয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

জবি ছাত্রদল নেতা হত্যায় অভিযুক্ত মাহিরকে থানায় দিলেন মা

আপডেট সময়ঃ ০৪:৪৫:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের একজন মো. মাহির রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত জোবায়েদের পরিবারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মাহিরকে শনাক্ত করা হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার (২০ অক্টোবর) ভোরে মাহিরের মা নিজেই ছেলেকে নিয়ে বংশাল থানায় হাজির হন এবং তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। তবে এখনো এ ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি।

রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আরমানিটোলায় টিউশনিতে গিয়ে খুন হন পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও জবি ছাত্রদল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন। আরমানিটোলার একটি বাড়ির সিঁড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত বলেন, ‘আমরা পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করতে চেয়েছি—শিক্ষার্থী বর্ষা, তার বাবা-মা, বর্ষার প্রেমিক মাহির রহমান এবং মাহিরের বন্ধু নাফিসকে। কিন্তু বংশাল থানার ওসি মামলা নিতে রাজি হননি।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘ওসি বলেছেন, এতজনের নাম দেওয়া ঠিক হবে না। বর্ষার বাবা-মায়ের নাম দিলে মামলাটা নাকি হালকা হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা তাদের নাম দিতে চাই। আমরা ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।’

মামলা নিতে বিলম্বের কারণ হিসেবে শুরুতে বলা হয়, রাত ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ওসি থানায় ছিলেন না। পরে তিনি আসার পর অভিযুক্তের সংখ্যা কমানোর পরামর্শ দেন, যা দেরি আরও বাড়ায়।

এ বিষয়ে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তারা যাদের নাম দিতে চান, আমরা সেই নামেই মামলা নেব। শুধু পরামর্শ দিয়েছি যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।’

পুলিশ জানায়, রোববার বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির ‘রওশন ভিলা’ নামের বাড়ির সিঁড়ি থেকে রক্তমাখা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় সিসিটিভি ফুটেজে দুজন তরুণকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে, তবে তাদের মুখ স্পষ্ট নয়।

গত এক বছর ধরে ওই বাড়িতেই বর্ষাকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন জোবায়েদ। ঘটনার পর বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়। রোববার রাত ১১টার দিকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে বাসা থেকে থানায় আনা হয়।

হত্যার প্রতিবাদে জবি শিক্ষার্থীরা বংশাল থানার সামনে অবস্থান নিয়ে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। তারা তাতিবাজার মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এবং কিছু সময়ের জন্য আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায়।

নিহতের স্মরণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুই দিনের শোক ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে ২২ অক্টোবর নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের সব আয়োজন স্থগিত করা হয়েছে।